Air India Flight Accident: স্ত্রীর শেষ ইচ্ছাপূরণ করতে ভারতে এসে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন স্বামী। স্ত্রী বিয়োগের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই না ফেরার দেশে অর্জুন। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন… 

Air India Flight Accident: মাত্র এক সপ্তাহ আগে মারা গিয়েছেন স্ত্রী। মৃত্যুর পর যেন তার অস্থিভস্ম দেশের মাটিতে গিয়ে নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। মৃত্যুকালে এটাই ছিল তার শেষ ইচ্ছা। প্রয়াত স্ত্রীর ইচ্ছাপূর্ণ করতে সুদূর ব্রিটেন থেকে গুজরাটে চলেও এসেছিলেন স্বামী। নদীতে স্ত্রীর অস্থিভস্ম ভাসিয়েও দিয়েছিলেন। সবকাজই সেরে ফেলেছিলেন। অপেক্ষায় ছিলেন কতক্ষণে সদ্য মা-হারা লন্ডনে চার ও আট বছর বয়সী দুই মেয়ের কাছে ফিরবেন বাবা।

বৃহস্পতিবার দুপুরের বীভৎস বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক অর্জুন মনুভাই পাটোয়ার। জানা গিয়েছে, ৩৬ বছর বয়সী অর্জুন মনুভাই পাটোয়া তাঁর প্রয়াত স্ত্রী ভারতীবেনের অস্থি নদীতে ভাসাতে পৈতৃক গ্রাম আমরেলি জেলার ভাদিয়ায় এসেছিলেন দিনকতক আগে। সূত্রের খবর, ভারতীবেন মাত্র এক সপ্তাহ আগে লন্ডনে মারা গিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে ভারতীবেন তাঁর স্বামীকে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর অস্থি যেন মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা গিয়েছে, ভাদিয়ায় আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। এরপর পাটোয়া তার ৪ ও ৮ বছর বয়সী দুই কন্যার কাছে ফেরার উদ্দেশে আহমেদাবাদ থেকে এয়ার ইন্ডিয়ারAI171-বিমান ধরেন। ফেরার কথা চিল ব্রিটেনে বাচ্চাদের কাছে। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন মনুভাই পাটোয়া। আর ফেরা হল মেয়েদের কাছে।

আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এআই ১৭১ (AI 171) ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়। বিশাল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি একটি আবাসিক এলাকার মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে আছড়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানটি মাটি থেকে উপরে ওঠার জন্য সংগ্রাম করার সময় উচ্চতা হারাচ্ছিল এবং আঘাতের সাথে সাথেই এটি একটি আগুনের গোলায় পরিণত হয়। বিমানটিতে ১৬৯ জন ভারতীয় এবং ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক সহ ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। মাত্র একজন ব্যক্তি এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় মোট ২৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

অন্যদিকে, সফর ছিলো মাত্র নয় ঘন্টার। তারপরই নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে বিলেতের মাটি ছুঁতেন পায়েল খাটিক। কিন্তু সেই স্বপ্ন রয়েই গেল অপূর্ণ। বিদেশের মাটিতে পড়াশোনা করার জন্য প্রথমবার বিমানে উঠতেই মুহুর্তের মধ্যে তা হয়ে গেল শেষ বিমানযাত্রা। দেশের মাটিতেই স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেল পায়েলের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গুজরাটের আহমেদাবাদ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার AI171-এয়ারবাস। কিন্তু মাটি থেকে টেকঅফের মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ে গেল সবশেষ। বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনই নিহত। আর এই নিহতদের তালিকায় রয়েছে রাজস্থানের উদয়পুরের বাসিন্দা পায়েল খাটিক।

জানা গিয়েছে, আদতে রাজস্থানের উদয়পুরের বাসিন্দা হলেও পায়েল খাটিকরা সপরিবারে গুজরাটের হিম্মতনগরে বাস করতেন। তার বাবা সুরেশভাই খাটিক একজন রিকশা চালক। অভাবের সংসারে দিনরাত এককরে মেয়েকে মানুষ করেছিলেন তিনি। উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাঠাচ্ছিলেন মেয়েকে। তখনই বা কে জানত জীবনে প্রথমবার প্লেনে ওঠাই কাল হয়ে দাঁড়াবে পায়েলের জীবনে। মাত্র ৩০ সেকেন্ডে শেষ হয়ে যাবে মেয়ের বিলেতে গিয়ে পড়াশোনার স্বপ্ন। কারণ, বৃহস্পতিবারের ভয়ঙ্কর প্লেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সুরেশভাই খাটিকের মেয়ে পায়েল খাটিকও।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।