সংক্ষিপ্ত

মহিলা প্রতিবেশীর বাড়ির প্রবেশপথে প্রস্রাব করার অভিযোগে, চেন্নাইয়ে (Chennai) গ্রেফতার অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি (ABVP) সংগঠনের প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি ডাক্তার সুব্বাইয়া শানমুগম (Dr Subbiah Shanmugam)। ঠিক কী ঘটেছিল ঘটনাটি? 
 

অদ্ভূত এক কারণে শনিবার গ্রেফতার হলেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি (ABVP) সংগঠনের প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি ডাক্তার সুব্বাইয়া শানমুগম (Dr Subbiah Shanmugam)। তাঁর বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে (Chennai) তাঁর এক মহিলা প্রতিবেশীর বাড়ির প্রবেশপথে প্রস্রাব করার এবং বাড়ির বাইরে আবর্জনা ফেলার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি ২০২০ সালের জুলাই মাসের হলেও, তার প্রায় দুই বছর পর গ্রেফতার করা হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (RSS) ছাত্র সংগঠনের এই নেতা। 

জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় ডাক্তার সুব্বাইয়া শানমুগম, কিলপাউক মেডিকেল কলেজের (Kilpauk Medical College) সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের (Department of Surgical Oncology) প্রধান ছিলেন। এক ৬০ বছর বয়সী বিধবা মহিলা প্রতিবেশীর সঙ্গে, গাড়ি পার্ক করা নিয়ে বিরোধ বেধেছিল প্রাক্তন এবিভিপি সভাপতির। অভিযোগ, এরপর যখন ওই মহিলা বাড়িতে একা ছিলেন, সেই সময় ডাক্তার সুব্বাইয়া শানমুগম তাঁর প্রবেশদ্বারের বাইরে আবর্জনা ফেলেছিলেন বলে অভিযোগ। এমনকী, সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে, সুব্বাইয়াকে ওই মহিলার বাড়ির দরজায় প্রস্রাব করতেও দেখা গিয়েছিল। যদিও, সুব্বাইয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, ভিডিওটিতে বিশেষ কারিকুরি করা হয়েছে। 

নির্যাতিতা মহিলা এবং তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আদমবাক্কাম পুলিশ (Adambakkam Police) সুব্বাইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তবে, অভিযোগ পাওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পরে পুলিশ এফআইআর নথিভুক্ত করেছিল বলে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি (Indian Penal Code) এবং তামিলনাড়ুর বিশেষ আইন অনুযায়ী মহিলাকে হেনস্থা করা-সহ, কোয়ারান্টাইন নিয়ম লঙ্ঘন, সম্পত্তির ক্ষতি করার মতো একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছিল। তবে, এই মামলা নথিভুক্ত হওয়ার কয়েক ঘন্টা পরই, নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন করা হয়। তারা বলেছিলেন, অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়ে ভবনের প্রতিবেশীদের পক্ষ থেকে তাদের উপর চাপ দেওয়া হয়েছে। 

সিসিটিভি ক্যামেরার সেই ফুটেজ -

তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল অভিযোগ থেকে অভিযোগকারীরা তাদের নাম প্রত্যাহার করে নিলেও, তাদের এই ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে।  কারণ, এই মামলার বিষয়ে ইতিমধ্যেই এফআইআর নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে। এরপরই বিষয়টি রাজনৈতিক রং নিয়েছিল। কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে (NSUI) ওই এবিভিপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়। তারা অভিযোগ করেছিল, ডাক্তার শানমুগমের রাজনৈতিক যোগের কারণেই পুলিশ এই মামলার তদন্তে অনিচ্ছা দেখাচ্ছে।

রাজ্যে, ক্ষমতা বদলের পর, শেষ পর্যন্ত এই প্রাক্তন এবিভিপি নেতাকে গ্রেফতার করা হল। এই বিষয়ে সংগঠনের বর্তমান জাতীয় সম্পাদক মুথু রামালিঙ্গম (Muthu Ramalingam) টুইট করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) ডিএমকে (DMK) সরকার, তাঁকে বিরক্ত করার লক্ষ্যেই দুই বছরের পুরনো মামলা ফের খুলেছে। উভয় পক্ষের পারস্পরিক সম্মতি নিয়েই এই মামলার তদন্ত বন্ধ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, ছাত্র পরিষদের জাতীয় সভাপতি নীরজ কুন্দন (Neeraj Kundan) টুইট করে বলেছেন, ওই বয়স্ক মহিলাকে নির্যাতনের জন্য এবিভিপির প্রাক্তন জাতীয় সভাপতিকে গ্রেপ্তার করার বিষয়ে তাঁদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আগেই দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু, এবিভিপি ক্রমাগত তাদের প্রাক্তন সভাপতিকে রাজনৈতিক সুরক্ষা দিয়েছে এবং ওই বৃদ্ধা মহিলাকে অপমান করেছে।