সংক্ষিপ্ত

অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সেমিকন্ডাক্টটর এখন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রিক্যাল গ্যাজেট যার উপরে নির্ভর করছে শিল্প-প্রযুক্তির এক বিশাল অংশ। বলতে গেলে, গাড়ি শিল্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পের হার্ডওয়ারে এখন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল সেমিকন্ডাক্টর।

 

আমেরিকা সফরের মাঝেই সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ভারতের সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই তাঁর আমেরিকা সফরে অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সেমিকন্ডাক্টরের বিশ্বখ্যাত মার্কিন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক। কারণ, এক্ষেত্রে অন্যতম শক্তিশালী সংস্থা মাইক্রোন প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই ভারতে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা গড়তে চেয়ে সরকারের কাছে ২.৭ বিলিয়নের প্রকল্প জমা করেছিল। বৃহস্পতিবার সেই প্রকল্পে শিলমোহরও দিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আর এমনই এক ক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অ্যাপলায়েড ম্যাটেরিয়ালস-এর সিইও তথা প্রেসিডেন্ট গ্যারি ই ডিকারসনের বৈঠকের পরই ভারতীয় বিদেশ দফতর একটি বিবৃতি দেয়। যাতে তারা উল্লেখ করেছে যে মাইক্রোন টেকনোলজিকে ভারতে শিল্প গড়তে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এই বৃবিতির পর এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত দেশের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। কারণ তিনি তাঁর পেশাগত জীবনে একজন উচ্চাকাঙ্খি টেকম্যান ও উদ্যোগপতি। আর প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষিত সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে ভারতের বুকে একটা দিশা দিতে তৎপর।

রাজীব চন্দ্রশেখর একটি টুইট বার্তায় লিখেছেন, ' সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের উর্ধ্বমুখী দিশা দেখতে এবং সেমিকন্ডাক্টরে ভারতের একটা সুনির্দিষ্ট দিশা পেতে এটা একটা বিগ বিগ অ্যানাউন্সমেন্ট। এই ঘোষণায় বিশ্বখ্যাত মাইক্রোন টেকনোলজি যারা তথ্যপ্রযুক্তিশিল্পে মেমরি এবং স্টোরেজ ক্যাপাসিটি তৈরিতে বিশ্বজুড়ে একটা নাম হয়ে উঠেছে তারা ভারতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে আসছে। গ্লোবাল সেমিকন্ডাক্টরের আর এক বড়সড় নাম অ্যাপলায়েড ম্যাটেরিয়ালসও বাণিজ্যিকভাবে একটি সেমিকন্ডাক্টর সেন্টার খোলার কথা বলেছে। যেখানে উদ্ভাবনী শক্তি ও গবেষণার উপরে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হবে। এমনকী, গবেষণার কাজে ৬০ হাজার ইঞ্জিনিয়ারকে নেবে, যারা এর দ্বারা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের খুঁটিনাটি থেকে তার প্রযুক্তিকে বোঝার ক্ষমতা ধারণ করার সুযোগ পাবেন।'

এছাড়াও রাজীব তাঁর টুইট বার্তায় তুলে ধরেছেন যে কীভাবে নরেন্দ্র মোদী সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে ভারতের সম্ভাবনাকে এক দিশা দিতে তৎপর হয়েছিলেন। রাজীব জানিয়েছেন, '১৮ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ৭৬ হাজার কোটি টাকার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের সূচনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। যার দ্বারা ভারতের বুকে একটা সেমিকন্ডাক্টর ইকো সিস্টেম তৈরিতে তৎপর হয়েছিলেন তিনি। এরজন্য প্রধানমন্ত্রী কতগুলো লক্ষ্যমাত্রাও স্থীর করেছিলেন, যেখানে এই সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে দিয়ে এক নতুন সম্ভাবনা তৈরি করার পরিকল্পনাও হয়েছে।'

এই প্রসঙ্গেই রাজীব লিখেছেন, 'যার জন্য এই সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্পের আওতায় ৫টি স্টার্টআপ তৈরি হয়েছে। যারা সেমিকন্ডাক্টরের ফিউচার ডিজাইন-এর উপরে কাজ করছে। এছাড়াও, আরআইএসসি-ফাইভ প্রকল্পের আওতাতেও নেক্সট-জেন ডিজিটাল ইন্ডিয়ার জন্য আরআইএসসিভি(ডিআইআরভি) চিপ ও সিস্টেম তৈরির বিষয়েও কাজ চলছে। এমনকী সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য ফিউচার স্কিলের অঙ্গ হিসাবে ৮৫ হাজার ভিএলএসআই ইঢঞ্জিনিয়ার তৈরি হতে চলেছে। যারা আগামীদিনে গ্লোবাল ট্যালেন্ট বলে বিবেচিত হবে। আর এই বছরেই এই সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রির পাঠ্যক্রমকেও নতুন করে সাজানো হচ্ছে,আর সেই সঙ্গে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ আদানপ্রদানের রাস্তাও তৈরি করা হচ্ছে।'

টুইটের সবশেষে রাজীব লিখেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর ৯ বছরের এই শাসনকালে বিশ্বের কাছে ভারত এক নয়া শক্তি হিসাবে উন্মোচিত হয়েছে- যারমধ্যে যেমন রয়েছে অর্থনীতির শক্তিশালী বিকাশ, তেমনি রয়েছে প্রযুক্তিতে এক নয়া শক্তি।' 
 

 

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর যে মাইক্রোন টেকনোলজি যারা ইতিমধ্যেই সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগের জন্য অনুমতি পেয়েছে তারা তাদের প্রথম কারখানা গুজরাটেই তৈরি করতে চলেছে।