সংক্ষিপ্ত

মেয়েকে সসম্মানে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চান তিনি। কিন্তু মেয়ে যাতে মানসিক যন্ত্রণা না পায় তার জন্য রীতিমত অকালেই একটি উৎসবের আমেজ তৈরি করেন।

 

গার্হস্থ্য হিংসার ছবিটি ভয়ঙ্কর এই ভারতে। মেয়েরা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে প্রায়ই অত্যাচারিত হয়। কিন্তু তাদের দিক থেকে অধিকাংশ সময়ই মুখ ফিরিয়ে নেয় বাবা ও মা। কখনও সামাজিক কারণে, কখনও আবার আর্থিক কারণ। কিন্তু সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের এক বাবা যা করলেন তাই যেন আগামী দিনে নজির হয়ে থাকে ভারতে। এমন বাবা যদি এই দেশের মেয়েরা পেত তাহলে আর তাদের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগাতে হত না বিষ খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হত না। আবার পাত্রপক্ষও লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েদের ওপর অত্যাচার কমাত।

যাইহোক এবার আসি আসল ঘটনায়। গত ২৮ এপ্রিল ঝাড়খণ্ডের রাঁচির কৈলাসনগরের কুমহারতালির বাসিন্দা প্রেম গুপ্তা খুব ঝাঁকজমক করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। পাত্র রাঁচির সর্বেশ্বরী নগরের বাসিন্দা শচীন কুমার। তিনি আবার সরকারি কর্মী। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই প্রেম কুমারের মেয়ে পারিবারিক হিংসার শিকার। মেয়েকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন বাবা। বলেছিলেন ধৈর্য্য ধরলে সব কিছু ঠিকও হয়ে যেচে পারে। কিন্তু ৬ মাস কেটে যাওয়ার পরেও কিছুই ঠিক হয়নি। পাল্টা মেয়ের ওপর অত্যাচার বাড়তেই থাকে।

এই অবস্থায় ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে বাবার। মেয়েকে সসম্মানে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চান তিনি। কিন্তু মেয়ে যাতে মানসিক যন্ত্রণা না পায় তার জন্য রীতিমত অকালেই একটি উৎসবের আমেজ তৈরি করেন। মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ি ফেরাতে তিনি ব্যান্ডপার্টি আর প্রচুর আতসবাজি নিয়ে হাজির হয়ে যান। এই অবস্থায় প্রতিবেশীদের মুখ বন্ধ করতে আর শ্বশুরবাড়ির লোককে উচিৎ শিক্ষা দিতে ব্যান্ডাপর্টি বাজিয়ে বাজি পোড়াতে পোড়াতে মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে আনেন। তিনি এককথায় সকললেই জানিয়ে দেন তার মেয়ে একা নয়। তিনি ও তাঁর গোটা পরিবার নির্যাতিতা মেয়ের সঙ্গে রয়েছে।

প্রেম গুপ্তার মেয়ে সাক্ষী। তিনি যখনই বিয়ে ভেঙে বেরিয়ে আসান সিন্ধান্ত নেন তখন থেকেই প্রেম কুমার মেয়ের পাশি দাঁড়িয়ে ছিলেন। মেয়ের বিদায় যেমন তাঁর কাছে আনন্দের তেমনই মেয়ের ঘেরে ফেরাকেও একটি অনুষ্ঠানের রূপ দিতে চেয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনা জীবনের একটি অঙ্গে হিসেবেই মেয়ের কাছে তুলে ধরেছিলেন। এই ঘটনাই সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ভাইরাল হয়েছে।