সংক্ষিপ্ত

মোদীকে তথ্যচিত্রের ক্লিপ পোস্ট ব্লক করার নির্দেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দাবি একটি সূত্রের। যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা।

 

India: The Modi Question (ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন) বিবিসির তৈরি এই তথ্যচিত্র নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যেই কঠোর পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র India: The Modi Question (ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন)এর লিঙ্ক শেয়ার করা একাধিক ইউটিউড ও টুইটার পোস্ট ব্লক করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ জারি করেছে। এই তথ্যচিত্রে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গাকে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি সেই দাঙ্গা তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এই তথ্যচিত্রকে প্রপাগন্ডা ছড়ানোর বিষয়বস্তু বলে চিহ্নিত করেছে। পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রে ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা প্রতিফলিত হচ্ছে।

সূত্রের খবর তথ্য সম্প্রচচার মন্ত্রকের সচিব অপূর্ব চন্দ্র শুক্রবারই ২০২১ সালের আইটি আইনের অধীনে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে তথ্যচিত্রের অ্যাক্সেস ব্লক করার নির্দেশিকা জারি করেছেন। সূত্রের খবর বিদেশমন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও তথ্য-সম্প্রচার-সহ কয়েক মন্ত্রকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তথ্যচিত্রটি খতিয়ে দেখেছেন। তাদের দাবি এটির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতার উপর বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা চেষ্টা করা হয়েছে। বিদেশি সরকারের কার্যকলাপ নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে।

অন্যদিকে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মত বিরোধী দলগুলি সেন্সরশিপের জন্য মোদী সরকারের সমালোচনা করলেও দেশের প্রায় ৩০২ জন বিদগ্ধ মানুষ বিবিসির তথ্যচিত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছে চিঠি লিখেছেন। সেখানে দাবি করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রের মাধ্যেমে দেশের নেতার ভাবমূর্তি খুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। চিঠিতে সই করেছেন রাজস্থান হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অনিল দেও সিং, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব এল সি গয়াল, প্রাক্তন বিদেশ সচিব শশাঙ্ক। এছাড়াও প্রাক্তন RAW প্রধান সঞ্জীব ত্রিপাঠি এবং প্রাক্তন NIA ডিরেক্টর যোগেশ চন্দর মোদি বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন৷

শুক্রবার বিবিসি-র এক মুখপাত্র একটি বিবৃতি জারি করে বলেছেন, তথ্যচিত্রটি সর্বোচ্চ সম্পাদকীয় মান অনুযায়ী কঠোরভাবে গবেষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই ভারত সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র Cর তীব্র সমালোচনা করেছিল। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি ছিল এটি একটি প্রচারের অংশ। যা পক্ষপাতিত্বে ভরা।

বিবিসির তৈরি করা তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার বিষয় নিয়ে ভারতীয় নেতা নরেন্দ্র মোদী অবগত ছিলেন। বিবিসি দাবি করেছে, এই সিরিজটি তৈরির সময় তাদের কর্মীরা বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছেছিল। বিস্তৃতি তথ্য সংগ্রহ করেছিল। ঘটনার সাক্ষীতদের সঙ্গে কথা বলেছিল। পাশাপাশি তথ্যচিত্র তৈরির সময় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল। বিবিসি আরও দাবি করেছেন তথ্যচিত্রে বিভিন্ন মন্তব্য আর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই তথ্যচিত্রে বিজেপির নেতাকর্মীদেরও বয়ান রয়েছে। বিবিসির মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, এই বিষয়ে ভারত সরকারের কাছেও একাধিক বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।

যদিও আগেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারত। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংএর বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে ভারত সরকারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন এই তথ্যচিত্র এখনও পর্যন্ত ভারতে প্রদর্শিত হয়নি। লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের থেকে পাওয়া ইনপুটগুলির ভিত্তিতেই তিনি প্রতিক্রিয়া জানাবেন। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি এটি একটি প্রচারের অংশ যা দেশের একটি অংশকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠতার অভাব রয়েছে। সত্যি বলতে কি এটির মদ্যে একটি অব্যাহত ঔপনিবেশিক মাসনিকতা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। ' এরপরই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, এজাতীয় তথ্যচিত্র তৈরির পিছনে একটি নির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে। আর ভারত সরকার এজাতীয় প্রচেষ্টাকে কোনও মর্যাদা ও গুরুত্ব দেয় না।