সংক্ষিপ্ত
- লাদাখে ভারত-চিন সংঘাতের আবহ
- এর মাঝেই লাল ফৌজের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ
- ৫ ভারতীয় নাগরিককে অপহরণের অভিযোগ চিনা সেনার বিরুদ্ধে
- ট্যুইটে এমনই অভিযোগ কংগ্রেস বিধায়কের
গত কয়েকদিন হল চুসুল সেক্টরে উল্লেখজনক ভাবে সেনা সমাবেশ বাড়াতে শুরু করেছে চিন। হ্রদের দক্ষিণে মলডোর কাছে অতিরিক্ত ট্যাঙ্কবাহিনী মোতায়েন করেছে তারা। বেড়ে গিয়েছে সাঁজোয়া গাড়ির আনাগোনা, পদাতিক সেনার সংখ্যা। পাল্টা জবাবে রেজাং লা, রেচিন লা-সহ স্প্যানগুর গ্যাপ এলাকায় স্পর্শকাতর উঁচু স্থানগুলি দখল করে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে ভারতও। এককথায় লাদাখ সীমান্তে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে দু’দেশের সেনা। এই অবস্থায় চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেংহের সঙ্গে মস্কোয়য় বৈঠক করেছেন রাজনাথ সিং। কিন্তু, ভারত-চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি যে এই আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে মিটিয়ে ফেলা যাবে এমনটা ভাবছেন না কেউই। তার পরেও এই বৈঠক যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আর এই আবহেই চিনা সেনার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুললেন এক কংগ্রেস বিধায়ক। তিনি অরুণাচল প্রদেশে পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে অপহরণের অভিযোগ এনেছেন চিনা সেনার বিরুদ্ধে।
আপার সুবানসিরি জেলার নাচোয় জঙ্গলে শুক্রবার শিকার করতে যাওয়া পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে লাল ফৌজ অপহরণ করে বলে ট্যুইটে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিনং ইরিংয়ের। এই ব্যাপারে কেন্দ্রকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে হবে এবং ওই পাঁচ জনকে উদ্ধার করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিধায়ক ইরিং বলেছেন, লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চিনের মধ্যে টানাপোড়েন চলেছে। এজন্য ভারতের নজর হঠাতে চিন অরুণাচল সীমান্তে এমন কাজ করছে। চিন এখন অরুণাচলের ওপর নজর দিয়েছে। এখন চিনকে কড়া জবাব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কয়েক মাস আগে এমনই ঘটনা ঘটেছিল। যদিও কিছুদিন পর অপহৃতকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। যদিও এনিয়ে সরকারি স্তরে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এদিকে গত কয়েকদিন হল ইন্দো-চিন সীমান্তেও সেনা বাড়াতে শুরু করল ভারত। লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। সেই পরিস্থিতি মাথায় রেখেই চিনের সঙ্গে সমস্ত সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে। অরুণাচলে চিন সীমান্ত সংলগ্ন আনজ জেলায় ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে পূর্ব সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে জানান হচ্ছে প্রশাসনিক ভাবে।
লাদাখের পরিস্থিতির সঙ্গে সেখানে সেনা বাড়ানোর কোনও যোগ নেই বলে সাফ জানিয়েছেন আনজ-র জেলাশাসক আয়ুষী সুদান।
অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চিনের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বিরোধ রয়েছে ভারতের। অরুণাচলকে দক্ষিণ তিব্বত বলে দাবি করে চিন। অরুণাচলকে কেন্দ্র করেই ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধে বাধে। তাই গত জুন মাসে গালওয়ানে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে, অরুণাচল নিয়েও সতর্ক হয়ে পড়ে কেন্দ্র। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল কর্নেল হর্ষবর্ধন পান্ডে জানিয়েছেন, নিয়মিত সেনার ইউনিট পরিবর্তন হয়। এ বারও তাই হয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।