বেনজির পুলিশী অত্যাচারের অভিযোগ অন্ধ্রপ্রদেশেচলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতি দুই শিশুসহ এক অটোচালকের পরিবারতার আগে ভিডিওতে জানালেন আত্মহত্যার কারণঅভিযোগের আঙুল এক সিআই ও এক হেড কনস্টেবল-এর দিকে 

অন্ধ্রপ্রদেশে বেনজির পুলিশী অত্যাচারের অভিযোগ তুলল বিরোধী দলগুলি। গত ২ নভেম্বর কুর্নুলের পনিয়ম রেলস্টেশনের কাছে এক জায়গায় চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে দুই শিশুসহ চারজনের এক অটোচালকের পরিবার আত্মঘাতি হয়েছিল। এরপর, একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে ওই অটোচালককে, নান্দিয়াল শহরের পুলিশ পরিদর্শক সোমশেখর রেড্ডি এবং হেড কনস্টেবল গঙ্গাধর-এর বিরুদ্ধে চরম শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে। যার জেরেই সপরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তারা।

ওই অটোচালকের নাম আব্দুল সালাম (৪৫)। গত ২ নভেম্বর স্ত্রী নূরজাহান (৩৮), কন্যা সালমা (১৪) এবং ছেলে জলন্দর (১০)-কে নিয়ে সপরিবারে আত্মঘাতি হয়েছিল সে। কিন্তু, তার আগেই একটি ভিডিও-তে সে তাঁর এই চরম সিদ্ধান্তের কারণ জানিয়ে যায়। তাঁর অভিযোগ দু-দুবার দুটি চুরির ঘটনায় স্রেফ সন্দেহের বশে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হেনস্থা করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন - Live Results Update- ধাক্কা সামলিয়ে এগিয়ে চলেছে এনডিএ, মহাজোট পেতে পারে ১০০ আসন

আরও পড়ুন - বিহার নির্বাচন গণনা- এনডিএ ১২৯, মহাজোট ১০৩, অন্যান্য ১১

আরও পড়ুন - NDA এগিয়ে গেলেও নীতিশের মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে জল্পনা শুরু, বিহারে সবথেকে শক্তিশালী BJP

জানা গিয়েছে, অটো চালানোর আগে আবদুল নন্দিয়াল-এর রোজাকুন্তা এলাকার একটি গয়নার দোকানে কাজ করতেন। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ৩ কেজি সোনা চুরির অভিযোগ এনে তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু, প্রমাণের অভাবে পরে তিনি জামিনে মুক্ত হযেছিলেন। সোনার দোকান ছেড়ে অটো চালাতে আসলেও পুলিশ তার পিছু ছাড়েনি। প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে তাঁর অটোর একটি যাত্রী পুলিশের কাছে ৭০,০০০ টাকা চুরির অভিযোগ জানিয়েছিল। আগুপিছু না তদন্ত করেই পুলিশ সোজা আব্দুল-এর নামে মামলা করে দেয় বলে অভিযোগ। এছাড়া, দুবারই পুলিশ তাঁকে মারধর ও লাঞ্ছনা করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এরপরই আরও পুলিশি হেনস্থার ভয়ে সে সপরিবারে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর আত্মঘাতি হওয়ার আগে শেষ ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন, তিনি কোনও ভুল করেনি। কোনও চুরির সঙ্গেই তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশের অত্যাচার তিনি আর সহ্য করতে পারছেন না। অসহায়ভাবে জানিয়েছেন তাঁদের সাহায্য করতেও কেউ এগিয়ে আসবে না। তাই মৃত্যুই তাঁদের মানসিক শান্তি দিতে পারে।

Scroll to load tweet…

এই ভিডিওটি ভাইরাল হতেই মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডির হস্তক্ষেপ চেয়ে রাস্তায় নেমেছে বিরোধীরা। টিডিপি-র পক্ষ থেকে মৃত পরিবারটির ন্যায়বিচারের দাবিতে নন্দিয়াল অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, গত ১৮ মাসে পুলিশি নৃশংসতা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক পুলিশ কর্মী বালি ও মদের চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।

চুপ করে বসে নেই সরকারও। তড়িঘড়ি সিআই সোমাশেখর রেড্ডি এবং হেড কনস্টেবল গঙ্গাধর-কে সাসপেন্ড করে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে, সোমবারই দুজনকেই অবশ্য দুজনকেই জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই দুই পুলিশ কর্মী সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে - এই যুক্তি দেখিয়ে তাদের জামিন নাকচ করার আবেদন জানিয়েছে। এই মামলার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে আইজিপি শঙ্খব্রত বাগচি এবং সিনিয়র আইপিএস অফিসার আরিফ হাফিজকে। সেইসঙ্গে দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তদের পরিচয় না দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বলে আশ্বস্ত করেছেন ডিজিপি গৌতম সাওয়ান। তবে তাতে বিরোধী রাজনৈচতিক দলগুলিকে থামানো যাচ্ছে না।