- Home
- India News
- মানবতাবিরোধী অপরাধী শেখ হাসিনা! প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠি বাংলাদেশের
মানবতাবিরোধী অপরাধী শেখ হাসিনা! প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠি বাংলাদেশের
Yunus Govt On Sheikh Hasina: মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়ে এবার ভারত সরকারকে চিঠি লিখতে চলেছে সেদেশের সরকার। বিশদে জানতে দেখুন সম্পূর্ণ ফটো গ্যালারি…

শেখ হাসিনাকে ফেরতের দাবি ইউনূস সরকারের
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলন। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ছাত্র আন্দোলন। গত একবছরে বদলে গিয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। দেশ ছেড়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৩৯৭ দিন ধরে চলা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সোমবার রায় ঘোষণা করেছে সেদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর হতেই এবার ভারতের কাছ থেকে তাকে ফেরত নেওয়ার দাবিতে তোড়জোড় শুরু করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসন। সূত্রের খবর, হাসিনাকে ফেরত চেয়ে খুব শীঘ্রই ভারত সরকারের কাছে চিঠি লিখবে ঢাকা। এই বিষয়ে এমনটাই জানিয়েছেন সেদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
হাসিনা কী আর বাংলাদেশে ফিরবেন?
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হতেই উত্তাল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার পদ্মাপাড়ের দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লিগ। আর এরই মাঝে প্রকাশ্যে এসেছে নিজের মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিরোধিতা করে শেখ হাসিনার প্রথম লিখিত বিবৃতি। সেখানে তিনি ম্পষ্ট জানিয়েছেন যে- এই রায় তিনি কোনওভাবেই মানেন না। এটি সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়। শেখ হাসিনা আরও বলেন-''এই রায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকা চরমপন্থী ব্যক্তিদের নির্লজ্জতা ও খুনি মনোভাবের প্রতিফলন মাত্র। বাংলাদেশের শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করতে এবং আওয়ামী লিগকে রাজনৈতিক ভাবে ভেঙে দিতে এই কাজ করা হয়েছে।'' এখানেই শেষ নয়। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা মৃত্যুদণ্ডের সাজাও প্রত্যাখান করেছেন শেখ হাসিনা।
কী আছে ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তিতে?
২০১৩ সালে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তখন কেন্দ্রে মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। অন্য দিকে, ঢাকার মসনদে হাসিনাই। সেই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, আদালতের রায়ে প্রত্যর্পণ করানোর মতো অপরাধ করে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এক দেশ অপর দেশের হাতে তুলে দেবে। তবে ২০১৬ সালে সেই চুক্তি আরও সহজ করে দেয় বর্তমান মোদী সরকার। ওই চুক্তিতে স্পষ্ট বলা রয়েছে যে- ট্রাইবুনালের রায়ের প্রতিলিপি পাঠানো হলেও ভারত তা মানতে বাধ্য নয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, যদি কোনও দেশে কারও জীবনের ঝুঁকি থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া দেশ তাঁকে ফেরত পাঠাতে বাধ্য নয়। হাসিনার ক্ষেত্রেও এই আইনের কথা তুলে ধরতে পারে ভারত।
প্রত্যর্পণ আবেদন খারিজ করবে ভারত?
২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশের যে প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রত্যর্পণ আবেদন খারিজ করার অধিকার দু’দেশেরই রয়েছে। সুতরাং ভারত যে চুক্তি অনুয়ায়ীই চলবে সেটা এক প্রকার স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এখন দেখার কোন পথে এগোয় শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ।
ভারত সরকারকে চিঠি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করার পরই ঢাকার তরফে ভারত সরকারকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, চিঠিতে কেন্দ্র সরকারের কাছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বলা হয়েছে। তবে ঢাকার তরফে একটি চিঠি ভারত পেয়েছে বলে তা স্বীকার করে নিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। তবে ওই চিঠি আদেও বৈধ কীনা বা চিঠিতে কী লেখা আছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানানো হয়নি। এমনকি হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আদালতে রায় ঘোষণার পর এখনও পর্যন্ত ভারত সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া বা সরকারি বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
কোন পথে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক?
শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ছাড়ার পর ইউনূস সরকারের বাংলাদেশে ধর্মান্ধদের আস্ফালন শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সখ্যতা যে নতুন করে বেড়ে উঠেছে সে ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। এবার হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা। পাকিস্তানকে যে আরও কাছে চাইছে বাংলাদেশ তা সোমবারের রায়ে একপ্রকার অলিখিত ভাবে স্পষ্ট। ফলে ভারত সরকার হাসিনাকে দেশে ফেরত না পাঠালে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্কের অবনতি বৈকি উন্নতি হবে না তা বলাই বাহুল্য।

