সংক্ষিপ্ত

ভারত চিন সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে সরব সোনম ওয়াংচুক 
চিনা দ্রব্য বয়কটের কথা বলেন তিনি
বর্তমান পরিস্থিতিতে নাগরিকদের কাছে দায়িত্ব পালনের আর্জি
চিনা দ্রব্য বয়কটের কারণও ব্যখ্যা করেন তিনি 

সোনম ওয়াংচুককে মনে আছে। যাঁর জীবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল ব্লকব্ল্যাস্টর হিন্দি ছবি থ্রি ইডিয়েটস। সিনেমায় তাঁর চরিত্রের নাম ছিল ফুনসুক ওয়াড়ু। আসল জীবনে তিনি লাদাখের বাসিন্দা সোনম ওয়াংচুক। ভারত-চিন সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে এবার মুখ খুললেন সেই সোনম ওয়াংচুক। তিনি অবশ্য কোনও রাজনৈতি বার্তা দেননি। দেশের মানুষের কাছে একটি সহজ সরল আর্জি জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি যে বার্তা দিয়েছেন তাঁর মূল কথাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চিনের তৈরি সমস্ত সফ্টওয়্যারের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।  আর আগামী এক বছর কেনা যাবে না চিনের তৈরি কোনও দ্রব্য। অর্থাৎ চিনের তৈরি সমস্ত কিছু বয়কট করার কথা বলেছেন তিনি। 

শুধু দেশেবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েই দায়িত্ব সেরে ফেলননি ওয়াংচুক। একই সঙ্গে নিজেও সেই পথ অবলম্বন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন বেশ কয়েক দিন আগেই নিজের ব্যবহারে চিনা ফোনটি বাতিল করেছেন। একই সঙ্গে তার ব্যখ্যাও দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে চিনা সেনারা লড়াই করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু আমারই চিনে তৈরি একাধিক দ্রব্য ব্যবহার করে ও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা করতে সাহায্য করছি। আর সেই টাকাতেই পুষ্ট হয় তাদের দেশের সেনাবাহিনী। 

৫৩ বছরের গবেষক ওয়াংচুক লাদাখ থেকে শ্যুট করা ভিডিও সোশ্যাল মিডিায়ায় পোস্ট করেছিলেন। যেখানে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন নাগরিক হিসেবে আমাদের নূন্যতম দায়িত্ব পালন করার জরুরী। পাশাপাশি চিনা দ্রব্য বয়কট ও চিনা সফ্টওয়্যার বাতিলের বিষয়টি প্রত্যেক নাগরিককে  তাঁর প্রতিবেশী ও বন্ধুদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। 

তিনি আরও বলেন সীমান্ত উত্তেজনা ক্রমশই বাড়ছে। এই রকম পরিস্থিতিতে রাতে ঘুমতে যাওয়ার সময় ভাবি আমাদের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী রয়েছে । কিন্তু তবে দেশের নাগরিক হিসেবে এই পরিস্থিতিতে তাঁদেরও কিছু দায়িত্ব থাকে। আর সেই দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত সময় এটাই। 

ওয়াংচুক আরও বলেছেন, চিনের এই পদক্ষেপ কেবল ভারত সীমান্তে নয়। দক্ষিণ চিন সীমান্তেও অভ্যন্তরীন সংকট তৈরির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট কার্যকরী।

তিনি আরও বলেন চিনা প্রশাসন সবথেকে বেশি ভয় করে নিজের দেশের ১৪০ কোটি মানুষকে। যাঁরা কোনও মানবাধিকার নেই। তাঁদের সঙ্গে শ্রমিকের মত ব্যবহার করা হয়। যাঁরা নিজেদের শ্রম দিয়ে সরকারকে ক্রমশই ধনী করেছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসোত্তর চিনে বন্ধ অধিকাংশ কারখানা। কাজ নেই বহু মানুষের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেদেশের রফতানি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ বাড়ছে চিনা জনগণের।  

আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভারতের নিজস্ব শক্তি ব্যবহার করা জরুরী। তিনি আরও বলেন যদি দেশের ১৩০ কোটি জনগণ চিনের তৈরি পণ্য বর্জন করেন এবং একটি আন্দোলন শুরু করেন তাহলে বিশ্বে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। পাশাপাশি এটি দেশের শিল্প ও দেশের মানুষকেও আগামী দিনে সাহায্য করবে বলেও তিনি দাবি করেন।