অমিত শাহ নেহেরু বন্দে মাতরম এডিট: রাজ্যসভায় অমিত শাহ অভিযোগ করেছেন যে নেহেরু বন্দে মাতরম সম্পাদনা করেছিলেন এবং কংগ্রেস বছরের পর বছর ধরে কণ্ঠরোধ করেছে। শাহ বলেন, জাতীয় সঙ্গীতের সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়। এই মন্তব্যে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে।

নয়াদিল্লি। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটি বয়ান ফের দেশজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। শাহ বলেছেন যে পন্ডিত জহওরলাল নেহেরু বন্দে মাতরমের কিছু অংশ সম্পাদনা করেছিলেন এবং এই ভুল পদক্ষেপই দেশকে বিভাজনের দিকে নিয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন যে কংগ্রেস বহু বছর ধরে এই বিষয়ে দেশের কণ্ঠরোধ করে রেখেছিল এবং বন্দে মাতরমের গুরুত্বকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করেছিল। শাহ স্পষ্ট বলেন যে বন্দে মাতরম শুধু একটি গান নয়, বরং দেশের আত্মা এবং বলিদানের প্রতীক। তাঁর এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক পরিবেশ হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, এবং এখন প্রশ্ন উঠছে - ইতিহাসে কি এমন কিছু লুকানো ছিল যা আজ সামনে আনা হচ্ছে?

নেহেরু কি সত্যিই বন্দে মাতরম পরিবর্তন করেছিলেন? এই প্রশ্ন হঠাৎ কেন?

অমিত শাহ রাজ্যসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় বলেন যে কিছু লোক প্রশ্ন তুলছিলেন যে বন্দে মাতরম নিয়ে আলোচনা কেন হচ্ছে। তিনি বলেন, এই আলোচনা সেই সময়েও জরুরি ছিল, আজও জরুরি, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, কারণ এটি জাতির পরিচয়ের সঙ্গে জড়িত একটি বিষয়। শাহের বক্তব্য ছিল যে নেহেরুর সিদ্ধান্ত বন্দে মাতরমের মূল রূপকে পরিবর্তন করেছিল এবং এর গুরুত্বকে দুর্বল করে দিয়েছিল। এই পরিবর্তন দীর্ঘদিন ধরে মানুষের জানার বাইরে ছিল। তিনি দাবি করেন যে এই সিদ্ধান্ত শুধু গানের শব্দই পরিবর্তন করেনি, বরং ইতিহাসের গতিপথও বদলে দিয়েছে।

Scroll to load tweet…

কংগ্রেস কি দশকের পর দশক ধরে দেশের কণ্ঠরোধ করেছে? শাহের গুরুতর অভিযোগ

অমিত শাহ বলেন যে কংগ্রেস শাসনামলে এই বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলা কঠিন ছিল। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস বছরের পর বছর ধরে বন্দে মাতরম নিয়ে প্রশ্ন তোলা ব্যক্তিদের চুপ করিয়ে দিয়েছে। শাহের মতে, বন্দে মাতরম সেই স্লোগান যা একজন জওয়ানের শেষ নিঃশ্বাসেও বেরিয়ে আসে। তিনি বলেন, এই গানটিকে कभीও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত নয়। কিন্তু, কংগ্রেস এটিকে বিতর্কিত করে এর মহিমাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।

এই বিষয়টি কি পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত? নাকি আরও বড় কিছু লুকিয়ে আছে?

কিছু বিরোধী নেতা বলেছেন যে এই বিতর্কটি আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য তোলা হচ্ছে। কিন্তু শাহ এই দাবি খারিজ করে বলেন যে বন্দে মাতরমের শিকড় বাংলায় থাকলেও এর গুরুত্ব সারা দেশে রয়েছে। তিনি বলেন, এটিকে শুধুমাত্র আঞ্চলিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা ভুল এবং এটি এর মর্যাদাকে আঘাত করে।

দেশভাগ কি এড়ানো যেত? শাহের সবচেয়ে বড় এবং রহস্যময় দাবি

অমিত শাহের বক্তব্যের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশটি ছিল যে যদি নেহেরু বন্দে মাতরম পরিবর্তন না করতেন, তাহলে शायद ভারতের বিভাজন হতো না। এই দাবি শুধু রাজনৈতিকই নয়, ইতিহাসের অনেক পুরোনো প্রশ্নকে জাগিয়ে তুলেছে।

বন্দে মাতরম: শুধু গান নয়, দেশপ্রেমের সবচেয়ে পুরোনো স্লোগান

শাহ তাঁর ভাষণে বলেন যে বন্দে মাতরম কোনো সাধারণ গান নয়। এটি সেই শব্দ যা একজন সেনা সীমান্তে গুলি লাগার আগেও বলে। তিনি এই গানটিকে ভারতের আত্মা বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে এই আলোচনা আমাদের জাতীয় চেতনার জন্য জরুরি।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া: সরকার কি ইতিহাস পুনরায় লিখছে?

কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো শাহের বয়ানকে পুরোপুরি খারিজ করেছে। তাদের বক্তব্য, সরকার ইতিহাসকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে এবং একে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, বিজেপির বক্তব্য হলো, সত্য এবার সামনে আসা উচিত, তা যতই পুরোনো হোক না কেন। অমিত শাহের বক্তব্য বন্দে মাতরমকে আরও একবার দেশব্যাপী আলোচনার বিষয় করে তুলেছে। নেহেরুর ভূমিকা, কংগ্রেসের নীতি, এবং বন্দে মাতরমের আসল কাহিনী - এই সব প্রশ্নের উপর আগামী দিনে আরও নতুন চর্চার বিষয় সামনে নিয়ে আসতে চলেছে।