সংক্ষিপ্ত

শিবসেনা উদ্ধব ঠাকরে বনাম একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠীর আইনি লড়াইয়ে নয়া মোড়। 'রাজ্যপাল সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকার ফেলতে পারে না', বলল সুপ্রিম কোর্ট ।

 

যে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল সাংবিধানিক ক্ষমত্যা ব্যবহার করে নির্বাচিত সরকার ফেলে দিতে পারে না। বুধবার তেমনই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একটি ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে মতবিরোধের কথা উল্লেখ করে এই বার্তা দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত ও কার্যকরী সরকারের পতনের জন্য যদি রাজ্যপালরা তাদের সাংবিধানিক কার্যলয় ব্যবহার করে তাহলে তা গণতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

প্রধানবিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ

প্রধানবিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় একটি সাংবিধানিক বেঞ্চের নেতৃত্বে রয়েছে, এমনই একটি মামলায় ওই বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ হল, 'একজন গভর্নরকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে, তার একটি আস্থাভোটের আহ্বান একটি সরকারের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর কারণ হতে পারে। এই আস্থাভোটের আহ্বান নিজেই একটি সরকারের পতনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই কাজের জন্য রাজ্যপালের কখনই তার অফিস ধার দেওয়া ঠিক নয়। রাজ্যপাল এমন কোনও এলাকায় প্রবেশ করতে পারেন না যার দ্বারা যার একটি পদক্ষেপ একটি নির্বাচিত সরকারের পতনকে ত্বরান্বিত করবে। '

গণতন্ত্রের জন্য গুরুতরঃ

প্রধানবিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির ডাকা আস্থাভোটের কথা উল্লেখ করেছিল। যা ২০২২ সালে উদ্ধব ঠাকরের সরকারের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতার মন্তব্য

আদালতে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহলা গর্ভনের অফিসের সংস্করণটি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন একনাথ শিন্ডে ও ঠাকরে শিবিরের মধ্যে আদর্শ নিয়ে সংঘাত শুরু হয়েছিল। শিন্ডে শিবির মনে করেছিল কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করে শিবসেনা তাদের মূল আদর্শ থেকে সরে এসেছে।

পাল্টা প্রশ্নঃ

সাংবিধানিক বেঞ্চের পাল্টা প্রশ্ন, তারা (শিন্ডে গোষ্ঠী) তাদের নেতাকে ভোট দিয়ে বের করে দিতে পারত। কিন্তু রাজ্যপাল কি বলতে পারেন নেতৃত্বের কিছু মতবিরোধ রয়েছে, আর সেইকারণেই আস্থাভোটের আহ্বান জানান হচ্ছে? বেঞ্চ আরও বলেছেন, সরকারটি আগেই বিধানসভায় নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিয়েছিল। সরকারটি কার্যকরী সরকার ছিল। প্রধানবিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'রাজ্যপাল একটি নির্বাচিত সরকারের পতনের জন্য তার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন? এটি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য খুবই গুরুতর?'

পাল্টা মন্তব্যঃ তুষার মেহতা বলেন, একজন জনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতার তার পুরো মেয়াদের বিধানসভার আস্থা উপভোগ করা ঠিক নয়। এটি অত্যাচারের মধ্যেও পড়ে যেতে পারে। তুষার মেহতা আরও বলেছেন, শিবসেনার সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতৃত্বই সরকার গঠনের জন্য আদর্শগতভাবে জোট নিরপেক্ষ দলগুলির সঙ্গে হাত মেলানো পছন্দ করেনি।

পাল্টা প্রশ্ন আদালতেরঃ

'কিন্তু তারপরেই আপনি তাদের সঙ্গে পুরোপুরি তিন বছর সহবাস করেছিলেন। তিন বছরের সুখী দাম্পত্য দজীবনের পর কী এমন ঘটল যা হঠাৎ করে রাতারাতি অসুখী করে তুলল? তাদের মধ্যে অনেকেই জোটের মন্ত্রী ছিলেন... অনেকেই লুঠপাঠ উপভোগ করেন, হঠাৎ আপনি জেগে উঠলেন তাই নাকি? একটি দলের মূল আদর্শের বিরুদ্ধে চলে গেছে তা রাজ্যপালের আস্থা ভোটের আহ্বানের ভিত্তিতে নয়।' বলেছেন প্রধানবিচারপতি।