সিপিআই (মাওবাদী) পিএলজিএ সপ্তাহ ২০২৫-এর জন্য 'শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই'-এর ডাক দিয়েছে। মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত কি নকশাল সংঘর্ষ আরও তীব্র হবে? নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হাই অ্যালার্টে।

নাগপুর: সিপিআই (মাওবাদী) সম্প্রতি তাদের ছত্রভঙ্গ ক্যাডারদের কাছে একটি নতুন বার্তা পাঠিয়েছে। গ্রুপের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন ২ থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে পিএলজিএ সপ্তাহ পালনের নির্দেশ দিয়েছে। এই সময়ে ক্যাডারদের 'বিপ্লবী উদ্দীপনা' এবং 'শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই' করার শপথ নিতে উৎসাহিত করা হবে। এই পদক্ষেপটি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির দ্বারা পরিচালিত নকশাল বিরোধী অভিযানের ঠিক একদিন পরে নেওয়া হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে মাওবাদীরা এখনও সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত।

পিএলজিএ-র ২৫তম বার্ষিকী: বিপ্লব না বিপদের ইঙ্গিত?

সিএমসি এই বার্ষিকীকে “বিপ্লবী সংগঠনের অন্যতম রক্তক্ষয়ী বছরের পর সাহসিকতার মুহূর্ত” বলে বর্ণনা করেছে। গত আড়াই দশক ধরে মাওবাদীরা তাদের নিহত সঙ্গীদের স্মরণে এই সপ্তাহটি পালন করে আসছে। কিন্তু এবারের বার্তাটি ভিন্ন: এটি সরাসরি সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো।

রেড স্ট্র্যাটেজি: ক্যাডারদের প্রস্তুতি ও কার্যকলাপ

২-৮ ডিসেম্বরের মধ্যে পিএলজিএ সপ্তাহে ছোট ছোট মিটিং, পোস্টার ক্যাম্পেইন এবং সদস্য भर्ती অভিযান অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সিএমসি বিশেষভাবে গোপনীয়তা এবং সতর্কতার উপর জোর দিয়েছে। এর পরিষ্কার অর্থ হলো, মাওবাদীরা এখনও তাদের সঙ্কুচিত দুর্গগুলিতে সক্রিয় থাকতে চায় এবং নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়।

সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির প্রতিক্রিয়া

নিরাপত্তা সংস্থাগুলি হাই অ্যালার্টে রয়েছে। একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন: “মাওবাদীরা আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তুত হোক বা লড়াইয়ের জন্য, যদি তাদের কাছে অস্ত্র পাওয়া যায়, তবে নিরাপত্তা বাহিনী সংঘর্ষপূর্ণ এলাকায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে।” সরকার মার্চ ২০২৬-এর মধ্যে বিদ্রোহ শেষ করার পরিকল্পনা করছে, কিন্তু মাওবাদীদের নতুন আহ্বানে সতর্কতা বেড়েছে।

পেছনের কথা: গত বছরের পরিসংখ্যান

গত বছর মাওবাদী ক্যাডারে ৩২০ জন হতাহত হয়েছিল, যার মধ্যে অনেক কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্যের নেতাও ছিলেন। দণ্ডকারণ্য এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সিএমসি তার অভ্যন্তরীণ সমালোচনায় ভূপতি-সতীশ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে “২২৭টিরও বেশি অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের পর বিশ্বাসঘাতকতা” করার অভিযোগ এনেছে।

পিএলজিএ সপ্তাহ কি সংঘর্ষ বাড়িয়ে তুলবে?

নতুন আহ্বান এবং পিএলজিএ সপ্তাহ আয়োজন এই ইঙ্গিত দেয় যে মাওবাদীরা তাদের ক্যাডারদের মধ্যে মনোবল বজায় রাখতে চায়। সিএমসি বলেছে যে সশস্ত্র সংগ্রামই “জয়ের একমাত্র পথ” এবং মার্চ ২০২৬-এর পরেও অভিযান চলবে।

নিরাপত্তা বাহিনী কীভাবে প্রস্তুত?

নিরাপত্তা সংস্থাগুলি প্রস্তুত এবং মনে করছে যে এই আহ্বানের উদ্দেশ্য মাওবাদীদের সঙ্কুচিত দুর্গগুলিতে মনোবল বাড়ানো এবং নিজেদের গুরুত্ব প্রমাণ করা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

মাওবাদীরা কি এখনও শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়বে?

পিএলজিএ সপ্তাহের পরিকল্পনা, গোপনীয় মিটিং এবং পোস্টার ক্যাম্পেইন এই প্রমাণ দেয় যে মাওবাদীরা শুধু আত্মসমর্পণ করতে রাজি নয়। গত ২৫ বছর ধরে তারা তাদের নিহত সঙ্গীদের স্মরণে এই সপ্তাহটি পালন করে আসছে, এবং এবার তারা সরাসরি তাদের ক্যাডারদের “শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই” করার শপথ নিতে বলেছে।