সংক্ষিপ্ত
মণিপুরের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন এই ঘটনা গণতন্ত্রে কাম্য নয়।
মণিপুরের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। এই অবস্থায় হাতে হাত গুটিয়ে বসে থাকলা সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে কী কী পদক্ষেপ করেছে তা জানতে চেয়েছে। গোটা শীর্ষ আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি মণিপুরের ঘটনা নিয়ে আদালত রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও। অভিযোগ আগে মহিলাদের একটি মাঠি গণধর্ষণ করা হয়েছে। এদিন এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে উপস্থিত থাকা এজি আর ভেঙ্কটারমন ও এসজি তুষার মেহতার উপস্থিততে গোটা ঘটনার নিন্দা করেছেন। বলেছেন 'এটি শুধুমাত্র অগ্রহণযোগ্য । ' তিনি আরও বলেছেন, 'লিঙ্গ বৈষম্য ও হিংসাকে স্থায়ী করার জন্য সাম্প্রদায়িক বিবাদের সময় মহিলাদের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।' সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মণিপুরে মহিলাগের রাস্তায় হাঁটানোর ভিডিও দেখে তিনি অত্যান্ত বিরক্ত। তিনি বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যদি পদক্ষেপ না নেয় তাহলে সুপ্রিম কোর্ট পদক্ষেপ করতে দ্বিধা করবে না। তিবি আরও বলেন মণিপুরে যা হয়েছে যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। এটি ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা সংবিধানের পরিপন্থী। পাশাপাশি রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার মণিপুর নিয়ে কী কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বা কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও বিস্তারিত জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
মণিপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 'মণিপুরে মেয়েদের সঙ্গে যা হয়েছে তা কখন ক্ষমা করা যায় না। এই ঘটনাটি দেশের জন্য লজ্জাজনক। দোষীদের রেহাই দেওয়া হবে না। ' সংসদে বাদল অধিবেশনের শুরুর আগে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও মণিপুরের হিংসা নিয়ে কোনও কথা বলেননি তিনি। তবে এই ঘটনা গত মে মাসের। আর্থাৎ সেই সময় থেকেই জাতিগত হিংসার আগুনি উত্তপ্ত হচ্ছিল মণিপুর।
মণিপুরের উপজাতীয় নেতাদের ফোরাম এই বিষয় নিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ মে। রাজধানী ইম্ফল থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায়। এই ঘটনায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল কাংপোকপি জেলায়। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় এক জননেতার সামনে তিন মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানো হয়েছে। এই ঘটনা পাঁচা জনের একটি দলকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। যারা মণিপুর হিংসার ঘটনাতেও জড়িত। মহিলাদের বিরুদ্ধে একজনকে অপরহণের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। যার মধ্যে এক জনের বয়স ১৯। তার ভাই মহিলাকে উদ্ধার করতে এলে তাকেও খুন করে ধর্ষকরা।
গোটা ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হতেই তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পুলিসকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছে, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও মন্ত্রকের মুখ্য সচিবের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের গোটা ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, 'এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।' ভিডিওটি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে স্বতোঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।