সংসদের ১৯ দিনের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়ে গেছে, বড় বড় বিল পাস হয়েছে, কিন্তু দিল্লি-এনসিআর-এর বিষাক্ত দূষণ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ বিতর্ক হতে পারেনি। একিউআই গুরুতর, মানুষ সমস্যায়—তাহলে কি জনগণের নিঃশ্বাস সংসদের আলোচ্যসূচির বাইরে ছিল?
দূষণ নিয়ে সংসদে বিতর্ক: ১ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা সংসদের শীতকালীন অধিবেশন অবশেষে শেষ হয়েছে। এই সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হয়েছে, বিতর্ক হয়েছে, হট্টগোল হয়েছে, কিন্তু একটি প্রশ্ন ছিল যার দিকে সারা দেশের নজর ছিল—দিল্লি-এনসিআর-এর মারাত্মক বায়ু দূষণ নিয়ে সংসদে পূর্ণাঙ্গ বিতর্ক কেন হতে পারল না? যখন রাজধানীর বাতাস মানুষের নিঃশ্বাসের ওপর ভারী হয়ে উঠছিল, তখন সংসদের অগ্রাধিকারের তালিকায় এই বিষয়টি কেন পিছিয়ে পড়ল?
দিল্লি-এনসিআর দূষণ: সকলের উদ্বেগ, তবুও বিতর্ক নেই কেন?
পুরো অধিবেশন জুড়ে দিল্লি এবং আশেপাশের এলাকায় বাতাসের মান ক্রমাগত খারাপ ছিল। অনেক দিন ধরে একিউআই ‘খুব খারাপ’ এবং ‘গুরুতর’ বিভাগে রেকর্ড করা হয়েছে। শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থদের সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তা সত্ত্বেও, সংসদে এই বিষয়ে বিস্তারিত এবং ठोस আলোচনা হতে পারেনি। বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে কংগ্রেস সাংসদরা, লোকসভা ও রাজ্যসভায় বারবার দূষণের বিষয়টি তোলার চেষ্টা করলেও, প্রতিবারই হয় অধিবেশন স্থগিত হয়েছে অথবা বিতর্ক এগোতে পারেনি।
রাহুল গান্ধীর দাবির পরেও বিতর্ক অসমাপ্ত কেন?
গত সপ্তাহে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় আসে যখন রাহুল গান্ধী দিল্লির দূষণ নিয়ে অবিলম্বে আলোচনার দাবি করেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো, কেন্দ্রীয় সরকার সেই দাবি মেনেও নিয়েছিল। সরকার যখন প্রস্তুত ছিল, তখন বিতর্ক आखिर কেন হলো না? শেষ দিনে লোকসভার অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে যায় এবং দূষণ নিয়ে আলোচনা আবারও পিছিয়ে যায়।
অধিবেশন স্থগিত, দূষণ পরিস্থিতি একই
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে লোকসভায় দূষণ নিয়ে জবাব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অধিবেশন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বিরোধীদের হট্টগোলের মধ্যে সভা স্থগিত করা হয়। সেই সময় কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জি রাম জি বিল নিয়ে কথা বলছিলেন, যা পরে উভয় কক্ষ থেকে পাস হয়। এরই মধ্যে, দিল্লি-এনসিআর-এর মানুষ ক্রমাগত বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে থাকে।
একিউআই ৪০০ পার, তবুও সংসদে নীরবতা?
১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লির বাতাস ক্রমাগত অত্যন্ত খারাপ ছিল। অনেক এলাকায় একিউআই ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ঘন কুয়াশা এবং দূষণ মিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে। তা সত্ত্বেও, সংসদের অধিবেশন শেষ হয়ে গেলেও দূষণ নিয়ে কোনো ठोस আলোচনা হতে পারেনি।
দিল্লির বাতাস নিয়ে আবার কবে আলোচনা হবে?
এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে যে দিল্লি-এনসিআর দূষণ নিয়ে পরবর্তী বড় আলোচনা ২০২৬ সালের বাজেট অধিবেশনের আগে আর হবে না। ততদিন পর্যন্ত রাজধানীর মানুষ কোনো সংসদীয় হস্তক্ষেপ ছাড়াই এই বিষাক্ত বাতাসে জীবন কাটাতে বাধ্য থাকবে।
জনগণের নিঃশ্বাস কি সংসদের আলোচ্যসূচির বাইরে?
অধিবেশন শেষ হয়েছে, বিল পাস হয়েছে, কিন্তু দিল্লির বাতাস এখনও প্রশ্ন তুলছে—দূষণের মতো গুরুতর বিষয় কি সংসদের অগ্রাধিকার নয়? আর দিল্লি-এনসিআর-কে স্বস্তির জন্য কি আরও অপেক্ষা করতে হবে?


