সংক্ষিপ্ত

শহরের বায়ু দূষণের মাত্রার বেড়েগেছে এই বিষয়ে মাত্র ১৭ বছর বয়সী ছাত্রা ও দিল্লির বাসিন্দা আদিত্য দুবে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।

করোনাভাইরাসের কারণে দেশ তো বটেই গোটা বিশ্বই লকডাউন (Lockdown) দেখেছে। কিন্তু এবার দূষণের (Pollution) কারণে লকডাউন দেখতে পারে দেশের জাতীয় রাজধানী দিল্লি। শনিবার দিল্লিতে বায়ু দূষণ (Delhi Air Pollution) সংক্রান্ত একটি আবেদনের শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকেই টেনে এনেছিলেন। দেশের শীর্ষ আদালত বায়ুর মান খারাপের জন্য দেশের জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে দু-দিনের লকডাউন আরোপ করা যায় কিনা তাই জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। 

শহরের বায়ু দূষণের মাত্রার বেড়েগেছে এই বিষয়ে মাত্র ১৭ বছর বয়সী ছাত্রা ও দিল্লির বাসিন্দা আদিত্য দুবে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। সেটাই উঠেছিল প্রধানবাচিরপতি এনভি রমনা, বিচারপতি ডিএয়াই টন্দ্রচূড়, বিচারপরি সূর্যকান্তের একটি বিশেষ বেঞ্চে। এই মামলার শুনানির সময় প্রধানবিচারপতি রমনা বলেন, 'আমরা দেখছি পরিস্থিতি কতটা খারাপ। বাড়ির ভিতরেও আমাদারে মুখোশ পরে থাকতে হচ্ছে।' তিনি আরও বলেন দিল্লির বায়ুর দূষণের মাত্রা কমানোর জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে - কেন্দ্র রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করারও করা বলেছেন। পাশাপাশি আদালত বলেছে প্রয়োজনে দুই থেকে তিন দিন লকডাউন করা যায় কিনা? এই নিয়ে প্রশাসন কী ভাবছে তাও জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে বায়ু দূষণ নিয়ে আদালত দীর্ঘমেয়াদী সমন্যা সমাধান চাইছে। 

Manipur Attack: মণিপুরে সেনা কনভয় উড়িয়ে দিল জঙ্গিরা, স্ত্রী-পুত্রসহ সেনা কর্তা নিহত

দিল্লিতে সব স্কুল খুলে গেছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, 'সব স্কুল খুলে দেওয়া হচ্ছে। এই বায়ু দূষণের মধ্যেই পড়ুয়ারা স্কুলে যাচ্ছে। যা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উদ্বেগজনক।' অপর বিচারপতি সূর্ষকান্ত দীপাবলিতে বাজি পোড়ানোর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন সেই সময় কী করছিল পুলিশ। পাশাপাশি যানবাহন থেকে দূষণ নিয়েই নিয়ে উষ্মার প্রকাশ করেন। 

Marriage Registration: ৪০ বছর আগে সাতপাকে বাঁধা, কিন্তু বিয়ে নিবন্ধন করাতে গিয়ে কালঘাম ছুটল দম্পতির

যদিও এদিন আদালতে সওয়াল জবাবের সময় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ সওয়াল করেন তুষার মেহতা। তিনি  দিল্লির পার্শ্ববর্তী এলাকায় কয়েক দিন ধরে খড় পোড়ানোর আধিক্যের বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের খড় ও বিচালি পোড়ানো বন্ধ করতে বলা যেতে পারে। তাতে দিল্লির পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হবে। তুষার মেহতার এই মন্তব্য ক্ষুদ্ধ প্রধানবিচারপতি বলেন আমনি গোটা বিষয়টি এমন ভাবে তুলে ধরছেন যাতে মনে হচ্ছে এই পরিস্থিতির জন্য কৃষকরাই দায়ি। বিচারপতি সূর্ষকান্ত বলেন এখন কৃষকদের নিশানা করা একটা ফ্যাশান হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ করার পরেও গত ৫-৬ দিন কী হয়েছে তা সকলেই দেখেছে। দীপাবলিতে দিল্লিতে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু  সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই প্রবল বাজি পোড়ানো হয়েছিল দিল্লি ও আশপাশের এলাকা। পাশাপাশি এই সময় কৃষকরা খড় ও বিচালি পোড়ায়। যাও দূষণের অন্যতম একটি কারণ। 

Pentagon Report: ধীর গতিতে চিনা আগ্রাসন ভারতীয় সীমান্তে, পেন্টাগনের রিপোর্ট নিয়ে মুখ খুলল দিল্লি

দিল্লি সরকারও দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানতে চায় আদালত। দিল্লি সরকারের পক্ষে রাহুল মেহরাও খড় পোড়ানোকেই দায়ি করেছেন দূষণের জন্য। তাই এই পরিস্থিতিতে দিল্লি সরকার সমাধানের জন্য কী করবে তাও জানতে চেয়েছেন তিনি।  উত্তরে রাহুল মেহরা জানিয়েছেন পুসা ইনস্টিটুইটের বিজ্ঞানীরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। 

তবে শীর্ষ আদালত বলেছে, দূষণের সমস্যা নিয়ে কোনও রাজনীতি করা যাবে না। এটি সকলেরও সমস্যা। আদালত যে শেষ পর্যন্ত দূষণ কমাতে চায় তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানবিচারপতি। প্রয়োজনে প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আগামী চার পাচ দিনের মধ্যে দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি যাতে কিছুটা উন্নত হয় তার দিকেও জোর দেয় আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি সোমবার সকালে।