সংক্ষিপ্ত

মোরবি সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থা আজন্তা। নির্ধারিত সময়ের আগেই ফিট সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতু খুলে দেওয়া হয়।

গুজরাটের মোরবি নদীতে মাচ্ছু নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে এখনও পর্যন্ত ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেতু ভেঙে যাওয়ার দায় কার - এই নিয়ে মোরবি পুরসভা আর বেসরকারি ঠিকদার সংস্থার মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কারণ সেতুর দায়িত্ব ছিল একটি বেসরকারি সংস্থার ওপর। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মাত্র তিন আগেই জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল এই ব্রিজ। তারপরই ব্রিজ ভেঙে নদীর জলে তলিয়ে গিয়ে ১৪১ জনের মৃত্যু হয়।

ঠিকাদার সংস্থা অজন্তা

মোরবি পুরসভা সূত্রের খবর সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫ বছরের জন্য মোরবি পুরসভা আর অজন্ত নামের একটি বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থার মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। অজন্তা সংস্থাটি ওরেভা গ্রুপের অংশ। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ২০৩৭ সাল পর্যন্ত শতাব্দী প্রাচীন সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেতুটি মেরামতির জন্য দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ ছিল। ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষের কারণে সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতুটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কারণ সেতুটি ৮-১২ মাস বন্ধ রাখার কথা ছিল।

ফিটনেট সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতুর উদ্বোধন

মোরবি পুরসভার অভিযোগ সেতুটি উদ্বোধনের আগে সংস্থার পক্ষ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এনমকি সেতুটির জন্য কোনও ফিটসার্টিফিকেটও দেয়নি পুরসভা। তারপরেও কী করে সেতুটি জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ মোরবি পুরসভা জানিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা নিজেদের উদ্যোগে সেতু জনগণের জন্য খুলে দিয়েছিল।

সেতুর টিকিট

পুরসভার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সেতু ওপর ওঠার জন্য প্রত্যেককে টিকিট কাটতে হবে। জন প্রতি ১৭ টাকা করে টিকিট বিক্রি হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী সংস্থাটি প্রতি বছর টিকিটের দাম ২ টাকা করে বাড়াতে পারবে। সূত্রের খবর দুর্ঘটনার দিন সঠিকাদার সংস্থা টিকিট বিক্রি করলেও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও ব্যবস্থা রাখেনি। প্রবল ভিড় হলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি।

৫০০ জন সেতুর ওপর

রবিবার সন্ধ্যে বেলা মাচ্ছু নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতুটি ভেঙে পড়ে। সেই সময় সেতুর ওপর ৫০০ জন ছিল বলেও দাবি করছে স্থানীয় বাসিব্দা বা প্রত্যক্ষদর্শীরা। দিওয়ালি উপলক্ষ্যে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। কিন্তু ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি। গুজরাট পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইটে সেতুর উল্লেখ থাকলেও সেতুর কতটা ভার সহ্য করতে পারে তার কোনও উল্লেখ নেই। কিন্তু মোরবি পুরসভার সূত্রের খবর সেতুটি মাত্র ১২৫ জনের ভার সহ্য করতে পারে। সেখানে সেতুর ওপর ৫০০ জন মানুষ ডাবলের তুলনায়েও বেশি। তাতেই দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

সেতুতে দাপাদাপি

সেতু দুর্ঘটনার পর বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গেছে দুর্ঘটনার আসে সেতুতে প্রচুর মানুষ ছিল। তাদের অনেকেই সেতুর তার বা কেবল ধরে ঝোলাঝুলি করছিল। মেরামতির পরই সদ্যো খুলে দেওয়া সেতু দুর্ঘটনার এটিও একটি কারণ বলে মন করেছে তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত নেমেছে গুজরাট সরকারে নিযুক্তি বিশেষ তদন্তকারী দল।