India's Astra Mk1 Missile: ভারতীয় যুদ্ধবিমানের নতুন শক্তি ঘুম ওড়াচ্ছে পাকিস্তানের
Indias Astra Mk1 Missile: রাফাল মেরিনে যুক্ত হচ্ছে দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, ভবিষ্যতের বিমানযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি ভারতের শক্তি আরও বাড়াবে। অস্ত্র ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্বগুলি জেনে নেওয়া যাক।

অস্ত্র ক্ষেপণাস্ত্র : ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্প্রতি ৬৩,০০০ কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ২৬টি রাফাল মেরিন যুদ্ধবিমান কেনা হবে।
২০২৮ সালে সরবরাহ শুরু হবে এবং এগুলি প্রথমে দেশীয় বিমানবাহী রণতরী INS বিক্রান্তে মোতায়েন করা হবে।
ইউরোপীয় তৈরি MICA, Meteor-এর মতো অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি প্রায়শই রাফালের সাথে ব্যবহার করা হয়। তবে ভারতের চাহিদা অনুযায়ী *দেশীয় অস্ত্র Mk1* ক্ষেপণাস্ত্র এতে যুক্ত করা হবে। এটি ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য গেম-চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে।
সংস্কৃতে অস্ত্রা শব্দের অর্থ "অস্ত্র"। এটি হায়দ্রাবাদের ডিআরডিও (DRDO)-এর অধীনস্থ সংস্থা *ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরি (DRDL) তৈরি করেছে। উৎপাদনের দায়িত্ব *ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড (BDL)-এর উপর ন্যস্ত।
অস্ত্র Mk1 সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার দূরের আকাশস্থ লক্ষ্যবস্তুতে ঘণ্টায় ১,৭২৯ কিমি (মাখ ১.৪) বেগে আঘাত হানতে পারে। এর নির্দেশনা ব্যবস্থায় রয়েছে ইনারশিয়াল মিড-কোর্স গাইডেন্স, বিমান থেকে ডেটা লিঙ্কের মাধ্যমে আপডেট এবং শেষ পর্যায়ে অ্যাক্টিভ রাডার হোমিং।
প্রথমে রাশিয়ান তৈরি আগাত ৯বি১১০৩এম রাডার সিকার ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের পর ডিআরডিওর তৈরি দেশীয় কু-ব্যান্ড অ্যাক্টিভ রাডার সিকার ব্যবহার করা হচ্ছে।
অস্ত্র প্রকল্পের সূচনা
এই প্রকল্পটি ২০০০ সালের গোড়ার দিকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন ছাড়াই শুরু হয়েছিল। ডিআরডিও নিজস্ব অর্থায়নে নকশা তৈরির কাজ শুরু করে। বিদেশী সাহায্য ছাড়াই ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের সাথে সংযুক্ত করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল।
২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়া যায় এবং Su-30MKI-কে প্রধান পরীক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। ২০০৩ সালে ভূমি থেকে ব্যালিস্টিক লঞ্চের মাধ্যমে প্রথম পরীক্ষা চালানো হয়। ২০১১ সালে নকশা চূড়ান্ত হয় এবং ২০১৪-২০১৯ সালের মধ্যে ৩৫টির বেশি বিমান থেকে এবং ১৫০টি ক্যাপটিভ ফ্লাইট পরীক্ষা করা হয়।
২০১৯ সালে অস্ত্র Mk1 কে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত Su-30MKI, তেজস MK1A-এর মতো যুদ্ধবিমানের সাথে এটি সংযুক্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই মিগ-২৯কে এবং রাফাল যুদ্ধবিমানের সাথেও এটি সংযুক্ত করা হবে। শুধুমাত্র মিরাজ ২০০০-কে এর শেষ পর্যায়ে থাকার কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে।
রাফালে অস্ত্র সংযুক্তির গুরুত্ব Meteor ক্ষেপণাস্ত্র অত্যাধুনিক BVRAAM হলেও এর উচ্চ দাম (প্রায় ২৫ কোটি টাকা) এবং বিদেশী সরবরাহকারীর উপর নির্ভরতা এটিকে কৌশলগতভাবে সীমিত করে। ৭-৮ কোটি টাকার মধ্যে থাকা অস্ত্র Mk1 ব্যয় সাশ্রয়ী।
MICA ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ পাল্লা ৮০ কিলোমিটার, যা আধুনিক যুদ্ধের জন্য অপ্রতুল। চীন PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র J-20, J-10C যুদ্ধবিমানে মোতায়েন করেছে। এর পাল্লা ২০০-২৫০ কিলোমিটার হতে পারে বলে অনুমান। এর রপ্তানি সংস্করণ PL-15E-এর পাল্লা ১৪৫ কিমি।
পাকিস্তান এখনও মার্কিন তৈরি AIM-120C5 (১০০ কিমি পাল্লা) ব্যবহার করছে। পাকিস্তান ও চীন মিলে পরবর্তী প্রজন্মের BVRAAM তৈরি করছে বলে জানা গেছে। চীন থেকে PL-15-এর তাৎক্ষণিক সরবরাহ পেয়েছে বলেও খবর।
এই পরিস্থিতিতে অস্ত্র তৈরি ভারতের জন্য কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্পূর্ণ দেশীয় হওয়ায় প্রয়োজন অনুসারে দ্রুত পরিবর্তন করা সম্ভব।
Mk2, Mk3 – ভবিষ্যতের অস্ত্র
২০২৬ সালের মধ্যে অস্ত্র Mk2 চালু হবে, যার পাল্লা ১৪০-১৬০ কিলোমিটার। এর জন্য ডুয়েল-পালস রকেট মোটর, অত্যাধুনিক গাইডেন্স অ্যালগরিদম এবং দেশীয় আরএফ সিকার ব্যবহার করা হবে। এর চেয়েও উন্নত অস্ত্র Mk3 (গান্ধীব) ২০৩১ সালের মধ্যে তৈরি হবে। এটি সলিড ফুয়েল ডাক্টেড র্যামজেট (SFDR) প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে। এর গতিবেগ মাখ ৪.৫ এবং পাল্লা ৩০০ কিলোমিটারের বেশি হবে।
বিদেশী BVRAAM-এর তুলনায় অস্ত্র প্ল্যাটফর্ম-অ্যাগনস্টিক ডিজাইনের। অর্থাৎ এটি যেকোনো যুদ্ধবিমানের সাথে সংযুক্ত করা যাবে। এটি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রস্তুতি বাড়াবে।

