সংক্ষিপ্ত

ডিআরডিওর তৈরি নতুন প্রজন্মের অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল ‘নাগ মার্ক ২’ এর সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ প্রযুক্তি সম্পন্ন এই মিসাইল শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক ধ্বংসে সক্ষম।

ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠান ডিআরডিও (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন) ‘নাগ মার্ক ২’ নামক নতুন মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এটি ভারতে তৈরি তৃতীয় প্রজন্মের অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল। এটি লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত আঘাত হানতে সক্ষম।

নাগ মার্ক ২ মিসাইল ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ প্রযুক্তি সম্পন্ন। এর অর্থ হলো মিসাইল ছোঁড়া হলে শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক বা অন্যান্য লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হওয়া নিশ্চিত। উৎক্ষেপণের পর এটি তার লক্ষ্যবস্তুর সাথে লক হয়ে যায়। লক্ষ্যবস্তু যদি বাঁচার জন্য পালিয়ে যায় তাহলেও এটি পিছু ধাওয়া করে তাদের ধ্বংস করে।

 

 

কেন গুরুত্বপূর্ণ নাগ মার্ক ২ মিসাইল?

নাগ মার্ক ২ একটি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল। এটি বিশেষ করে ট্যাঙ্কের মতো সাঁজোয়া যান ধ্বংস করার জন্য তৈরি। এটি উচ্চ সুরক্ষিত ট্যাঙ্কগুলিকেও ধ্বংস করতে পারে। ইআরএ (এক্সপ্লোসিভ রিঅ্যাক্টিভ আর্মার) সম্পন্ন ট্যাঙ্কও এর থেকে রক্ষা পেতে পারে না। 

নাগ এমকে-২ ভারতে তৈরি সর্ব-ঋতু, ফায়ার-অ্যান্ড-ফরগেট, উৎক্ষেপণ-পরবর্তী লক-অন, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম)। উৎক্ষেপণের পর অপারেটরের ন্যূনতম হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগ এমকে-২ আধুনিক সাঁজোয়া যানগুলিকেও ধ্বংস করবে।

নাগ এমকে-২ এর সঠিক পাল্লা এখনও জানানো হয়নি। তবে এর পাল্লা ৭-১০ কিলোমিটার হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আগের নাগ মার্ক ১ এর পাল্লা ছিল ৪ কিলোমিটার। নতুন সংস্করণে পাল্লা বাড়ানো হয়েছে। এই মিসাইলে হাই এক্সপ্লোসিভ অ্যান্টি ট্যাঙ্ক (HEAT) ওয়ারহেড লাগানো আছে। এটি টপ অ্যাটাক করতে পারে। ট্যাঙ্কের ছাদ সবচেয়ে দুর্বল অংশ। টপ অ্যাটাকের সুবিধা সম্পন্ন মিসাইল ট্যাঙ্কের ছাদে আঘাত হানে। নাগ এমকে-২ মিসাইল ন্যামিকা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এটি ভারতে তৈরি বিএমপি-২ সারথ ভিত্তিক একটি সাঁজোয়া যান।

সেনাবাহিনীর জন্য নাগ এমকে-২ এর গুরুত্ব

সফল পরীক্ষার পর এখন নাগ এমকে-২ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত। অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলের ক্ষেত্রে এটি ভারতকে আত্মনির্ভরতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এতদিন ভারতীয় সেনাবাহিনী অন্যান্য দেশ থেকে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল কিনছিল। ২০২০ সালে লাদাখে চিনা সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর ভারতকে জরুরি ক্রয় হিসেবে ইসরাইল থেকে প্রায় ২০০ স্পাইক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল কিনতে হয়েছিল। এখন ভারতীয় সেনাবাহিনী এমন একটি সুনির্দিষ্ট মিসাইল পাচ্ছে যা দূর থেকেই শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক ধ্বংস করতে পারবে। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে এর সামনে চিন বা পাকিস্তানের ট্যাঙ্ক টিকতে পারবে না।