সংক্ষিপ্ত

বিভাস রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, আবহাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা। পাহাড়ি এলাকায় যদি আবহাওয়ার খারাপ থাকে তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তামিলনাড়ুর কুন্নুরে বায়ুসেনার বিমান এমআই ১৭ (Mi-17) বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু কী কারণে এই দুর্ঘটনা তারই ব্যাখ্যা দিলেন  বায়ুসেনার (Air Force) প্রাক্তন কর্মী বিভাস রায়চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন এটি এমআই ১৭ এর সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তির হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টারেই ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাপ জেনালের বিপিন রাওয়াত (CDS Bipin Rawat) ও প্রায় ১৩-১৪ জন আধিকারিক। সঙ্গে ছিলেন বিপিন রাওয়াতের স্ত্রীও। (Bipin Rawat) রাশিয়া থেকে কেনা হয়েছিল এগুলি। চপারের প্রয়ুক্তিগত কোনও ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেও স্পষ্ট করে জানিয়েদেন তিনি। তাঁর মতে খারাপ আবহাওয়ার কারণেই এজাতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে। 

বিভাস রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, আবহাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা। পাহাড়ি এলাকায় যদি আবহাওয়ার খারাপ থাকে তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি আরও বলেন এমআই-১৭এর দক্ষ চালকরা এই হেলিকপ্টার তখনই চালাতে পারে যখন কোনও এলাকার দৃশ্যমানতা ৫০০ মিটার থাকে। কিন্তু ৫০০ মিটারের কম দৃশ্যমানতা  থাকলে হেলিকপ্টার চালানো খুবই সমস্যার। তিনি আরও বলেন নীলগিরি থেকে কোয়েমবটুর - আকাশ পথে দূরত্ব খুবই কম। নীলগিরির নিচেই কোয়েমবাটুর।  কোয়েম্বটুর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সুলুর। সেখানে হেলিকপ্টার ফিল্ড  হেলিকপ্টার নামা ওঠার জায়গা। সেখান থেকেই ছেড়েছিল বিপিন রাওয়াতের হেলিকপ্টার। গন্তব্য ছিল উটির একটু নিচে ওয়েলিন্টন। সেখানে আর্মির ট্রেনিং ক্যাম্প ছিল। পাহাড়ি রাস্তাই ছিল হেলিকপ্টারটির যাত্রাপথ। 

 

তিনি জানিয়েছেন যাত্রাপথেই বিভ্রাট বাধে। পাহাড়ি রাস্তায় মেঘ বা কুয়াশা চলে আসাতেই দৃশ্যমানতা কমে যায়। কিন্তু পাইলট একটু ঝুঁকি নিয়েই কপ্টার চালাতে গিয়েছিলেন বলে মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন, এই রাস্তাটি বায়ু সেনা কর্মীদের অত্যান্ত পরিচিত। তারা প্রায়ই এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু কোনও কারণে আবহাওয়া খারাপ থাকায় হিসেবে গরমিল হয়ে যায় চালকের। তাতেই এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছে গেছে বলে মনে করছেন প্রাক্তন বায়ু সেনা কর্মী।

তবে এই  হেলিকপ্টার একবার দুর্ঘটনার কবলে পড়লে সেখান থেকে বেরিয়া খুবই কঠিন। হেলিকপ্টারটি যদি গাছে বা অন্য কোথাও আটকে যায় তাহলে তাহলে প্রানে বাঁচার আশা কিছুটা থাকতে পারে। নিজের কর্মজীবেনে তিনি আসমে একবার বায়ু সেনা কর্মীদের এভাবে প্রাণ বাচাতে দেখেছেন বলেও জানিয়েছেন।  কিন্তু এক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রাথমিকভাবে তিনি মনে করছেন এই হেলিকপ্টারটি পাহাড়ে ধাক্কা মারে। তারপরই তাতে আগুন লেগে যায়। এই প্রয়ুক্তির হেলিকপ্টার যখন টেকঅপ করে তখন তাতে প্রায় ৩ হাজার লিটার জ্বালানি তেল থাকে। এক্ষেত্রে হেলিকপ্টারটি টেকওফ করার পর মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাই তেলও খুব একটা খরচ হয়নি। কিন্তু পাহাড়ে ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে এটিতে আগুন লেগে গেছে। একটি আগুনের গোলায় পরিণত হয় কপ্টারটি।  বায়ু সেনা সূত্রের খবর এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় চিফ অব ডিফেন্স স্টাপ জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।