সংক্ষিপ্ত
- সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত ভারত ও চিনের মধ্যে
- দুই দেশই নিজেদের সীমান্তে শক্তি বাড়িয়ে চলেছে
- মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করছে চিন
- লাল ফৌজের কৌশল বানচাল করতে হাজির 'ঘাতক' কম্যান্ডোরা
'ইট কা জবাব পাত্থর সে', গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের মধ্যে সেনা সংঘর্ষের পর এই নীতিতেই এখন চলছে ভারতীয় বাহিনী। চিন যদি বেশি আগ্রাসী মনোভাব দেখায় তাহলে সেনাকে পুরো স্বাধীনতা দেওয়য়া রয়েছে তার জবাব দেওয়ার। আগেই একথা বলে দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এবার সীমান্তে চিনা বাহিনীকে জব্দ করতে বিশেষ ঘাতক প্ল্যাটুনকে মোতায়েল করল ভারতীয় সেনাবাহিনী।
পাহাড়ি অঞ্চলে ভারতীয় সেনাদের মোকাবিলা করতে লাগবে একাধারে দক্ষ পর্বতরোহী ও মার্শাল আর্টে পটু সেনা। তা বুধতে পেরেছে চিনের লাল ফৌজ। গালওয়ান কার্ণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে তা বুঝতে পেরেছে বেজিং। সেই কারণে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সীমান্তেপর্বতারোহণ ও মার্শাল আর্ট জানা জওয়ানদের মোতায়েন করছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। এমনটাই জানা গিয়েছে চিনের সেনাবাহিনীর মুখপত্র ‘চায়না ন্যাশনাল ডিফেন্স নিউজ’থেকে ।
এই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, ১৫ জুনই তিব্বতের রাজধানী লাসায় মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনীর পাঁচটি নতুন বিভাগের সদস্যদের। ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকের সময় মাউন্ট এভারেস্টে মশাল দৌড়ে যে দলটি গিয়েছিল, সেই দলের সদস্যরাও এই বিভাগে রয়েছেন। এছাড়া মিক্সড মার্শাল আর্টস ক্লাবের সদস্যদেরও লাসায় আনা হয়। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি-তে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গিয়েছে, লাসায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকশো জওয়ান। তিব্বতের কম্যান্ডার ওয়াং হাইজিয়াং জানিয়েছেন, এনবো ফাইট ক্লাব থেকে যাঁদের নেওয়া হয়েছে, তাঁরা জওয়ানদের সাংগঠনিক দক্ষতা এবং সংহতি বাড়াতে সাহায্য করবেন। এছাড়া তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন এবং অন্যদের সাহায্য করতে পারবেন। পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতেই পর্বতারোহী ও মার্শাল আর্টস বিশেষজ্ঞদের মোতায়েন করছে চিন সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়াল, আক্রান্ত সাড়ে ৫ লক্ষের কাছাকাছি
গালওয়ান উপত্যকায় সেনা সংঘাতে ভারতের ২০ জন জওয়ান প্রাণ হারান। চিনের কতজন হতাহত, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিব্বতে ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জওয়ানদের পাহাড়ে লড়াই করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে অধিক উচ্চতায় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার বিষয়টিও। পাল্টা ভারতের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, চিনের মোকাবিলায় সীমান্তে জওয়ানের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। যার সব থেকে উল্লেখ যোগ্য বিষয়, অভিযানের জন্য তৈরি করে ফেলা হয়েছে বিশেষ ঘাতক প্ল্যাটুনকে।
মুখে কূটনৈতিক ভাবে সমস্যা সমাধানের কথা বললেও ভারতও চিনকে চাপে রাখতে সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে ময়দানে নেমেছে। দেশের তিন বাহিনীকেই জল, স্থলে ও আকাশপথে কঠোরতম নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এর মাঝেই চিনের মার্শাল আর্ট জানা ফাইটারদের মোকাবিলা করতে ভারত সীমান্তে মোতায়েন করে ফেলেছ ঘাতক কম্যান্ডোদের। সেনার বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই কম্যান্ডোবাহিনী। শারীরিক ক্ষমতা আরও বাড়াতে কড়া প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় 'ঘাতক' কম্যান্ডোদের। কর্নাটকের বেলগামে ৪৩ দিন ধরে এই কম্যান্ডোদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের সময় ৩৫ কিলোগ্রাম ওজন নিয়ে টানা ৪০ কিলোমিটার ছুটতে হয়। অস্ত্র প্রশিক্ষণ ছাড়াও ঘাতক কম্যান্ডোদের 'হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট'-এর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি মার্শাল আর্টে দক্ষ হয় 'ঘাতক' কম্যান্ডোরা। মরুভূমি ও দুর্গম এলাকারজন্য আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই 'ঘাতক' কম্যান্ডোদের।
জানা যাচ্ছে, ঘাতক কম্যান্ডোদের একটি ইউনিটে একজন অফিসার ও একজন জেসিও সহ ২২ জন কম্যান্ডো থাকেন । ঠিক একইরকমভাবে আরেকটি দল রিজার্ভে প্রস্তুত থাকে। ফলে সবমিলিয়ে একটি ইউনিটে ৪০ থেকে ৪৫ জন 'ঘাতক' কম্যান্ডো থাকেন।