সংক্ষিপ্ত

বাজেট তৈরি ' লক-ইন' প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে প্রতি বছরই এই অনুষ্ঠান করা হয়। অর্থমন্ত্রকের কর্মী ও আধিকারিকদের হালুয়া তৈরি করে তা নিজে হাতে পরিশেবন করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী

প্রথা মেনেই অনুষ্ঠিত হল ঐতিহ্যগত হালুয়া অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ , কেন্দ্রীয় অর্থপ্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী, ভাগবত কিষানরাও কারাদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। অর্থ মন্ত্রক থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানান হয়েছে এই কথা। বলা হয়েছে নর্থব্লকে সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতেই চুড়ান্ত বাজেট প্রস্তুতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

বাজেট তৈরি ' লক-ইন' প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে প্রতি বছরই এই অনুষ্ঠান করা হয়। অর্থমন্ত্রকের কর্মী ও আধিকারিকদের হালুয়া তৈরি করে তা নিজে হাতে পরিশেবন করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তারপর মন্ত্রকের কর্মী ও আধিকারিকরার বিচ্ছিন্ন হয়ে যান সকলের থেকে। এই অনুষ্ঠানের পরই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কর্মী ও আধিকারিকরা, যারা গত ১০ দিন ধরে বাজেটের খসড়া তৈরি করেছিলেন তারা চলে যান নর্থব্লকের বেসমেন্টে। ১ ফেব্রুয়ারি নির্মালা সীতারমণ বাজেট পেশ না করা পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই থাকেন। এর উদ্দেশ্য হল বাজেটের কোনও তথ্য যাতে আগে ফাঁস না হয়ে যায়।

চলতি বছর এই অনুষ্ঠান ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গত দুই বছর কোভিডের কারণ এই প্রথায় ছন্দপতন হয়। সেই সময় হালুয়ার পরিবর্তে অর্থমন্ত্রী মিষ্টি বিতরণ করেন। যাইহোক এবার আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রথা মেনেই হালুয়া অনুষ্ঠান হবে নর্থ ব্লকে। সেখানে এবার আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল প্রেসের সদস্যদের।

মন্ত্রণ জানিয়েছে, গত দুই বছরের মত ২০২৩-২৪এর কেন্দ্রীয় বাজেট হবে কাগজবিহীন। গত বছর সংসদে বাজেট পেশের পর সংসদ সদস্য ও সাধারণ নাগরিকদের সুবিধের জন্য ইউনিয়ন বাজেট মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছিল।সেখানেই পাওয়া গিয়েছিল পুরো বাজেট। এবারও সেই অ্যাপেই পাওয়া যাবে পুরো বাজেট,তবে তা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের পরে।

হালুয়া অনুষ্ঠান-

এটি হল বাজেট তৈরি একদম শেষ পর্ব। কেন্দ্রীয় সরকারের বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি তৈরির সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের যেসব কর্মী ও আধিকারিকরা যুক্ত থাকে তাদের জন্যই মূলত এই অনুষ্ঠান। চূড়ান্ত বাজেট নথির গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মী ও আধিকারিকদের আড়ালে প্রায় বন্দি অবস্থায় রাখা হয়। এই দিন থেকে ১ ফেব্রিয়ারি নির্মলা সীতারমন বাজেশ পেশ না করা পর্যন্ত তাদের রাখা হয় নর্থব্লকের বেসমেন্টে। মূল কথা তারা এই কয়েক দিনের জন্য সমাজ আর দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে এই নিভৃত বাসের আগেই হয় হালুয়া অনুষ্ঠান। সেখানে একটি বড় কড়াইয়ে হালুয়া তৈরি করে তা পরিবেষণ করেন অর্থমন্ত্রী। তারপরই সংশ্লিষ্টরা চলে যান নর্থব্লকের বেসমেন্টে।

নর্থব্লকের বেসমেন্টে রয়েছে একটি প্রিন্টিং প্রেস। সেখানে ১৯৮০ -২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ৪০ বছর বছর ধরে বাজেটের নথি ছাপা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বাজেট ডিজিটাল হয়ে গেছে। নূন্যতম নথি ছাপার কাজে সেই প্রেস ব্যবহার করা হয়। তবে এখন বাজেট আর ছাপা হয় না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের লক-ইন সময়ও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন মাত্র ৪ দিন করা হয়েছে। আগে এই সময়সীমা ছিল প্রায় দুই সপ্তাহ।