এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭ বিমান দুর্ঘটনা: আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড়ানের পরেই বিমান দুর্ঘটনা, ২৭০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু। তদন্তে Ram Air Turbine (RAT) সক্রিয় হওয়ার তিনটি বড় প্রযুক্তিগত ইঙ্গিত উঠে এসেছে।

Air India Crash Investigation : ১২ জুন ভারতের বিমান পরিবহনের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড়ানের মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিধ্বস্ত হয়। চোখের পলকে বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। একটি মেডিকেল কলেজের ডাক্তারদের আবাসিক ভবন ও হোস্টেলে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ২৭৫ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। এখন যে অডিও এবং ভিডিও ফুটেজ সামনে এসেছে, তাতে দুর্ঘটনার কারণ আরও গভীরভাবে উন্মোচিত হয়েছে।

মাত্র ৩২ সেকেন্ডে দুটি ইঞ্জিনই কিভাবে বিকল হল?

ভিডিওতে Ram Air Turbine (RAT)-এর তীব্র শব্দ স্পষ্ট শোনা যায়। এটি একটি ছোট প্রপেলারের মতো যন্ত্র যা কেবল তখনই সক্রিয় হয় যখন বিমানের উভয় ইঞ্জিন বিকল হয় অথবা সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক বা হাইড্রোলিক সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল, মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মধ্যেই দুটি ইঞ্জিন কিভাবে বিকল হল?

তিনটি সম্ভাবনা: দুটি ইঞ্জিন বিকল, বৈদ্যুতিক ত্রুটি অথবা হাইড্রোলিক সিস্টেমের ত্রুটি

বিশেষজ্ঞদের মতে, RAT-এর সক্রিয়তা নিজেই বলে যে বিমানটির সঙ্গে গুরুতর প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল। তিনটি সম্ভাবনা এখন সবচেয়ে জোরালো বলে বিবেচিত হচ্ছে।

  1. দুটি ইঞ্জিনই সম্পূর্ণরূপে বিকল হয়ে গেছে,
  2. বিমানের বৈদ্যুতিক সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে,
  3. হাইড্রোলিক সিস্টেম বিকল হয়ে গেছে যার ফলে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

RAT সক্রিয়: শেষ সংকেতের আগের শেষ প্রচেষ্টা

RAT বাতাসের গতি থেকে জরুরি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে যাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম যেমন ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ, রেডিও এবং মৌলিক নেভিগেশন ব্যবস্থা চালু রাখা যায়। কিন্তু এবার তার সাহায্যেও বিমানটিকে বেশিক্ষণ আকাশে রাখা যায়নি।

বিমান উড়ল এবং তারপর...

ঘটনার ভিডিও দেখায় যে বিমান উড়ানের সঙ্গে সঙ্গেই উচ্চতা ধরে রাখতে সংগ্রাম করতে দেখা যায় এবং তারপর হঠাৎ নিচে পড়তে শুরু করে। যাত্রীদের আর্তনাদ, পাইলটদের শেষ সংকেত এবং RAT-এর শব্দ, এই সবকিছু মিলে সেই ভয়াবহ মুহূর্তের ভয়াবহতা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরে।

একমাত্র জীবিত ব্যক্তির কাহিনী

এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কেবল একজন ব্যক্তি বেঁচে গেছেন। ৪০ বছর বয়সী বিশ্বাস কুমার রমেশ, যিনি একজন ব্রিটিশ-ভারতীয় নাগরিক এবং ভারত থেকে ইউকে ফিরছিলেন। তার বক্তব্য এবং চিকিৎসার বিষয়টি এখনও গোপন রাখা হয়েছে কিন্তু তার কাহিনী এখন এই দুর্ঘটনার জীবন্ত সাক্ষ্য।

স্পষ্ট হচ্ছে প্রযুক্তিগত ত্রুটির বিষয়টি

প্রথমে এই দুর্ঘটনার পেছনে পাখির আঘাতকে দায়ী করা হচ্ছিল কিন্তু এখন তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে রানওয়ে বা ইঞ্জিনের আশেপাশে কোন পাখির অবশেষ পাওয়া যায়নি। ভিডিও ফুটেজেও কোন আগুন, ধোঁয়া বা স্পার্ক দেখা যায়নি।