সংক্ষিপ্ত

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দারুণ অভাব ফেস মাস্ক-এর

দোকানে দোকানে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে

এরমধ্যে যেন দৈত্যকূলে প্রহ্লাদ কেরলের একটি দোকান

ব্যবসার ক্ষতি করেও তারা মাত্র ২ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছে এই মুখোশ

 

করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধে টিকা আবিষ্কার করতে করতে এখনও দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগবে। এই অবস্থায় মানুষের হাতে রয়েছে মাত্র দু'টি অস্ত্র। মুখের জীবানুরোধী মুখোশ বা মাস্ক এবং হ্যান্ড সানাইটাইজার বা যে কোনও সাবান। আর কোভিড-১৯'এর হুমকি যত বাড়ছে ততই দোকানে দোকানে অভাব দেখা দিচ্ছে এই দুইয়ের। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ফেস মাস্ক-কে প্রয়োজনীয় পণ্য় হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও চাহিদা আর জোগানের বিশাল ফারাকে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি দামে বিকোচ্ছে এই ফেস মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

আরও পড়ুন - বাতিল সেক্স পার্টি থেকে চুমুহীন মিলন - করোনাভাইরাস থাবায় কাতর যৌনজীবন

এমনি সময়ে যে এন-৯৮ মাস্কের দাম থাকে ৯০ টাকার মতো, সেই মাস্কই এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। সরকার থেকে সসতর্ক করা হয়েছে, কেউ যদি অস্বাভাবিক বেশি দামে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েন, তাহলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শনিবার বিভিন্ন রাজ্যে পুলিশের তরফেও দোকানে দোকানে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু, তাতে কাজ হয়নি। দোকানিরা সাফ জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারেই যদি বেশি দামে মাস্ক বিক্রি হয়, তাহলে খুচরো বাজারে তার থেকে কম দামে তারা কীভাবে বিক্রি করবেন?

আরও পড়ুন - করোনা নিয়ে উদ্বেগে ইসলামিক স্টেট-ও, জঙ্গিদের জন্য জারি বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি

এরই মধ্যে যেন দৈত্যকূলে প্রহ্লাদ হয়ে দেখা দিয়েছে কেরলের কোচির এক ওষুধের দোকান। সবচেয়ে অভাবী হাসপাতাল এবং মেডিকেল টিমগুলিকে তারা মাত্র ২ টাকার বিনিময়ে মুখোশ সরবরাহ করছে। মাত্র দু'দিনেই দোকানটি ওই দামে ৫০০০টিরও বেশি মুখোশ বিক্রি করেছে। কোচিন সার্জিক্যালস নামে দোকানটির মালিকরা মুখোশ নির্মাতাদের কাছ থেকে প্রতিটি মুখোশ ১০ টাকা করে কিনেছেন। অর্থাৎ, মুখোশ প্রতি তাদের ৮ টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে।

আরও পড়ুন - ভাইরাসের ভয়ের মধ্যেই বিকোচ্ছে কেজি প্রতি ২০০০ টাকায়, খাবেন নাকি 'করোনা' মাছ

দোকানটি চালান থালসিম ও নাদিম নামে দুই ভাই। তাঁরা জানিয়েছেন, কম দামে মুখোশ বিক্রি করে যে লোকসান হচ্ছে তা নিয়ে তারা আদৌ উদ্বিগ্ন নন। এই বিপর্যয়ের মধ্যে তারা ব্যবসা নিয়ে ভাবছেনই না। কেরল এখন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল তাঁরাও তো এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, যখনই তাঁরা শুনেছিলেন যে, মুখোশের জোগানে ঘাটতি রয়েছে, বিশেষ করে হাসপাতালের কর্মীরাই মুখোশ পাচ্ছেন না, তখনই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের কাছে যেসব মুখোশ রয়েছে, তা তাঁরা অত্যন্ত কম দামে বিক্রি করবেন। দু'দিনের মধ্যেই তাঁদের সেই স্টক শেষ হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন - হ্যান্ড স্যানিটাইজার নয়, সাবানই করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র, কেন জানেন

কোভিড -১৯ রোগে ভারতে এখন পর্যন্ত ৮৫ জন আক্রান্ত। প্রাণ হারিয়েছেন দু'জন। শনিবার মহারাষ্ট্রে আরও এক করোনাভাইরাস আক্রান্ত বলে সন্দেহে থাকা ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কেরলেরই। দক্ষিণের এই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৯ জন রোগীর দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। শুক্রবারই কেন্দ্রীয় সরকার এই মুখোশ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার-কে আগামী ১০০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসাবে ঘোষণা করেছে।