সংক্ষিপ্ত
আজানের সময় লাউড স্পিকার ও মাইক্রোফোনের ব্যবহার চলবে না
এমনটাই রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট
শব্দ পরিবর্ধকের ব্যবহার ধর্মীয় অধিকার নয় বলা হল
নবী বা তাঁর শিষ্যরা কেউই লাউডস্পিকার ব্যবহার করেননি
শুক্রবার, ধর্মীয় প্রয়োজনে অ্যামপ্লিফাইং ইনস্ট্রুমেন্ট বা পরিবর্ধক যন্ত্রের ব্যবহার বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এদিন আদালত বলেছে, লাউডস্পিকারের ব্যবহার আজানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয় বা আজানকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয়ও নয়। কারণ অন্য নাগরিকদের তা না শোনার অধিকার রয়েছে।
বিচারপতি শশীকান্ত গুপ্তের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বলে, 'কোনও নাগরিককে এমন কিছু শুনতে বাধ্য করা যায় না যা তিনি পছন্দ করেন না বা যা তার প্রয়োজন হয় না। কারণ এটি ওই ব্যক্তির মৌলিক অধিকার হরণ করার সমতুল্য। জোর করে কাউকে কিছু শোনানোর অধিকার কারোর নেই।' তাই এই ক্ষেত্রে কোনও সাংবিধানিক সুরক্ষা নেই। আদালত আরও বলেছে 'কোনও ব্যক্তিরই অন্যের অধিকার হরণ করার অধিকার নেই এবং মাইক্রোফোনের ব্যবহার অবশ্যই নাগরিকদের অন্যের সঙ্গে কথা বলা, তাদের পড়াশোনার, চিন্তা করার বা ঘুমের অধিকার হরণ করে।' হাইকোর্টের বেঞ্চ আরও বলেছে যে আজান ইসলাম ধর্মের একটি অপরিহার্য ও অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও লাউড স্পিকার বা অন্যান্য শব্দ পরিবর্ধক যন্ত্রের মাধ্যমে আজান দেওয়া ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নয়।
লোকসভা সাংসদ আফজাল আনসারী, কংগ্রেস নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী সলমন খুরশিদ এবং আরেক প্রবীণ আইনজীবী এসডব্লুএ কাদরির দায়ের করা মামলার রায় দেওয়ার সময় আদালত এই কথা বলেছে। এই মামলায় গাজীপুর ও ফারুকাবাদ জেলায় মুসলমানদের জন্য শব্দবৃদ্ধিকারী যন্ত্র ব্যবহার করে মুয়েজ্জিনদের আজান পাঠের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে প্রশাসনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলি পুরোপুরি স্বেচ্ছাচারী ও অসাংবিধানিক হিসাবে ঘোষণা করার জন্যও আবেদন করা হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, রমজানের সময় আজানের শব্দে রোজা শুরু করা ইসলামী ঐতিহ্য। এছাড়া এই সময় কোনও মসজিদে কোনও ধর্মীয় জমায়েতও হচ্ছে না।
আদালত এদিন তাঁদের আবেদন উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, 'মাইক্রোফোনের ব্যবহার নবী বা তাঁর প্রধান শিষ্যদের কেউ চালু করেননি। বরং মাইক্রোফোনের ব্যবহার সাম্প্রতিক এবং সেই তাই মাইক্রোফোন বা লাউড-স্পিকারের ব্যবহারের আজানের জন্য অপরিহার্য এবং অবিচ্ছেদ্য তা বলা যায় না। ঐতিহ্যগতভাবে এবং ধর্মীয় আদেশ অনুসারে, আজান কোনও ইমাম বা মসজিদে দায়িত্বরত কোনও ব্যক্তিকে তাদের নিজস্ব কণ্ঠের মাধ্যমে পাঠ করতে হয়। কোনও কল্পনাশক্তি দ্বারা ধর্মের অধিকার অনুশীলন করা উচিত নয় এবং প্রচার করা উচিত নয় যে মাইক্রোফোন ধর্মের একটি অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে গিয়েছে।'