সংক্ষিপ্ত
- ভারত ও চিনা সেনার সংঘাত এবার গড়াল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে
- সোমবারই দু’পক্ষের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়
- তার পরেই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের হামলা
- এদিকে সংঘর্ষ বিরতির পাল্টা অভিযোগ তুলছে বেজিং
ভারত ও চিনের সীমান্ত এলাকা নিয়ে বরাবরই দুই দেশের মধ্যে মতভেদ ছিল, সম্প্রতি সেই সীমান্ত সমস্যা আরও চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই দুই দেশেরই সেনার মধ্যে লাদাখ নিয়ে রীতিমতো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। লাদাখে একেবারে চলছে যুদ্ধের পরিস্থিতি। গালওয়ান উপত্যকায় সোমবার রাতে চিনা সৈন্যদের সঙ্গে এক ভারতীয় সেনা আধিকারিক ও ২ জওয়ানের শহিদ হওয়ার পর উত্তেজনার পারদ যেন আরও চড়েছে।
লাদাখকে ভারত সরকার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার পর থেকেই এই নিয়ে সমালোচনা করে চলেছে বেজিং। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা নিয়ে চিন বিবৃতিতে লাদাখ নিয়ে ক্ষোক্ষ প্রকাশ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ‘ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম দিকের চিনা ভূখণ্ডকে ভারতের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তির বরাবর বিরোধিতা করেছে চিন।’
গত মে মাসের শুরুতেই উত্তর সিকিমে ৫০০০ মিটার উচ্চতায় নাকু লা সেক্টরে ভারত ও চিনের সেনার মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই শিবিরের বাহিনী। এরপরেই ঘটনাপ্রবাহ চলতে শুরু করে লাদাখের দিকে।
৫-৬ মে লাদাখ সীমান্তের কাছে প্যানগং সোতে টহলদারি দিতে দিয়ে হাতাহাতিতে জড়ায় দুই দেশের সেনাবাহিনী।
৯ মে ফের নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় দুই তরফের। তারপর থেকেই লাদাখ সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে দুই বাহিনী। চড়ছে উত্তেজনার পারদও।
১২ মে- সীমান্তে চিনা হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়। পাল্টা ভারতীয় বিমান বাহিনীর সুখোই সু-৩০এমকেআই কে পাঠান হয় এলওসি-তে।
২৩ মে- ভারত ও চিনের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনার মাঝে ভারতীয় সেনা প্রধান মনোজ নারাভানে লেহ সফরে যান।
২৬ মে- তিন সেনাপ্রধান, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২৮ মে- চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চিনেরা সেনা পিএলএর সঙ্গে বৈঠক করলেন। দেশের সেনাকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিওয়ার ডাক। জিনপিং বলেন, গোটা দেশের সেনা যেন সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা মাথায় রেখে প্রশিক্ষণ শুরু করে।
২ জুন- দুই তরফের মেজর জেনারেল ব়্যাঙ্কের আধিকারিকরা বৈঠকে বসেন। যদিও সমাধান সূত্র অধরাই থাকে।
৬ জুন- লেহ উপত্যকায় ভারতীয় সেনা বাহিনীর ১৪ কর্পস-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট জেলারেল হরিন্দ সিং এর সঙ্গে বৈঠক করেন চিনা বাহিনীর তিব্বত সামরিক জেলার কমান্ডার।
৮ জুন - সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ ও তিন সেনা প্রধানের সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বৈঠক করেন।
১২ জুন- গলওয়ান এলাকায় মেজর জেনারেল পর্যায়ের বৈঠক হয়।
১৩ জুন - সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে জানান, যুদ্ধ নয়, বরং কথাবার্তা-বৈঠকের মাধ্যমেই ভারত-চিন সীমান্তের সমাধানসূত্র বের করতে চান তিনি।
এরপরেই সোমবার দু’পক্ষের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছিল। তার পরেই ঘটল চিনের হামলা।