সংক্ষিপ্ত

২০১৪ থেকে ২০১৯, পাঁচ বছর ধরে স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটারের অ্যাক্সেস হ্যাকারদের হাতে ছিল বলেই জানানো হয়েছে আমেরিকার তদন্তকারীদের রিপোর্টে

আদিবাসী ও দলিতদের অধিকার রক্ষার জন্য সারা জীবন ভর যিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে এনআইএ হেফাজতে থাকাকালীনই। সেই ৮৪ বছরের জেসুইট পাদ্রি স্ট্যানিস্লাস লার্ডুস্বামী ওরফে ফাদার স্ট্যান স্বামী গ্রেফতার হয়েছিলেন ২০২০ সালে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ভীমা কোরেগাঁও-এর মতো ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলায় তিনি ইন্ধন দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকা এবং মাওবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্টতার প্রমাণস্বরূপ তাঁর ল্যাপটপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বেশ কিছু অপরাধমূলক তথ্য। কিন্তু, ঠিক ২ বছর পর তাঁর গ্রেফতারি সম্পর্কে উঠে এল চাঞ্চল্যকর খবর।

মহারাষ্ট্রে ভীমা-কোরেগাঁওয়ে দলিতদের বিজয় দিবস উৎসবে হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে দলিতদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন মানুষ প্রাণ হারান। জখমও হয়েছিলেন অনেকে। সেই সংঘর্ষের তদন্তে নেমে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের জেরা করার সময়েই উঠে এসেছিল তামিল পাদ্রি স্ট্যানের নাম।

মৃত্যুর প্রায় দেড় বছর পর ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ফাদার স্ট্য়ান স্বামীর গ্রেফতারি নিয়ে এবার বেরিয়ে এল বিস্ফোরক তথ্য। আমেরিকার একটি ফরেন্সিক ফার্ম দাবি করেছে যে, ফাদার স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটারে যে সমস্ত অপরাধমূলক তথ্য পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে ঢোকানো হয়েছিল। কম্পিউটারে পাওয়া তথ্য় প্রমাণের ভিত্তিতেই ২০২০ সালে সন্ত্রাসবাদে যোগ থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ৮৪ বছরের সমাজকর্মী ফাদার স্ট্যান স্বামীকে। মার্কিন ফার্মের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জুলাই মাসে জেল হেফাজতে মৃত্যু হয় ফাদার স্ট্যান স্বামীর।

ভীমা কোরেগাঁও মামলার তদন্তভার রয়েছে এনআইএ-র হাতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল, নিষিদ্ধ মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ফাদার স্ট্যান স্বামী। ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁও গ্রামে যে দাঙ্গা হয়েছিল, তার সঙ্গেও স্ট্যান স্বামী সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করা হয়। ফাদার স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটার থেকে উদ্ধার করা বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের পরিকল্পনার অভিযোগে স্ট্যান স্বামী সহ একাধিক বামপন্থী সমাজকর্মী, শিক্ষাকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

২০২০ সালে গ্রেফতার হওয়ার আগেই স্ট্য়ান স্বামী একটি ভিডিয়ো বার্তায় দাবি করেন যে তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা। স্ট্যান স্বামীর সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েই বস্টনের আরসেনাল কনসাল্টিং নামক একটি ফরেন্সিক ফার্ম জানায়, প্রায় ৪৪টি নথি, যা মাওবাদীদের চিঠি বলে দাবি করা হয়েছিল, তা সাইবার হানা চালিয়ে স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ থেকে ২০১৯, পাঁচ বছর ধরে স্ট্যান স্বামীর কম্পিউটারের অ্যাক্সেস হ্যাকারদের হাতে ছিল বলেই জানানো হয়েছে সেই রিপোর্টে। উল্লেখ্য, এই তদন্তকারী সংস্থাকে স্ট্যান স্বামীর আইনজীবীরাই নিযুক্ত করেছিলেন বিস্তারিত তদন্তের জন্য।


আরও পড়ুন-
চলতি সপ্তাহেই পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে মহাকাশের গ্রহাণু, কী প্রভাব পড়তে পারে নীল গ্রহের ওপর?

চিকিৎসকদের দেখেই রে রে করে তেড়ে এলেন রোগীর ‘পরিচিত’রা, জলপাইগুড়ির হাসপাতালে মধ্যরাতে বহিরাগতদের ‘তাণ্ডব’