সংক্ষিপ্ত

ওনাম স্পেশাল লটারিতে এককালীন ২৫ কোটি টাকা জিতলেন তিরুবনন্তপুরমের অটোরিকশা চালক অনুপ।ছেলের পিগি ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ টাকা ধার করে লটারির টিকিট কিনেছিলেন তিনি । 

ভাগ্যের চাকা কার কখন ঘুরে যায় বোঝা দায়।  এই ধরুন আপনি অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছেন সরকারি চাকরির,  কিন্তু চাকরি আপনি তখনি পাবেন যখন ভাগ্য আপনার সহায় থাকবে।  তেমনি হয়তো দারিদ্রতার যন্ত্রনায় কোনো এক লক্ষ্মী বারে, মায়ের কাছে গিয়ে প্রার্থনা করলেন ধনলাভের আশায় কিন্তু লক্ষ্মী লাভ আপনার তখনি হবে যখন লক্ষ্মী দেবী প্রসন্ন হবেন আপনার উপর।  একবার লক্ষ্মীর কৃপা পেলেই ব্যাস ,আর ফিরে  তাকাতে হবে না আপনাকে ।কারণ কথিতই আছে লক্ষ্মীদেবী যাকে  যখন দেন একেবারে ভরিয়ে দেন। এরকমই এক রিক্সা চালকের হঠাৎ লক্ষ্মীলাভের কাহিনীই এখন আপনাদের শোনাবো। 

কেরালার রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের শ্রীভরাহমের বাসিন্দা অনুপ, ওনাম স্পেশাল রাজ্য লটারির টিকিট কেটেছিলেন বেশ  কিছুদিন আগে। ভাগ্যদেবী বোধহয় প্রসন্নই ছিলেন তার উপর তাই এককালীন ২৫ কোটি টাকার বাম্পার লটারির বিজেতা হলেন তিনি গত রবিবার। তার টিকিট নম্বর  টিজে-৭৫০৬০৫ . রবিবার বিকালে খবরটি  পেয়ে খানিক হকচকিয়েই গিয়েছিলেন তিনি। তারপর সম্বিৎ ফিরলে বুঝতে পারেন এ স্বপ্ন নয় বাস্তব।  

পেশায় একজন অটোরিকশা চালক, অনুপ ড্রয়ের এক দিন আগে শনিবার সন্ধ্যায় পাজভাঙ্গাদি থেকে লটারির টিকিটটি কিনেছিলেন ৫০০ টাকা।লটারি বিশারদরা বলছেন এটি নাকি সর্বকালের সেরা জয় কারণ এর আগে কেউ এতো পরিমান টাকা একসাথে এইভাবে জেতেননি। যদিও জয়ের অংকটি ২৫ কোটি হলেও তিনি পাবেন ১৫.৭৫ কোটি টাকা। 

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় অনুপ বলেন তিনি পুরস্কারের এই এতো অর্থ কিভাবে কাজে লাগাবেন সেটা নিয়ে এখনো কিছু ভাবেননি , কারণ তিনি যে লটারি জিতবেন সেটা তিনি কোনোদিন আশাই করেননি। তিনি এও জানান যে শেষ মুহূর্তে  লটারির এই টিকিটটি কাটার জন্য তিনি তার ছেলের পিগি ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ টাকা ধারও করেছিলেন। 

টাকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুপ তার এজেন্টের হাতে অর্থাৎ যার কাছ থেকে টিকিটটি কিনেছিলেন তার হাতে ২.৫০ কোটি টাকা তুলে দেবেন। অনুপের হাত ধরে ভগবতী লটারি এজেন্সির পাজভাঙ্গাদি শাখার এই এজেন্টও কোটিপতি হতে চলেছেন। 

অন্যদিকে লটারির দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছেন কোয়াটামের এক বাসিন্দা। তার পুরস্কার মূল্য ৫ কোটি টাকা। সূত্রের খবর বিজয়ী টিকিটটি যার নম্বর টিজে-২৭০৯১২ সেটি পাপ্পাচান নামে একজন ব্যবসায়ী বিক্রি করেছিলেন।  তিনি অবশ্য  টিকিট এজেন্ট নন বরং টিকিট এজেন্সী থেকে ১০ টি টিকিট কিনেই তিনি নিজের দোকান থেকে তা  বিক্রি করেছিলেন। 

এবার জেনে নিন লটারির কিছু  নিয়ম ও শর্তাবলী

* টিকিট কেনার সাথে সাথে একজনের নাম, তার স্বাক্ষর এবং ঠিকানা টিকিটের অন্য পাশে লিখে  রাখতে হবে।

* ১ম থেকে ৪র্থ পুরস্কারের টিকিটের পুরস্কারমূল্য  থেকে ১০ শতাংশ সরাসরি কমিশন যাবে  টিকিট যে ব্যক্তি করেছেন তার কাছে । আর ৫ম থেকে ৮ম  টিকিটের পুরস্কার মূল্যের  ১০ শতাংশ সরকারি তহবিল থেকে যে  টিকিট বিক্রি করেছেন তাকে উপহারস্বরূপ দেওয়া হবে। 

*লটারি যিনি জিতেছেন তাকে  লাকি ড্রয়ের ৩০ দিনের মধ্যে পুরোস্কারমূল্য তুলে নিতে হবে।  প্রথম , দ্বিতীয়,ও তৃতীয় পুরস্কারের দাবিদার যারা তারা লটারি অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে পুরস্কারের অর্থ দাবি করতে পারেন। স্থানীয় লটারির অফিসে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরোস্কারমূল্য দাবি করা যেতে পারে। 

* পুরস্কার বিজয়ের সাক্ষর ও ঠিকানা সহ বিজয়ী টিকিটের কপি লটারি অফিসে জমা দিতে হবে।এছাড়াও  গেজেটেড অফিসার দ্বারা যাচাই করা বিজয়ীর দু কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি , পান কার্ড , আধার কার্ড, ফটো আইডি ও ঠিকানার প্রমান পত্র  সাক্ষর করে জমা দিতে হবে।এছাড়াও স্বাক্ষরসহ তাকে পুরোস্কারমূল্যের রশিদ জমা দিতে হবে যেখানে বিজয়ীর নাম ,ঠিকানা , ফোন নম্বর , এক টাকার স্ট্যাম্প , ব্যাঙ্ক একাউন্ট নম্বর , আইএফএসসি  কোড থাকবে এছাড়াও  ব্যাংকের পাস বইয়ের প্রথম পাতাও  জেরক্স করে জমা দিতে হবে। 

*  ক্ষতিগ্রস্ত টিকিটের জন্য পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করা হবে। সঠিক নম্বরযুক্ত টিকিটের জন্যই  শুধুমাত্র পুরস্কার অনুমোদিত হবে । পুরস্কারের অর্থ থেকে সংবিধিবদ্ধ আয়কর এবং সংশ্লিষ্ট কর কেটে নেওয়া হবে।

* রাজ্যের যে কোনও লটারি স্টলে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার নগদে রিডিম করা যেতে পারে।