সংক্ষিপ্ত
২০২১ সালের একটি গবেষণায় প্রবাল ক্যালসিফিকেশনের দ্রুত হ্রাসের দিকে নির্দেশ করা হয়েছে । বলা হয়েছে বেশিরভাগ তাপের কারণ এই প্রবাল প্রাচীর ক্ষয়ে যাচ্ছে।
আন্দামান সাগরের উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক প্রবাল ব্লিচিং পাওয়া গেছে। জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নতুন একটি সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তেমনই জানিয়েছেন, আইটিএস ডিরেক্টর ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
ব্লিচিং প্রায় ৮৩.৬ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। এলনিনো আর ২০১৬ সালে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এই জাতীয় প্রাকৃতিক পরিবর্তন হয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। জুলজিক্যাল সার্ভে আর ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানীরা এই বিষয় নিয়ে আরো গবেষণা করবেন। এর আগেই এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা গবেষণা করেছেন। ২০১৬ সাল থেকেই এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চলছে। ২০১৬ সাল থেকেই এই ব্যাপক ব্লিচিং এর কারণে লাইভ কভারের প্রায় ২৩ শতাংশ হারিয়ে গেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন এটি ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে।
২০২১ সালের একটি গবেষণায় প্রবাল ক্যালসিফিকেশনের দ্রুত হ্রাসের দিকে নির্দেশ করা হয়েছে । বলা হয়েছে বেশিরভাগ তাপের কারণ এই প্রবাল প্রাচীর ক্ষয়ে যাচ্ছে। এল-নিনোর ধ্বংসাত্মক প্রভাবগুলের কারণ হিসেবে এই সংস্যা তৈরি হয়েছে বলেও মনে করেছেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৯৮ সালে বিশ্বের ১৬ শতাংশ ব্লিচিং হয়েছে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে প্রায় ৭০ শতাংশ রিফের মৃত্যু হয়েছে বলেও রিপোর্ট করা হয়েছে। ২০১৬ সালে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ থেকে মৃত প্রবালগুলির ২২ শতাংশের বেশি প্রবাল নষ্ট হয়ে গেছে। এর কারণে সমুদ্রে বাস্ততন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ভঙ্গুর ইকোসিস্টেমটিকে তাদের ব্যাপক বিলুপ্তির আগে সংরক্ষণ করার জন্য বিশ্বের প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দ্বীপপুঞ্জ থেকে মোট ৮৩ শতাংশ শক্ত প্রবাল হারিয়ে গেছে। এটি রেকর্ড করা হয়েছে।
দক্ষিণ আন্দামানের আন্দামান সাগর অঞ্চলে সর্বাধিক ৯১ শতাংশ ব্লিচিং এর রেকর্ট করা হয়েছে। যেখানে উত্তর আন্দামান অঞ্চল থেকে এটি সর্বনিম্ন ছিল যেখামে এটি ৮২ শতাংশ। এই এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৯১ শতাংশ ব্লিচিংএর রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর আন্দামানের বঙ্গোপসাগর উপকূলে থেকে ব্লিচিংএর কোনও রেকর্ড ছিল না। তবে আগে থেকেই দক্ষিণ আন্দামারে ব্লিচিং হচ্ছিল।
গবেষণাটি ৪০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত করা হয়েছিল। প্রবালগুলি সর্বাধিক ৩০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। প্রথম ৬ মিটার পর্যন্ত ব্যাপক হারে ক্ষয় হয়েছে। ১৫ মিটার পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে মারাত্মক। এই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী তমাল মণ্ডল বলেছেন জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০১৬ সালে ব্লিচ করা প্রবালের পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা হয়েছে। গবেষণার ভিত্তিতে দেখা গেছে আন্দামান গ্রুপের ব্লিচ করা প্রবালগুলির মধ্যে ২৩ শতাংশ গড় পুণরুদ্ধারের করা সম্ভব হয়েছে।
সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন পুনরুদ্ধারগুলি যথাক্রমে আন্দামান সাগর উপকুলের উত্তর আন্দামান অঞ্চল থেকে বঙ্গোপসাগর উপকূলের দক্ষিণ আন্দামান পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটারের বেশি এলাকা জুড়ে রেকর্ড করা হয়েছে। তমাল মণ্ডল বলেছেন, এটি অনুমান করা হয়েছে বিলাশবহুল ম্যানগ্রোভ ইকোস্টিম তাপতরঙ্গগুলিকে বাফার করবে। উত্তর ও মধ্য আন্দামানের প্রবালগুলিকে মুক্ত ও স্বাস্থ্যকর রাখবে যদিও এটি এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি। ম্যানগ্রভগুলি জলকে বিশুদ্ধ করার পরিচিত। সেইসঙ্গে ক্ষতিকারক অ্যাগাল ফুলগুলিকে পরিষ্কার রাখার জন্য পুষ্টি শোষণ করে। যা স্বাস্থ্যকর প্রবাল প্রাচীর বাস্তুতন্ত্রের একটি অন্যতম শর্ত বলেও মনে করা হয়েছে।