সংক্ষিপ্ত
- দাবানলে জ্বলছে দেবভূমি উত্তরাখণ্ড
- সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছে ছবি ও ভিডিওতে
- এই খবর ভ্রান্ত বলে দাবি করছে উত্তরাখণ্ডের বনদফতর
- ভুয়ো খবর ভাইরাল হয়েছে ট্যুইট করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী
দেশে যখন বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ তখন একে একে আরও বিপদ এসে হাজির হচ্ছে। পূর্ব ভারতে আমফানের তাণ্ডবের পর উত্তর ও মধ্য ভারত জুড়ে পঙ্গপালের দাপাদাপি। একের পর এক প্রাকৃতিক বির্পযয়ে নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা দেশবাসীর। এর মাঝেই কয়েকদিন হল সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল। দাবি করা হচ্ছিল দাবানলের বিভৎস আগুনে জ্বলছে দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের বিস্তীর্ণ বনরাশি। তবে এই খবর পুরোপুরি ভ্রান্ত বলেই দাবি করা হচ্ছে উত্তরাখণ্ড সরকারের পক্ষ থেকে।
টানা ৪ দিন ধরে দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ি গিয়েছে উত্তরাখণ্ডের বনভূমি। নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৭১ হেক্টরেরও বেশি সবুজ। মারা পড়ছে একের পর এক বন্যপ্রাণ। এমন খবর ও ভিডিওতে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছিল। আমাজন ও ব্রাজিলের দাবানলের প্রসঙ্গও তুলে আনছিলেন অনেক নেটিজেন। তবে এই খবর পুরোটাই মিথ্যে বলে দাবি করছে উত্তরাখণ্ড বনদফতর। এই নিয়ে বুধবার রাতে একটি পোস্টও করা হয়েছে বনদফতরের পক্ষ থেকে। দাবি করা হয়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলি মিথ্যে বলে। জানান হয়, দেবভূমি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে । একটি গাছ বা বন্যপ্রাণীর গায়েও আঁচড় লাগেনি । আর যে ছবিগুলি সামনে আসছে সেগুলি পুরনো অথবা অন্য কোনও জায়গার বলে ট্যুইটারে দাবি করে উত্তরাখণ্ড বনদফতর। এই প্রসঙ্গে গুজবে কান দেওয়ার আবেদন জানান হয়।
বনদফতরের মত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীও দেবভূমিতে দাবানলের প্রসঙ্গে একই দাবি করেছেন। ট্যুইটারে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র রাওয়াত লেখেন, উত্তরাখণ্ড জ্বলছে বলে যে ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে তা অনেক পুরনো। ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। বরং গত বছরের তুলনায় এবার উত্তরাখণ্ডে দাবানলের হার কম। যেভাবে দাবানলের ভয়ঙ্কর রূপ দেখান হচ্ছে সেখাবে উত্তরাখণ্ড জ্বলছে না। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, চিলি ও এবং চিনে ২০১৬ ও ২০১৯ সালের দাবানলের ছবি আতঙ্ক তৈরি করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
উত্তরাখণ্ডের ৭১.০৫ শতাংশ অঞ্চলই বনাঞ্চল। অনেক দুর্লভ গাছ এখানে পাওয়া যায়। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের জঙ্গল সারা ভারতে যত প্রজাতির পাখি পাওয়া যায়, তার অর্ধেকের বেশি প্রজাতির বিচরণ ভূমি। এই অরণ্যের জীব বৈচিত্র্য বিশাল। এই জঙ্গল থেকে সারাবছর প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। রাহাড়ি রাজ্যের অর্থিনৈতিক প্রায় সমস্ত কার্যকলাপই চলে এই বনকে ঘিরেই। তাই এই অরণ্য পুড়লে পরিবেশ, জীব বৈচিত্র্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর রটেছিল, গত ৪ দিনে ৪৬টি দাবানল রেকর্ড করা হয়েছে উত্তরাখণ্ডে। উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে দাবানলের তেজও। দাবানলের কারণে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে কুমায়ুন অঞ্চলের জঙ্গলগুলির। কুমায়ুন ছাড়াও জ্বলছে নৈনিতাল, আলমোরা, পউরি গাড়ওয়াল, দেরাদুন ও তেহরি।