সংক্ষিপ্ত
মুসলিম সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করে একজন বক্তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘যদি আপনি একটা আঙুল তোলেন, তবে আমরা আপনার গোটা হাতটাই কেটে ফেলব।’
১৩ অগাস্ট, রবিবার, বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (Vishwa Hindu Parishad) -এর প্রায় কয়েক হাজার জন সদস্য নিয়ে একটি মহাপঞ্চায়েত আয়োজিত হয়েছিল হরিয়ানার পালওয়াল জেলায়। ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই নুহ জেলায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যদের ব্রজমণ্ডল ধর্মীয় শোভাযাত্রায় হামলা ও ওই জেলার মুসলমান ধর্মগুরু এবং মসজিদের ওপর হামলার ঘটনায় ধর্মীয় দাঙ্গায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য, সেই দাঙ্গার রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তরপ্রদেশের নয়ডা-তেও। তারপর আবার হরিয়ানায় বসল হিন্দু ধর্মীয় মানুষদের সভা। সেই সভায় বেশ কিছু নেতাদের মন্তব্যে সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিতর্কের ঝড়। আইনত এই বক্তব্যগুলিকে ‘ঘৃণাত্মক বক্তব্য’ বলেই ধরে নেওয়া যায় বলে মনে করছেন অনেকে।
রবিবার বজরং দল (Bajrang Dal) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মহাপঞ্চায়েতে ৫১ জনের একটি কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, নুহ জেলার সমস্ত গরু হত্যা বন্ধ করতে হবে। মুসলমান মানুষদের রোধ করার জন্য হিন্দুদের হাতে রাইফেল তুলে দেওয়া হোক বলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে আর্জি জানিয়েছেন এক বক্তা। হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ এবং রাজস্থান থেকে কয়েক হাজার জন সদস্য এই সভায় অংশ নিয়েছিলেন, আগত মানুষদের অনেকের হাতেই অস্ত্র দেখা গিয়েছিল। মুসলিম সম্প্রদায়কে ‘শিক্ষা দেওয়া দরকার’ বলে মনে করেছেন এই মহাপঞ্চায়েতের অংশগ্রহণকারীরা। বক্তাদের অধিকাংশকেই হিন্দু ধর্মীয়দের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার আর্জি জানাতে শোনা গিয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করে একজন বক্তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘যদি আপনি একটা আঙুল তোলেন, তবে আমরা আপনার গোটা হাতটাই কেটে ফেলব।’
নুহ জেলায় হিন্দুদের এই সম্মেলনের অনুমতি চাওয়া হলেও সাম্প্রতিক দাঙ্গার (Haryana Nuh Violence) কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই অনুমতি মেলেনি। তার বদলে পালওয়াল-নুহ সীমান্তের কাছে পুন্দ্রি গ্রামে এই সম্মেলন আয়োজিত হয়েছে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল হিন্দু ধর্মীয় মানুষদের একত্রিত করা এবং ইসলাম ধর্মের মানুষদের ‘রোধ’ করা। সেই উদ্দেশ্যে মুসলমানদের বিলুপ্ত করে দেওয়ার বার্তা প্রচার করেছেন সংগঠনের নেতারা। অপরদিকে, গরু বাঁচানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে, গরু চোরাচালান রোধ করার জন্য নুহ মেওয়াতে (Nuh Mewat) আধাসামরিক বাহিনীর একটি সদর দফতর স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে। আয়োজিত সভায় যত মানুষের উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোট ৫০০ জনের হাজির হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
অন্য দেশ থেকে আগত মানুষদের জন্য কঠোর আইন গ্রহণ করা এবং ওই মানুষদের বের করে দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছে কমিটি। মামলায় জড়িত সকল ‘নিরপরাধ লোকদের’ মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। নুহতে সংঘটিত হিংস্রতার ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)-এর তদন্ত, মৃতদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ, তাঁদের আত্মীয়দের জন্য চাকরি, আহত মানুষদের প্রত্যেকের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। আসন্ন ২৮ আগস্ট নূহ-এর নলহার গ্রাম থেকে একটি হিন্দু ধর্মের মিছিল বের করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। হিন্দুদের আস্থা বাড়াতে এই যাত্রার আয়োজন বলে জানিয়েছেন বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারা।
আরও পড়ুন-
Khalistani Attack: আবার হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর! কানাডায় খালিস্তানি দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব
Jadavpur University News: মনোতোষ সৌরভ দীপশেখরের বিরুদ্ধে হতে পারে পকসো মামলা, শিশু সুরক্ষা কমিশনের উদ্যোগ
Independence Day: ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল ছবি বদল করলেন নরেন্দ্র মোদী
Rakhi Purnima 2023: সাবধান! এবছর রাখী পূর্ণিমায় পড়তে চলেছে ভাদ্রের ছায়া, জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে উৎসবের তারিখ ও শুভ সময় কখন?