সংক্ষিপ্ত

সোশ্যাল মিডিয়ায় হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছিল হিন্দু বনাম মুসলমান সম্বন্ধীয় ঘৃণ্য পোস্ট। সেই পোস্টগুলি থেকেই শুরু হয়েছিল দাঙ্গা। যাচাই করতে এবার বেশ কতগুলি নাম হাতে পেয়েছে তদন্তকারী দল।

হরিয়ানার নুহ জেলায় সোমবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ব্রজমণ্ডল অভিষেক যাত্রা’ চলাকালীন পাথর ছোড়া, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যার দরুন নুহ জেলা জুড়ে হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে হিংস্রতা। দাঙ্গার আগুন ধীরে ধীরে গুরুগ্রাম, পালওয়াল এবং ফরিদাবাদেও পৌঁছে গেছে। এই সহিংসতায় হিন্দু-মুসলমান, উভয় সম্প্রদায়েরই প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই মামলায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত ১৭৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়া ৭৮ জনকে প্রতিরোধমূলক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই হিংস্রতার পেছনে কার বা কাদের হাত ছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সহিংসতার তদন্তে অনেকের নাম বেরিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার নুহ-তে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকগুলি উস্কানিমূলক পোস্টের জন্য তিনটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল, যে ভিডিওগুলি ‘ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’-র সময় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

হরিয়ানায় হিন্দু বনাম মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে কারা দাঙ্গায় উস্কানি দিয়েছে, তা খুঁজে বের করার জন্য বেশ কতগুলি তদন্তকারী দল গঠন করেছে খট্টর সরকার। এই দলের আধিকারিকরা প্রায় ২ হাজারটি ভিডিও স্ক্যান করে দেখা শুরু করেছেন। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়বস্তু এবং নুহ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টিকারী পোস্টগুলি পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি চার সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে হরিয়ানা রাজ্য সরকার। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন একজন বিশেষ সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা।

তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখেছেন যে, সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, যেগুলির উপর বৃহস্পতিবার তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, সেই পোস্টগুলি ৩১ জুলাই, সোমবারেই করা হয়েছিল। ওইদিনই হিংস্রতা হয়েছিল, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের দ্বারা দুই সম্প্রদায়ের সদস্যরাই প্রকাশ্য হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করেছিল। এই ভিডিওগুলোর মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে হিন্দুদের শোভাযাত্রায় আহ্বান জানানো গরু-রক্ষক সংগঠনের প্রধান মনু মানেসার-এর একটি ভিডিও-ও (বিস্তারিত পড়ুন- হরিয়ানার হিন্দু-মুসলমান হিংসাকাণ্ডে বজরং দলের গরু-সুরক্ষাদায়ী সদস্য মনু মানেসার কতখানি জড়িত?)। পুলিশের নথিভুক্ত এফআইআরে শহিদ নামের এক ব্যক্তির পাঁচটি ভিডিও, আদিল নামের এক ব্যক্তির একটি ভিডিও এবং ‘শায়ার গুরু ঘন্টাল’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়িয়ে দেওয়া দুটি বিতর্কিত পোস্ট উল্লেখ করা হয়েছে। শোভাযাত্রার আগে একজন রাজনৈতিক কর্মীর হুমকি দেওয়ার ব্যাপকভাবে প্রচারিত ভিডিওটি এখনও পর্যন্ত এফআইআর-এ কোনও উল্লেখ পাওয়া যায়নি, সেই অপরাধীর বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়নি।

নুহ জেলার এসপি বরুণ সিংলা বলেছেন যে, আমাদের আরও দুষ্কৃতীদের সনাক্ত করতে হবে। তাই, আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও ও ক্লিপগুলি পর্যবেক্ষণ করছি। দক্ষিণ হরিয়ানায় নুহ এবং অন্যান্য এলাকার হিন্দু-মুসলমান সংঘর্ষের তিন দিন পর, বৃহস্পতিবার হরিয়ানা পুলিশ কর্তৃক নথিভুক্ত এফআইআরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩-এ। কমপক্ষে ১৭৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৭৮ জনকে প্রতিরোধমূলক আটক করা হয়েছে। ৯৩টি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে মোট পাঁচটি জেলায়, যার মধ্যে ৪৬টি নুহ, ২৩টি গুরুগ্রাম এবং ১৮টি পালওয়াল থেকে করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-

Lakshmi Puja: শুক্রবার রাতে করুন গোপন প্রতিকার, মা লক্ষ্মীর কৃপায় কোনওদিন হবে না অর্থের অভাব
Gyanvapi News: শুক্রবার জ্ঞানবাপী-তে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’, আশাবাদী হেমা মালিনী
স্কুলে যাওয়ার পথে ৫ বছরের ছোট্ট শিশুর মৃত্যু, ক্ষোভে আগুন জ্বলছে বেহালার রাস্তায়