সংক্ষিপ্ত

গোয়া, মণিপুর, উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই বিজেপির সরকার রয়েছে। আর এতদিন পঞ্জাবে সরকারে ছিল কংগ্রেস। কিন্তু, সেখানে নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জেরবার হয়ে যায় এই দল। আর তার প্রভাব পড়েছে বিধানসভা নির্বাচনে। 

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2022) ফলাফল কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আসতে চলেছে। তবে প্রাথমিক ট্রেন্ড থেকে যা বোযা যাচ্ছে তাতে দেখা গিয়েছে চার রাজ্যেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি (BJP)। শুধুমাত্র পঞ্জাবে (Punjab Assembly Election 2022) বিজেপি কোনও দাগ কাটতে পারেনি। এছাড়া সব রাজ্যেই গেরুয়া ঝড় অব্যাহত রয়েছে। আর পঞ্জাবে এগিয়ে রয়েছে আম আদমি পার্টি (Aam Admi Party)। কংগ্রেসের (Congress) হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে এই রাজ্য। ভোট গণনায় (Vote Counting) পঞ্জাবে কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি নভজ্যোৎ সিং সিধুও হেরে যান। জয় নিশ্চিত করতে, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি দুটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু তিনিও নিজের আসনটি বাঁচাতে পারেননি। কার্যত দিনের শেষে ফাঁকাই থাকল 'হাতের' ঝুলি! 

কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোলেন মোদী
গোয়া, মণিপুর, উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশে ইতিমধ্যেই বিজেপির সরকার রয়েছে। আর এতদিন পঞ্জাবে সরকারে ছিল কংগ্রেস। কিন্তু, সেখানে নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জেরবার হয়ে যায় এই দল। আর তার প্রভাব পড়েছে বিধানসভা নির্বাচনে। সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে এই রাজ্যে এগিয়েছে আম আদমি পার্টি। এবার এই রাজ্যে সরকার গড়তে চলেছে আপ। ফলে আর এক রাজ্য থেকে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। এই পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের আগে কংগ্রেস পঞ্জাব, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে পূর্ণ ক্ষমতায় ছিল। মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের জোট ছিল। কিন্তু, পঞ্জাব হাতছাড়া হওয়ার ফলে কংগ্রেসের হাতে এখন মাত্র দুটি রাজ্য রয়েছে। অর্থাৎ কংগ্রেসমুক্ত ভারতের স্বপ্ন পূরণের দিকে আরও একধাপ এগোলেন নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আর পঞ্জাবের আগে ২০২১ সালে পুদুচেরিও কংগ্রেসের হাত থেকে বেরিয়ে যায়।

আরও পড়ুন- ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া ঝড়, আনন্দে জোয়ারে ভাসল সারা দেশের পাশাপাশি বাংলাও

দিনের শেষে কংগ্রেসের হাত শূন্য
কংগ্রেস পঞ্জাব ও উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand Election 2022) কঠোর পরিশ্রম করেছে। কিন্তু, তাতেও কোনও লাভ হল না। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর নেতৃত্বের অপদার্থতায় সেই উত্তরাখণ্ডেও বিজেপিকে টলাতে পারলেন না হরিশ রাওয়াতরা। গোয়ায় চিদম্বরমের কাঁধে ভর করে এবছর লড়াই দেওয়ার স্বপ্ন দেখছিল হাত শিবির। সৈকত রাজ্যে সরকার গড়া নিয়ে কংগ্রেস এতটাই নিশ্চিত ছিল যে ফলপ্রকাশের আগেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়ে নিয়েছিল হাত শিবির। ফলাফলে দেখা গেল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধারেকাছে তারা নেই। বরং, স্থানীয় এবং ছোটদলগুলি ধীরে ধীরে বিরোধী পরিসরে থাবা বসাচ্ছে। একই ছবি মণিপুরেও। দিনের শেষে হাত শিবিরের হাতে আর কিছুই রইল না।

আরও পড়ুন- ইন্দিরা হতে পারলেন না প্রিয়াঙ্কা, উত্তর প্রদেশে হালি পানি পেল না কংগ্রেস

গোটা দেশে কংগ্রেসের হাতে মাত্র দুই রাজ্য 
একসময় কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত রাজ করত কংগ্রেস। এখন একক শক্তিতে ক্ষমতায় মাত্র দুটি রাজ্যে। আর গোটা তিনেক রাজ্যে স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে জোট করে নিজেদের ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক দিন আগে থেকেই বলে আসছেন যেখানে বিজেপির (BJP) সঙ্গে সরাসরি লড়াই কংগ্রেসের, সেখানেই জিতছে বিজেপি। তৃণমূল নেত্রীর সেই তত্ত্ব এদিনের ফলাফলে আরও একবার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল। 

আরও পড়ুন- 'শিক্ষা নেব', ৫ রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর কী বললেন রাহুল গান্ধী

কৃষি আইনকে কেন্দ্র করে পঞ্জাবে বিজেপির প্রতি চরম বিতৃষ্ণা ছিল জনমানসে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল বিজেপির বিকল্প হিসেবে পঞ্জাবের মানুষ কংগ্রেসের থেকে আপকেই শ্রেয় বলে মনে করেছেন। ফলাফল ভালো করে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে উত্তরাখণ্ড বা গোয়ার মতো রাজ্যে সরকারের প্রতি মানুষের বিতৃষ্ণা থাকলেও কংগ্রেসকে ভরসা করতে পারেননি বিজেপি বিরোধী ভোটাররা। সেখানেই তৃণমূল, আম আদমি পার্টির মতো দল নিজেদের জন্য পরিসর তৈরি করে নিয়েছে। আর এভাবে আঞ্চলিক দলগুলি বা তৃতীয় কোনও রাজনৈতিক দল যদি মানুষের মন জয় করে নিতে থাকে আর মানুষ সেগুলিকেই বিকল্প হিসেবে ভাবতে শুরু করে তাহলে আগামীদিনে কংগ্রেসের অবস্থা আরও শোচনীয় হতে চলেছে।