সংক্ষিপ্ত
চাঁদের মাটিতে রাত চলাকালীন যেভাবে তাপমাত্রা নেমে যায়, সেই আবহাওয়া এখানে তৈরি করে পরীক্ষা করা হয়েছিল। বিশেষ করে রোভার প্রজ্ঞানকে পুরোপুরি পরীক্ষা করা হয়।
এশিয়ানেট নিউজ ডায়ালগসে এশিয়ানেট নিউজের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান রাজেশ কালরার মুখোমুখি ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। এশিয়ানেট নিউজের কাছে তুলে ধরেন একাধিক অজানা ও আশার বার্তা। তার আগে তিনি জানান রাত শেষে চাঁদের মাটিতে যখন সকাল হবে, তখন কী আদৌও ঘুম ভাঙবে বিক্রম ও প্রজ্ঞানের। সোমনাথ বলেন 'আমরা আশা রাখি পজেটিভ কিছু হবে। বিক্রম ও প্রজ্ঞান ফের কাজ করা শুরু করবে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে এই দুটি যন্ত্রই যেন কাজ করে। যদি এটা হয়, ইসরো আবার ইতিহাস তৈরি করবে। কারণ চাঁদের মাটিতে ১৪ দিন ধরে রাত কাটানোর পরে কোনও মহাকাশযান ফের কাজ আজ পর্যন্ত শুরু করেনি।' তিনি আরও বলেন চন্দ্রযানে এখনও ৯০ কেজি জ্বালানি রয়েছে. তাই বিজ্ঞানীদের আশা আরও চমকপ্রদ তথ্য পাঠাবে বিক্রম ও প্রজ্ঞান।
তিনি আরও বলেন চাঁদের মাটিতে রাত চলাকালীন যেভাবে তাপমাত্রা নেমে যায়, সেই আবহাওয়া এখানে তৈরি করে পরীক্ষা করা হয়েছিল। বিশেষ করে রোভার প্রজ্ঞানকে পুরোপুরি পরীক্ষা করা হয়। তবে বিক্রম পুরোপুরি এই আবহাওয়ায় পরীক্ষিত নয়। পরীক্ষায় পাশ করেছিল প্রজ্ঞান।
বিশেষ সাক্ষাতকারে সোমনাথ জানান চাঁদের মাটি থেকে ছবি পৃথিবীতে আসতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। আসলে এটা সিগন্যাল রিসিভ, রেসপন্স ও ফিডব্যাকের ব্যাপার। এটা একটা চ্যানেল। তাই সিগন্যাল রিসিভ হওয়া কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার হলেও পুরো প্রক্রিয়া বা একটা ছবি পৃথিবীতে আসতে ঘন্টাখানেক সময় লেগে যায়।
৮০ শতাংশ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে চন্দ্রযান ৩, তাই এত কম খরচে প্রকল্প সফল করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরোর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন এবার নজর আদিত্য এল-১ -এর দিকে। আদিত্য এখন পৃথিবীর টান কাটিয়ে ফেলেছে। ১.৫ মিলিয়ন কিমি দূরে রয়েছে। এখনও সেভাবে কিছু বলার মতো সময় আসেনি। পর্যবেক্ষণে রয়েছে আদিত্য।
এদিন সোমনাথ কথা বলেন গগনযান প্রকল্প সম্পর্কেও। তিনি বলেন অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া এই প্রকল্পটিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যে এখানে মহাকাশচারীরা থাকবেন, তাই অত্যন্ত সাবধানে এটিকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কারণ তাঁদের নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই মিশন ২০২৫ সালের আগে সম্ভব নয়। ক্রু নিয়ে পরীক্ষা পরের মাসে হবে, অক্টোবরের ২৬ তারিখ।
ইসরো চেয়ারম্যান বলেন প্রজ্ঞান ও বিক্রম এমন কোনও তথ্য পাঠিয়েছে, যা এখনও আমাদের অজানা। এরমধ্যে কিছু মজার তথ্য রয়েছে। চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের পর বিক্রমে থাকা একটি পেলোড যা তাপমাত্রা মাপবে, সঙ্গে চাঁদ পৃষ্ঠের কিছু তথ্যও দেবে, দেখা গেল, মাত্র ১০ মিটার মাটির নীচে নামার পরেই তাপমাত্রা আচমকা নেমে গেল। শুধু তাই নয়, আমরা ভেবেছিলাম চাঁদের মাটিতে নামার পর প্রচুর ধুলো উড়বে, কিন্তু সেই পরিমাণ ধুলো দেখা যায়নি।
ইসরোর পরবর্তী প্রকল্প নিয়েও কথা বলেন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন শুরুতেই রয়েছে এক্সপোস্যাট নামের একটি স্যাটেলাইট, যা ব্ল্যাক হোল নিয়ে গবেষণা করবে। যদি কোনও নক্ষত্র ব্ল্যাক হোলের কাছে আসে, তখন কী হবে, তা তুলে ধরবে। তৈরি করা হয়েছে অটোমোবাইলের স্টেশন। এগুলি গগনযান প্রকল্পে সাহায্য করবে।