সংক্ষিপ্ত
- রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর আয়োজন নির্বিঘ্নে করে বাহবা কুড়িয়েছেন
- মন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তাঁকে শুরু থেকেই দেখা গিয়েছে অগ্রণী ভূমিকায়
- এবার অযোধ্যায় মসজিদ তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে
- সেখানে উপস্থিত থাকেবন কিনা তার জবাব দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী
গত বুধবা ৫ আগস্ট ছিল অযোধ্যার বহু প্রতিক্ষিত রাম মন্দিরের শিলান্যাস। এই অনুষ্ঠান যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয় তার মূল কাণ্ডারী ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ভূমিপুজোর আয়োজন দেখতে বার বার ছুটে গেছেন অযোধ্যায়। পুরো অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে হওয়ায় বাহবাও জুটেছে যোগীজির। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে এবার মন্দিরের পর অযোধ্যায় মসজিদের শিলান্যাস হতে চলেছে। সেখানেও কী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে একই রকম তৎপর দেখা যাবে যোগী আদিত্যনাথকে?
সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে শিলান্যাস থেকে শুরু করে মন্দির নির্মাণ, সবটাই হওয়ার কথা রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের নেতৃত্বে।বুধবারের শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে রাম মন্দির ট্রাস্টের সদস্য না হওয়া সত্বেও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীই সবটার তদারকি করছেন। অতিথিদের আপ্যায়ন থেকে শুরু করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা, সবসময় ব্যতিব্যস্ত থেকেছেন যোগী আদিত্যনাথ। নির্বিঘ্নে পুরো বিষয়টি সম্পন্ন হওয়ার পরেই যোগীর দিকে ধেয়ে এসেছিল 'কাঙ্খিত প্রশ্ন'। অযোধ্যায় মসজিদের শিলান্যাসে যাবেন আপনি? সাংবাদিকদের এহেন প্রশ্নে । হাসিমুখ উধাও হয়ে যায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর। জবাব দেন, 'আমাকে ওরা ডাকবেও না, আর আমি যাবও না।'
বুধবার মন্দিরের শিলান্যাস অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পর এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, মন্দিরের শিলান্যাসে তিনি যেভাবে সক্রিয় ভূমিকা নিলেন, তেমনভাবে মসজিদের শিলান্যাসে তিনি যাবেন কিনা? প্রশ্ন শুনেই বদলে যায় যোগীর হাবভাব।তাঁর সাফ কথা ছিল, মসজিদের শিলান্যাসে তাঁকে ডাকা হবে না। আর তিনি যাবেনও না।
প্রশাসক যোগীর এহেন মন্তব্যে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। তাতে যোগী স্পষ্টই বলে দেন, নিজের ধর্মবিশ্বাস প্রকাশের অধিকার তাঁর রয়েছে। ফলে শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে প্রশ্ন তোলার মানে হয় না। একই ভাবে মসজিদের শিলান্যাসে যেতে যে সন্ন্যাসী হিসেবে তাঁর আপত্তি আছে, সে কথাও সোজাসুজি বলে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে জিডিপির অধোগতি, পরিস্থিতি সামল দিতে রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখল আরবিআই
ধর্মনিরপেক্ষ দেশে কোনও মন্দিরের শিলান্যাসে প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। এক্ষেত্রে যোগীর পাল্টা যুক্তি, ‘‘যখন রাজনৈতিক স্বার্থে নেতারা মাথায় ফেজ টুপি পরেন, ইফতারে যান, তখন ধর্মনিরপেক্ষতায় সমস্যা হয় না? মানুষ সব বোঝেন।’’ কংগ্রেসকে নিশানা করেই যোগী বলেন, তাঁরা সাংবিধানিক মূল্যবোধের মানে জানেন না। সংবিধানেও রাম-সীতার ছবি রয়েছে।
তবে শিলান্যাসে উপস্থিত না থাকলেও মসজিদ প্রসঙ্গে প্রশাসক হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে দিয়েছেন যোগী। বলেছেন, 'মসজিদের বিষয়ে আমার যতটুকু কাজ, ততটুকু আমি করে দেব। আমার দায়িত্ব আমি ঠিকই পালন করব।'
এদিকে রাম মন্দিরের মতোই অযোধ্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে মসজিদ তৈরির কাজও। সুপ্রিম কোর্ট নিজের রায়ে জানিয়ে দিয়েছিল, বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরি হলেও মসজিদ নির্মাণের জন্যে অযোধ্যাতেই পাঁচ একর জমি দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় অনুযায়ী, অযোধ্যারই ধান্নিপুরে ৫ একর জমি দেওয়া হয় মসজিদ নির্মাণের জন্যে। সেই মসজিদ নির্মাণের জন্য 'ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন' নামে ট্রাস্ট তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে।