Mamata Banerjee On PM Modi: বাংলাদেশে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বসতবাড়ি। এভাবে রবি ঠাকুরের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিষয়টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন তিনি।
Mamata Banerjee On PM Modi: পদ্মাপাড়ে ফের ভূলন্ঠিত রবিঠাকুর। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাড়িতে হামলার অভিযোগ দুস্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রাতের অন্ধকারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক বাসভবনে হামলা চালায় দুস্কৃতীরা। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত কবিগুরুর পৈতৃক বাড়িতে দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ওই দর্শনীয় স্থানে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সেখানকার পুরাতত্ব বিভাগ। এদিকে এই বিষয়ে পড়শি দেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee News)।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ''বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।'' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধুমাত্র ভারতবর্ষের নয়, গোটা পৃথিবীর কাছে এক দৃষ্টান্তমূলক ব্যক্তিত্ব। তার বসতবাড়ি এভাবে ভেঙে ফেলা যথেষ্ট দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন করেছেন।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশে (Bangladesh) উন্মত্ত জনতার হামলার হাত থেকে রক্ষা পেল না বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) পৈত্রিক বাড়ি। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে (Rabindra Kachari Bari) হামলা, ভাঙচুর চালানো হল। উন্মত্ত জনতা কাছারিবাড়িতে ঢুকে কাস্টডিয়ানের অফিস, অডিটোরিয়ামের জানালা, দরজা ভাঙচুর করে। বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রীর ক্ষতি হয়েছে। সংগ্রহশালার অধিকর্তাকেও মারধর করা হয়। এই ঘটনার পর দর্শকদের জন্য কাছারি বাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশে এখন রবীন্দ্রনাথের একমাত্র পরিচয় হিন্দু ও ভারতীয় কবি। যিনি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা, তাঁকেই এখন ব্রাত্য করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবিও উঠেছে সেদেশে।
সিরাজগঞ্জে ঠিক কী হয়েছিল? (Rabindranath Tagore House Vandalised):-
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে বাইক পার্কিংয়ের ফি নিয়ে কাছারি বাড়ি সংগ্রহশালার এক কর্মীর সঙ্গে এক দর্শকের বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, ওই দর্শককে সংগ্রহশালার ভিতরে নিয়ে আটকে রাখা হয় এবং মারধর করা হয়। এরপরেই উত্তেজনা ছড়ায়। উন্মত্ত জনতা শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। এরপরেই রবীন্দ্রনাথের পৈত্রিক বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।
বহু পুরনো রবীন্দ্রনাথের পৈত্রিক বাড়ি (Rabindranath Tagore House Vandalised):-
১৮৪২ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই বাড়ি কিনে নেন রবীন্দ্রনাথের ঠাকুর্দা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ সালে প্রথমবার এই কাছারি বাড়িতে আসেন। তিনি এই বাড়িতে বসে অনেক বিখ্যাত সাহিত্য রচনা করেছেন। এই বাড়িতেই রচনা করা হয় ‘চোখের বালি’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘ঘরে বাইরে’-র মতো বিখ্যাত উপন্যাস। এমনকী, 'গীতাঞ্জলি'-ও এই বাড়ি থেকেই রচনা শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি তৎকালীন পূর্ববঙ্গের পরিবেশ, মানুষের কথা অনেক সাহিত্যে তুলে ধরেছেন। কিন্তু অশান্তি, অরাজকতার বাংলাদেশে এখন আর শ্রদ্ধার পাত্র নন বিশ্বকবি!
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


