সংক্ষিপ্ত
হরিয়ানার পঞ্চকুলার বাসিন্দা ছিল লিদার। জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলে কমিশন পেয়েছিলেন। তার আগে তিনি দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের কমান্ড ছিলেন।
তামিলনাড়ু চপার দুর্ঘটনায় নিহত ভারতের অন্যতম সাহসী ব্রিগেডিয়ার লাখিন্দর সিং লিদার(Brigadier Lakhwinder Singh Lidder )। স্ত্রী ও মাত্র ১৬ বছরের কন্যা আসানাকে রেখে তিনি প্রয়াত হন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু থেমে গেল বেশ কিছু পরিকল্পনা। সেনা সূত্রের খবর আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মেজর জেনারেল হিসেবে তাঁর পদোন্নতি হওয়ার কথা ছিল। তিনি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াতের (CDS Bipin Rawat) প্রধান সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। কথা ছিল ডিভিশন অফিসার হিসেবে খুব তাড়াতাড়ি দায়িত্ব নেবেন। সেই কারণেই রাওয়াতের সঙ্গে আর খুব বেশি দিন তাঁকে কাজ করতে হবে না- বলেও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
হরিয়ানার পঞ্চকুলার বাসিন্দা ছিল লিদার। জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলে কমিশন পেয়েছিলেন। তার আগে তিনি দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের কমান্ড ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার লিদার কাজাখস্তানে ভারতের প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে ছিলেন। সন্ত্রাসবাদী বিশেষজ্ঞ হিসেবে ভারতীয় সেনা মহলে তাঁর বিশেষ পরিচিতি ছিল। তিনি সেনা পদক ও বিশেষ সেবা পদক পেয়েছিলেন।
পঞ্চকুলার সেক্টরে ১২এর৩৫৭ নম্বর হাউসে লাখিন্দর লিদারের বাড়ি। কর্ণেল ভূপিন্দর সিং জানিয়েছেন, গত ২০ বছর ধরে তাঁরা চেনেন লিদারকে একজন বড় মাপের সেনা অফিসার ছিলেন তিনি। একাধিকবার প্রতিকূল এলাকায় ব্যাটালিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। রাষ্ট্র সংঘের মিশনের পাশাপাশি দূতাবাসের মিশনগুলিতেও দাপটের সঙ্গে তিনি কাজ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গোটা দেশের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে বলেও মনে করেন ভূপিন্দর সিং। তিনি আরও বলেছেন ২০ বছরের এক বন্ধু তিনি হারালেন।
ভূপিন্দর সিং আরও জানিয়েছেন নিদারের পঞ্চকুলার বাড়িতে এখন আর কেউ থাকেন না। তবে লিদার মাঝে মাঝে সেখানে আসতেন। গত দেড় মাস আগে শেষবার নিজের বাড়িতে এসেছিলেন। সেই সময় তিনি তাঁরা চুটিয়ে গল্প করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন। সেইসময়ই লিদার জানিয়েছেন তাঁকে মেজর জেনারেল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেকোনও দিনই সেটি ঘোষণা করা হবে। তার আগেই তাঁর মৃত্যু গোটা পরিবারের কাছে একটি বড় ধাক্কা বলেও মনে করেন তিনি।
বিজেপি সাংসদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার লিদার ছিলেনএকজন উজ্জ্বল ও সাহসী অফিসার। আরএক সেনা কর্তার কথায় দুর্ঘটনার মাত্র তিন দিন আগে লিদার গুরুগ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী গনিকা ও তাঁর মেয়ে আসানা। ক্যাপ্টেন অভিমণ্যুর বিয়ের অনুষ্ঠানে রীতিমত আসর জমিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ঘনিষ্টরা জানিয়েছেন অসম্ভব প্রতিকূল অবস্থাতেই তিনি অবিচল থাকতেন। প্রবল দুশ্চিন্তার মধ্যেই মুখে লেগে থাকত অমায়িক হাসি। সহকর্মীদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেই বিশ্বাস করতেন তিনি। তাঁর তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্দ ভারতীয় সেনা মহল। শুধু সেনা বাহিনীর মধ্যেই নিজের কাজকে সীমাবদ্ধ করে রাখেননি তিনি। কোভিড মহামারির সময়ে সমাজসেবী হিসেবেও তাঁকে দেখেছেন পরিচিতরা। একাধিক কোভিডে আক্রান্তদের শেষকৃত্যও তিনি করেছেন। সব কাজই ছিল তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জের।
Parliament: বিপিন রাওয়াতদের শ্রদ্ধা জানাতে দেওয়া হয়নি, ক্ষোভ কংগ্রেস-তৃণমূলের