Pahalgam Attack: পহেলগাঁও আক্রমণের পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। পাকিস্তানি জাহাজের ভারতীয় বন্দরে প্রবেশ এবং পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পহেলগাঁও আক্রমণের পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কেন্দ্র সরকার শনিবার এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন পাকিস্তানের পতাকা উড়ন্ত জাহাজ ভারতের কোনও বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। একইভাবে ভারতীয় জাহাজও এখন পাকিস্তানের বন্দরে যেতে পারবে না। এই সিদ্ধান্ত বন্দর, জাহাজ চলাচল এবং জলপথ মন্ত্রণালয় নিয়েছে।
পাকিস্তান থেকে আসা সমস্ত পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা
এছাড়াও, ভারত পাকিস্তান থেকে আসা সমস্ত পণ্যের আমদানির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে সরাসরি পাকিস্তান থেকে আসা এবং অন্য কোনও দেশের মাধ্যমে আসা উভয় ধরণের আমদানি অন্তর্ভুক্ত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২রা মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে। বিদেশ বাণিজ্য নীতি ২০২৩-এ একটি নতুন নিয়ম যোগ করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ভারত সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে
এখন পাকিস্তান থেকে ভারতে কোনও পণ্য আসতে পারবে না। যদি কোনও বিশেষ ক্ষেত্রে আমদানি করা প্রয়োজন হয়, তবে তার জন্য ভারত সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হবে। সরকারের অনুমতি ছাড়া পাকিস্তান এখন ভারতে কিছুই পাঠাতে পারবে না।
ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে
এর জন্য বিদেশ বাণিজ্য নীতিতে (FTP) একটি নতুন নিয়ম যোগ করা হয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান থেকে আসা প্রতিটি পণ্য, তা সরাসরি আসুক বা অন্য কোনও দেশের মাধ্যমে, বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে, যতক্ষণ না সরকার কোনও নতুন নির্দেশ না দেয়।
২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ভারত সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল করেছে এবং দেশে বসবাসকারী পাকিস্তানি নাগরিকদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ছিল সেই ভয়ানক দিন। সেই দিন দুপুরে জঙ্গিদের গুলিতে প্রয়াত হন ২৬ জন সাধারণ মানুষ। ২৫ জন ছিলেন কাশ্মীরের পর্যটক। একজন ছিলেন স্থানীয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিলেন যে, জঙ্গিরা ধর্ম জেনে হত্যা করা হয়। বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটে পেহলগাঁও-র বৈসরন উপত্যকায়। সেদিন পর্যটকদের রক্ত লাল হয়ে যায় মিনি সুইৎজারল্যান্ড। এই পেহলগাঁও কাণ্ডে লস্কর ই তৈবা-র ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায়ি বলে অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে এখনও চলছে তদন্ত। তদন্ত করছেন সেনা সদস্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে। তেমনই সন্দেহজনক কিছু দেখলে বোম্ব দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। করা হচ্ছে হামলা।
এদিকে জানা গিয়েছিল, এই হত্যার ছক দীর্ঘদিন ধরে করা হয়। ২২ এপ্রিল হামলার ঠিক আগে ১-৭ এপ্রিল রেইকি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক রিসর্টে রেইকি করেছিল জঙ্গিরা। শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছিল কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা। যা মিনি সুইৎজারল্যান্ড নামে খ্যাত। ২২ এপ্রিল দুপুরে ৫-৬ জন জঙ্গি সেখানে হাজির হয়েছিল। দু-তিনটে দলে ভাগ হয়ে ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ধর্মীয় পরিচয় দেখে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। ঘটনাস্থলে সেদিন মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জন পর্যটক ও ১ জন স্থানীয়ের। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু পরে তারা সুস্থ আছেন বলে জানা যায়।


