সংক্ষিপ্ত
গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে অশান্ত মণিপুরে হাজার হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে সেসব অস্ত্র মায়ানমারের জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে চলে যেতে পারে।
সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুনে পুড়ছে মণিপুর। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীকে আনতে হয়েছিল কিন্তু এই সমস্ত প্রচেষ্টা অস্থির মণিপুরের জন্য অপর্যাপ্ত বলে মনে হচ্ছে। এদিকে গোয়েন্দা সংস্থার সতর্কবার্তায় শঙ্কা বেড়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে অশান্ত মণিপুরে হাজার হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন, সীমান্ত অতিক্রম করে সেসব অস্ত্র মায়ানমারের জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে চলে যেতে পারে। একটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট দাবি করেছে যে প্রশাসন বিশ্বাস করে যে রাজ্যে অন্তত চার হাজার অস্ত্র লুট করা হয়েছে। কার্তুজের সংখ্যা এখনও গণনা করা হয়নি। খবরে বলা হয়েছে, অশান্তির সময় রাজ্যের বিভিন্ন গোডাউন, বিভিন্ন বাহিনীর অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। কত অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়েছে তা জানতে এখনও কয়েক সপ্তাহ লাগবে।
চার হাজার অস্ত্র চুরি?
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমআই ১৬ রাইফেল, সাবমেশিন গান, কারবাইন এবং অত্যাধুনিক পিস্তল সহ একে সিরিজের প্রচুর অস্ত্র চুরি হয়েছে। মণিপুরের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, "লুট করা অস্ত্র মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি সবচেয়ে ভীতিকর বিষয়। কোনো সম্প্রদায়ই চার হাজার অস্ত্র লুকিয়ে রাখতে পারে না। মায়ানমারের গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই কিছু অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে টার্গেট করতে এবং আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।"
একই কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আরেক কর্মকর্তাও। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তথ্য পেয়েছে যে মণিপুরের অস্থিরতার সাথে জড়িত কিছু গোষ্ঠীর জঙ্গি সংগঠনের সাথে যোগাযোগ রয়েছে এবং আরও পাওয়া গেছে যে রাজ্যে অস্থিরতার সময় কিছু লোককে প্রশিক্ষণের জন্য মায়ানমারে পাঠানো হয়েছিল।
জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্র কি?
প্রশাসন সাম্প্রদায়িক হিংসার শিখা নিভানোর জন্য অনেক প্রচেষ্টা করেছে। সরকারি আর্থিক সহায়তাও ঘোষণা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। মণিপুরের আগুন জ্বালিয়ে রাখতে কি মণিপুরের মানুষের বিরুদ্ধে চুরি করা অস্ত্র ব্যবহার করা হবে? এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে উত্তর-পূর্বের একটি ছোট রাজ্য।
এদিকে, মণিপুরের হিংসার ঘটনার সুযোগে রাজ্যে কি অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে চিন! এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ভারতীয় গোয়েন্দারা। ফলে ঘটনা খতিয়ে দেখতে মণিপুরে আসতে হয় সেনাপ্রধান মনোজ পান্ডেকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পাশাপাশি সেখানকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সেনাবাহিনী, আসাম রাইফেলস এবং সিএপিএফ-এর উপস্থিতিতে ২৭ দিন পরেও মণিপুরে হিংসা থামেনি, কেন! তাহলে কোন বহিরাগত শক্তি এই হিংসার ঘটনায় ইন্ধন যোগাচ্ছে, সেই বিষয়ে এবার ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।