অসমের (Assam) কাছাড় (Cachar) জেলার এক গ্রামে একটি ছাগলের (Goats) বাচ্চার জন্মেছে, যাকে দেখতে মানুষের মতো। তুমুল ভাইরাল (Viral Picture) হয়েছে সেই ছাগল শাবকের ছবি। 

ছাগলের (Goats) পেটে কি মানুষের (Human) বাচ্চা জন্মাতে পারে? রূপকথার গল্পে দুয়োরানীর পেটে কুকুরের বাচ্চার জন্ম হয়েছিল। কিন্তু, তার পিছনেও ছিল সুয়োরানীর ছল-চাতুরি। তাই বলে নিম্নতর প্রাণীর গর্ভে মানুষের সন্তান, এও কি সম্ভব? আর সেই কারণেই বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না অসমের (Assam) কাছাড় (Cachar) জেলার বাসিন্দাদের। এই জেলার এক গ্রামে এক বিচিত্র ঘটনা ঘটেছে। একটি ছাগলের বাচ্চার জন্মেছে, যা দেখতে ছাগলের মতো নয়, বরং মানুষের মতো।

ঘটনাটি ঘটেছে কাছাড় জেলার ধোলাই বিধানসভা কেন্দ্রের (Dholai Vidhan Sabha constituency) অন্তর্গত গঙ্গাপুর গ্রামে (Gangapur village)। ছাগলের বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় জন্মেছে, কিন্তু তার সঙ্গে মানব সন্তানের বিস্ময়কর সাদৃশ্য রয়েছে। মানুষের মতো অনেক বৈশিষ্ট্যই রয়েছে ছাগল শাবকটির। এটির চোখ, নাক ও মুখ প্রায় মানুষের মতো। তবে, কান জোড়া ছিল ছাগলের মত। আর এটি মাতৃগর্ভের বাইরে এসেছে মাত্র দুটি পা নিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই অদ্ভুত চেহারার প্রাণীটিকে একবার অন্তত দেখার জন্য উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছে গঙ্গাপুর গ্রামে। মা ছাগলটি কিছু বুঝতে পারছে কিনা কে জানে, তবে, এত লোক দেখে সে কেবল ব্যা ব্যা করে ডেকে চলেছে। 

Scroll to load tweet…

তবে প্রাণী বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছাগলের গর্ভ থেকে অপরিণত মৃত শাবক জন্মালে, তার সঙ্গে যদি মানব শিশুর দৈহিক বৈশিষ্টের মিল পাওয়া যায়, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আসলে এটা বিবর্তন তত্ত্বেরই (Evolution Theory) প্রমাণ। বিভিন্ন মেরুদণ্ডী (Vertebrate) প্রাণীর ভ্রণের মধ্যে আশ্চর্যরকম মিল পাওয়া যায়। সে মাছ থেকে শুরু করে কচ্ছপ, মুরগি, খরগোশ, মানুষ কিংবা ছাগল - সকল প্রকার মেরুদণ্ডী প্রাণিরই প্রাথমিক পর্যায়ের ভ্রণের মধ্যে অসম্ভব মিল থাকে। বস্তুত, আগে থেকে না জানা থাকলে অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই কোন ভ্রুণ কোন প্রাণীর তা বলা সম্ভব নয়। ভ্রুণের বিকাশের পরবর্তী পর্যায়গুলিতে প্রতিটি প্রাণীর নিজ নিজ বৈশিষ্ট ক্রমশ আলাদাভাবে ধরা পড়ে। এটাই বলে দেয়, ক্রমে নিম্নতর প্রাণী থেকে উচ্চতর প্রাণীর বিকাশ ঘটেছে, ঈশ্বর মাটি দিয়ে তৈরি করে পাঠাননি। কাজেই অপরিণত ছাগ ভ্রুণে মানব শিশুর মুখের আদল পাওয়া মোটেই অসম্ভব নয়।

Scroll to load tweet…

তবে, অসমের সঙ্গে বিচিত্র রূপী ছাগলের এক অদ্ভূত সম্পর্ত রয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের মে মাসে অসমে একটি একচোখের ছাগল ছানা জন্মেছিল। তার কানও ছিল একটিই, নাক প্রায় ছিল না বললেই চলে। এমনকী, চোখের পাতাও ছিল অনুপস্থিত। পশু চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ছাগল ছানাটি 'সাইক্লোপিয়া' (Cyclopia) নামে একটি বিরল জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মেছে। ঘোড়া, গরু, ছাগল, শুয়োর এমনকী কয়েক প্রজাতির হাঙরের মধ্যেও এই জন্মগত ত্রুটি দেখা যায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, এই অবস্থা নিয়ে জন্মানো প্রাণীরা সাধারণত খুব বেশি দিন বাঁচে না। তাঁরা, আশঙ্কা করেছিলেন, ছাগল ছানাটিও খুব বেশিদিন বাঁচবে নাা। কিন্তু, সবাইকে অবাক করে দীর্ঘদিন বেঁচে ছিল সেই একচোখের ছাগল।