Supreme Court On Russian Woman: বাংলার চন্দননগরের রুশ বধূর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে জারি লুকআউট নোটিস। বিশদে জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন।।
Delhi: চন্দননগরের রুশ বধূ ভিক্টোরিয়া বাসুকে খুঁজে পেতে আগেই লুকআউট নোটিস জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার তাঁকে দ্রুত খুঁজে বের করতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াল শীর্ষ আদালত। আদালত সূত্রে খবর, বৈধ পথে এখনও দেশ ছাড়তে পারেনি ওই রাশিয়ান নাগরিক। শুক্রবার আদালতে এই তথ্য দিয়েছে কেন্দ্র। তাই যত দ্রুত সম্ভব ভিক্টোরিয়া বাসু ও তার চারবছরের ছেলেকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিলো আদালত।
সূত্রের খবর, নিখোঁজ রুশ মহিলাকে খুঁজে বের করতে কেন্দ্র এবং দিল্লি পুলিশের তরফে দেশজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল (ASG) ঐশ্বর্য ভাটি আদালতে জানান যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সারা দেশের সমস্ত সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকদের কাছে 'লুক আউট নোটিশ' এবং 'হিউ অ্যান্ড ক্রাই নোটিশ' জারি করেছে। এই নোটিশের মাধ্যমে নিখোঁজ মহিলাকে দ্রুত খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও জানা গিয়েছে, নিখোঁজ রুশ মহিলার সন্ধানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছে রাশিয়ান দূতাবাস। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানিতে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (ASG) ঐশ্বর্য ভাটি আদালতকে এই তথ্য জানান। এই মামলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে যে, নিখোঁজ মহিলার বাবা রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি (FSB)-এর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্তা। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ। বউও গুপ্তচর হতে পারে! সেই সন্দেহে আদালতের দ্বারস্থ হন চন্দননগরের বাসু পরিবার।
নিখোঁজ রুশ মহিলা বিষয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, গত ৫ জুলাই তিনি নিজেই দিল্লিতে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাসে গিয়ে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছিলেন। তবে দূতাবাসের তরফে তাঁকে এই বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেয় বলে খবর। এই তথ্য জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পাঁচ দিন পর, গত ১০ জুলাই নিখোঁজ মহিলার মা দূতাবাসে যোগাযোগ করে জানান যে, তাঁর মেয়ে নিখোঁজ হয়ে গেছে। তাঁকেও একইভাবে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
রুশ স্ত্রী ও সন্তানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দিল্লিতে। স্বামী সৈকত বাসু অভিযোগ করেছেন, তাঁর বিদেশি স্ত্রী, যার সঙ্গে দিল্লির সাকেত পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। তাঁকে চলতি মাসের শুরুর দিকে লাগেজ নিয়ে রুশ দূতাবাসের পিছনের গেট দিয়ে গোপনে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। সৈকতের দাবি, দূতাবাসের এক কর্তা তার সঙ্গে ছিলেন। আর এরপরই আদালত জানায়, এই বিষয়ে ভারতীয় আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে রুশ দূতাবাস ওই মহিলাকে খুঁজে বের করতে পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্তের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছে। জানা গিয়েছে ওই মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাত্র ১৬৯ টাকা রয়েছে। ফলে কোনও ভাবেই রাশিয়ান ফ্লাইটে চড়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। যদিও শীর্ষ আদালতের দাবি, ফ্লাইটে উঠতে না পারলেও পায়ে হেঁটে রেলপথ, সড়কপথ, জাহাজে করেও পালাতে পারেন ওই মহিলা। তার জন্য দেশের সমস্ত বড় বড় রেলস্টেশন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জারি করা হয়েছে লুকআউট নোটিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ওই রাশিয়ান বধূকে দ্রুত খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও নিখোঁজ মহিলা ও শিশুর সন্ধানে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। দিল্লি এবং জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (NCR)-এর সমস্ত প্রবেশ ও প্রস্থান পথের সিসিটিভি ফুটেজ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি সূর্য কান্ত এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "তাদের (পুলিশকে) খুব দ্রুত কিছু করতে হবে।" নিখোঁজ মহিলার পরিস্থিতি এবং শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে তিনি উদ্বেগ জানান। এই নির্দেশ জারির পর সুপ্রিম কোর্ট আগামী সোমবার, ২১ জুলাই মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ এবং সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষার মাধ্যমে নিখোঁজ মা ও শিশুর অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


