সংক্ষিপ্ত

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, সম্ভবত চলতি মাস থেকেই টাকা দেওয়া শুরু হবে। অপরদিকে, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বাংলায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়া হয়েছে। 

আসন্ন বছরে পঞ্চায়েত ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ও গ্রাম সড়ক যোজনার খাতে ফের টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিল কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, সম্ভবত চলতি মাস থেকেই টাকা দেওয়া শুরু হবে। অপরদিকে, রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে, বাংলায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়া হয়েছে। আবাস ও গ্রাম সড়ক যোজনার নাম বদলের ভুল শুধরে নেওয়া হয়েছে।

১৮ নভেম্বর শুক্রবার, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে চিঠি দিয়ে গ্রাম সড়ক যোজনায় প্রায় ৮৫৭ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতির প্রকল্প মঞ্জুর করেছে। যার আনুমানিক খরচ, প্রায় ৫৮৪ কোটি টাকা। কেন্দ্র সরকার দেবে প্রায় ৩৪৩ কোটি টাকা।

চলতি সপ্তাহে বেলপাহাড়ির মঞ্চ থেকে কেন্দ্র সরকারের উদ্দেশে একশো দিনের কাজ, গ্রামের রাস্তা ও আবাস যোজনার জন্য বকেয়া না দিলে রাজ্যের পক্ষ থেকে জিএসটি না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যসচিব চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সমস্ত নিয়ম মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীও এবিষয়ে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে স্বয়ং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের দাবি, ১০০ দিনের কাজে প্রায় ৬ হাজার কোটি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রায় ৯ হাজার কোটি এবং গ্রাম সড়ক যোজনায় ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা বাকি রেখেছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, একশো দিনের কাজে গরমিল হলে পশ্চিমবঙ্গের মতো যে কোনও রাজ্যেই কেন্দ্রের অর্থ পাঠানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছিল যে, একশো দিনের কাজ একটা বৃহৎ প্রকল্প, এত বড় কাজে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। ১৫টি জেলায় তদন্ত কমিটি গিয়ে আর্থিক নয়ছয় খুঁজে পেয়েছিল। রাজ্য সরকার সেটিকে সামান্য অঙ্ক বলে দাবি করলেও কমিটির মত, বাস্তবে আর্থিক গরমিল রয়েছে আরও বেশি অঙ্কে। বঙ্গ সরকারকে এজন্য কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ও গ্রাম সড়ক যোজনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থ মঞ্জুর করা হলেও বঙ্গ প্রশাসন ওই প্রকল্পগুলির নাম বদলে ‘প্রধানমন্ত্রী’-র জায়গায় ‘বাংলা’ করে দিয়েছিল। যেহেতু ওই প্রকল্পগুলিতে রাজ্যও অর্থ দিচ্ছে। কিন্তু, কেন্দ্র সরকারের দাবি ছিল, যেহেতু প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ, তার ভাগাভাগি এবং নাম সহ সমস্ত বিষয়সূচি একেবারে প্রস্তুতির সময় থেকেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল, তাই কার্যকর হওয়ার পরে তা বদল করা চলবে না। এই বিষয়েই সম্প্রতি বাংলার মুখ্যসচিব কেন্দ্রকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে, নাম বদলের ‘ভুল’ সংশোধন করা হয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রীও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এবিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রকের প্রধান দেবেন্দ্র কুমার রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন সচিবকে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের জন্য ৫৮৪.৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প মঞ্জুর হয়েছে।

২০২৩-এর ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিল মাস নাগাদ বাংলার পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। শাসকদল তৃণমূল নির্বাচনের আগেই গ্রামোন্নয়নের তিনটি প্রকল্পের অর্থ আসার জন্য আশাবাদী ছিল। অপরদিকে, মোদীর সরকারের প্রকল্পের টাকা ঢুকছে না বলে প্রচারিত হলে, বিজেপির ক্ষেত্রেও সেটি খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে, এই দুই দিক বিচার করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক-বিরোধী দুই পক্ষেরই আদতে লাভ হল এবং বাংলার মানুষও সর্বোপরি উপকৃত হলেন বলে মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন-
চলতি বছরে ডিসেম্বরের শুরুতেই চালু হচ্ছে নতুন সিম কার্ডের নিয়ম, এক নজরে জেনে নিন নির্দেশিকা
বারাণসীর সঙ্গে তামিলনাড়ুর যোগ, 'এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত'-এর লক্ষ্যে কাশী তামিল সঙ্গমে নরেন্দ্র মোদী
মেরামতির কাজের দরুন ফের রেল পরিষেবায় ব্যাঘাত, খড়গপুর থেকেও বাতিল হবে একাধিক লোকাল ট্রেন