সংক্ষিপ্ত
তিন বছর পরই খোল-নলচে বদলে যাবে ভারতীয় প্রতিরক্ষাবাহিনীর।
চালু হতে চলেছে সামরিক কমান্ড পরিচালনা ব্যবস্থা।
জেনারেল বিপিন রাওয়াত জানালেন বিরাট পরিকল্পনা।
আর তিন বছর। তারপরই খোল-নলচে বদলে যেতে চলেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষাবাহিনীর। সেনাবাহিনী, বায়ুসেনাবাহিনী এবং নৌসেনাবাহিনীকে এক জায়গায় এনে সামরিক কমান্ড হিসাবে পরিচালনা করতে চলেছে ভারত। ভারতের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বা প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত মঙ্গলবার দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, এই নয়া সামরিক কমান্ডের আওতায় ক্ষমতা, রসদ ও লোকবলকে একত্রিত করে গঠিত সশস্ত্র বাহিনী হিসাবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গড়ে তোলাই তাঁর লক্ষ্য। তাঁর মতে এতে করে, ব্যয় হ্রাস হবে, যুক্তিসঙ্গতভাবে লোকবলের ব্যবহার এবং সশস্ত্র বাহিনীর একটি সম্মিলিত বাহিনী হিসাবে লড়াই করা নিশ্চিত হবে। সেই ক্ষেত্রে এটি ভারতের সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে বৃহত্তম পুনর্গঠন হবে।
মোট কটি কমান্ড গঠন করা হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল রাওয়াত জানিয়েছেন, একটি ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড, নেপাল-লাদাখ সীমান্তের জন্য একটি নর্দার্ন কমান্ড, জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য একটি পৃথক থিয়েটার কমান্ড, নেপালের পূর্ব দিকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির জন্য একটি ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে স্থলসীমান্ত জুড়ে থাকা কমান্ডগুলি ছাড়াও ভারতের নৌবাহিনীর অধীনে একটি পেনিনসুলা কমান্ড, ভারতীয় বায়ুসেনাবাহিনীর অধীনে একটি এয়ার ডিফেন্স কমান্ড এবং স্পেস কমান্ড এবং একটি মাল্টি-সার্ভিস লজিস্টিক কমান্ড ও একটি ট্রেনিং কমান্ড থাকবে বলে শোনা যাচ্ছে। প্রতিটি থিয়েটার কমান্ডের সঙ্গে একটি করে বায়ুসেনার বাহিনী থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত বায়ুসেনাও দেওয়া হতে পারে।
জেনারেল রাওয়াতের দাবি, এই কমান্ড ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যয় হ্রাস হবে। একটি কমান্ডের আওতায় থাকলে বিভিন্ন বাহিনী একই স্টোর ব্যবহার করতে পারবে, একই ঘাঁটিতে ভাগাভাগি করে থাকতে পারবে। এছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ স্টক কম লাগবে এবং অস্ত্রেরও অনুরূপ ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাভার অনেকটাই লাঘব হবে। জেনারেল রাওয়াতের মতে এক সঙ্গে স্টেশনগুলি এক জায়গায় অবস্থিত হলে সম্পদ পরিচালনার বিশাল সুযোগ খুলে যাবে।
অর্থনীতির অগ্রগতি উপর উচ্চ-মূল্যবান সামরিক সাজ-সরঞ্জামমের অধিগ্রহণ নির্ভর করে আছে বলে জেনারেল রাওয়াত ব্যয় সঙ্কোচের উপর জোর দিতে চান। ব্যয় সঙ্কোচনের জন্য মিসসিটারি কমান্ড গঠনের পাশাপাশি তিনি দেশীয় উপায়ে খুব উচ্চ মানের গোলাবারুদ উৎপাদনের কথাও তুলেছেন। এছাড়া ভবিষ্যতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পেনসনের জন্য ১,৩৩৩ কোটি টাকার বাজেট কমাতে অফিসার পদের বাইরে থাকা ব্যক্তিদেরও বাহিনীতে ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হতে পারে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন প্রতিরক্ষা প্রধান। এই মুহুর্তে, সশস্ত্র বাহিনীর আধিকারিকদের অবসরের বয়স ৫৮ বছর হলেও তার বাইরের কর্মচারীদের ৩৭-৩৮ বছর বয়সেই অবসর গ্রহণ করতে হয়।