সংক্ষিপ্ত
জ্যোতিষ স্বামী অমরত্ব পাবেন বলে, তাঁরই ইচ্ছেতে স্বামীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার অভিযোগ উঠল চেন্নাইয়ের (Chennai) পেরুমবকমের (Perumbakam) এক ৫৫ বছর বয়সী প্রৌঢ়ার বিরুদ্ধে। তাঁদের মেয়েই এই ঘটনার কথা জানায় পুলিশকে।
স্বামীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার অভিযোগ উঠল চেন্নাইয়ের (Chennai) পেরুমবকমের (Perumbakam) এক ৫৫ বছর বয়সী প্রৌঢ়ার বিরুদ্ধে। তবে মহিলার দাবি স্বামীর ইচ্ছানুসারেই তাঁকে জীবন্ত কবর দিয়েছিলেন তিনি। স্বামী বলেছিলেন তাঁকে জীবন্ত কবর দিলে মৃত্যুর পরে তিনি অমরত্ব পাবেন। তাঁদের মেয়েই এই ঘটনার কথা জানায় পুলিশকে।
জানা গিয়েছে মৃত ওই ব্যক্তির নাম নাগরাজ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তামিলনাড়ুর বেশ কয়েকটি মন্দির ভ্রমণের পরই তিনি বলতে শুরু করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি ঈশ্বরের যোগাযোগ হয়েছে। নিজেকে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। বাড়ির পিছনের উঠোনে একটি ছোট মন্দিরও তৈরি করেছিলেন। সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসতেন তাঁর কাছ থেকে ভবিষ্যদ্বাণী শোনবার জন্য। এভাবেই চলছিল।
তাঁদের মেয়ে একজন তথ্য প্রযুক্তি কর্মী। প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবারও তিনি অফিসে গিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় সব স্বাভাবিকই ছিল। কিন্ত এসে থেকে বাবাকে দেখতে পাননি তিনি। মাকে জিজ্ঞেস করায়, তিনি কিছু জানাতে চাননি। মাঝে আরও একটা দিন কেটে যাওয়ার পর, উদ্বেগ বাড়ে মেয়ের। শনিবার, তিনি মাকে চেপে ধরেন। চাপের মুখে তিনি জানান, নাগরাজকে, তাঁর ইচ্ছা অনুসারেই জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি অমরত্ব পেতে পারেন।
এরপরই পুলিশকে খবর দেন নাগরাজের মেয়ে। পুলিশ এসে আরডিও-র উপস্থিতিতে কবর খুঁড়ে নারাজের মৃতদেহ বের করে। দেহটি, পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে। পেরুমবকমের এসএইচও জানিয়েছেন, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলে জানা যাবে, নাগরাজকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল, নাকি সমাধীস্থ করার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
নাগরাজের স্ত্রী প্রৌঢ়া লক্ষ্মী অবশ্য জানিয়েছেন, এই ঘটনার সূত্রপাত হয়, গত মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর তারিখে। ওইদিন নাগরাজ বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন। লক্ষ্মীর দাবি, এরপরই তাঁকে ডেকে নাগরাজ বলেছিলেন, তাঁর সময় হয়ে এসেছে। তাঁকে জীবন্ত কবর দিতে হবে। তাহলে তিনি মৃত্যুর পর অমর হতে পারবেন। এরপর, বৃহস্পতিবার আচমকা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন নাগরাজ। সেই সময় লক্ষ্মী দুইজন দিনমজুরকে ডেকে জানান। তাঁদেরকে বলেন জলের ট্যাঙ্ক তৈরির জন্য একটা বড় গর্ত খুঁড়তে হবে। শ্রমিকরা সেই গর্ত খুঁড়ে দিয়ে গেলে, অচেনত অবস্থায় নাগরাজকে কবর দিয়েছিলেন লক্ষ্মী।
এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় এলাকায় দারুণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ময়নাতদন্তের ফলে যদি দেখা যায়, জীবন্ত অবস্থাতেই নাগরাজকে কবর দিয়েছিলেন লক্ষ্মী, সেই ক্ষেত্রে স্বামীর শেষ ইচ্ছা রক্ষার বড় মূল্য দিতে হতে পারে তাঁকে।