সংক্ষিপ্ত

৫৬ বছর বয়সী মনোজ রমেশ সানে পুলিশকে জানিয়েছেন যে, নিজের লিভ ইন সঙ্গিনী সরস্বতী বৈদ্যকে ‘মেয়ের চোখে’ দেখতেন তিনি। তাঁকে অঙ্কও করাতেন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত। তাঁর রান্নাঘর থেকে ৩ বালতি রক্ত পাওয়া গেছে, সেই রক্তের মধ্যে দেহের টুকরো অংশও ছিল। 

৩২ বছর বয়সী সঙ্গিনীর সাথে একসঙ্গেই বাস করতেন ৫৬ বছর বয়সী মনোজ রমেশ সানে। মুম্বইয়ের মীরা রোডের সেই ফ্ল্যাটেই সঙ্গিনী সরস্বতী বৈদ্যর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে কুকারে সেদ্ধ করে এবং গ্যাসের আগুনে পুড়িয়ে লোপাট করে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তিনি। এই নৃশংসতম কাণ্ডের পর ওই লিভ ইন পার্টনারকে নিজের ‘মেয়ের চোখে’ দেখতেন বলেই দাবি করেছেন অভিযুক্ত মনোজ। পুলিশকে এই কথা বলে মনোজ এও জানিয়েছেন যে, তাঁর সঙ্গে সরস্বতীর কোনও রকম শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। তিনি সরস্বতীকে অঙ্ক করাতেন।

মনোজের যুক্তির সাপেক্ষে মীরা রোডের গীতা নগর এলাকার আকাশদীপ আবাসনের (Geeta Akashdeep Mira Road) ৭ তলার ফ্ল্যাটের দেওয়ালে টাঙানো একটি বোর্ডে লেখা অঙ্কের সূত্রও খুঁজে পেয়েছেন পুলিশ কর্তারা। মনোজ রমেশ পুলিশকে জানিয়েছেন যে, সরস্বতী দশম শ্রেণীর SSC পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাই তিনি তাঁকে পড়াতেন। তিনি দাবি করেছেন যে, তিনি সরস্বতীকে খুন করেননি। সরস্বতী নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। ৩ জুন তারিখে সকালবেলা তিনি সরস্বতীকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তিনি দেহ পরীক্ষা করে দেখেন যে, পালস পাওয়া যাচ্ছে কিনা, অর্থাৎ, হৃদযন্ত্র চলছে কিনা। যখন তিনি বুঝতে পারেন যে, সরস্বতী মারা গেছেন, তখনই নাকি তিনি ভয় পেয়ে যান যে, সরস্বতীকে খুন করার জন্য তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। ভয় পেয়ে গিয়েই তাঁর দেহটি লোপাট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন মনোজ।

তাঁর সঙ্গে সরস্বতীর প্রথম দেখা হয়েছিল যখন তিনি একটি রেশন দোকানে কাজ করতেন। পুলিশ খুঁজে পেয়েছে যে, তাঁর একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ITI) সার্টিফিকেট-ও ছিল, তা সত্ত্বেও তিনি কোথাও চাকরি পাননি বলে তিনি একটি রেশন দোকানে কাজ করতেন বিগত ১০ বছর ধরে। প্রাথমিক তদন্তের সময়, মনোজ সানে (Manoj Sane) পুলিশকে জানান যে, ২০০৮ সালে একটি শারীরিক পরীক্ষার পর তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি এইচআইভি (HIV) পজিটিভ। এরপর থেকে একটানা ওষুধ খেয়ে চলেছেন তিনি। অনেকদিন আগে তিনি একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন, যেসময়ে হাসপাতালে তাঁকে রক্ত দেওয়া হয়েছিল। ওই রক্তের দ্বারা তিনি HIV সংক্রমিত হয়েছিলেন বলে মনে করেন।

নিহত সরস্বতী বৈদ্য তাঁর সঙ্গী মনোজ রমেশ সানেকে পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ করতেন বলে জানিয়েছেন মনোজ। তাঁর বাড়ি ফিরতে রাত হলেই সরস্বতী (Saraswati Vaidya) তাঁকে সন্দেহ করে অশান্তি করতেন। আরেকদিকে, তাঁর সঙ্গে সঙ্গিনী সরস্বতীর কোনও রকম শারীরিক সম্পর্ক ছিল না বলে দাবি করেছেন ধৃত অভিযুক্ত। গাছ কাটার জন্য ব্যবহৃত ইলেকট্রিকের যন্ত্র দিয়ে সঙ্গিনীর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটেছিলেন মনোজ, এরপর দেহাংশগুলি প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করে রান্নার গ্যাসে পুড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁর রান্নাঘর থেকে ৩ বালতি রক্ত পাওয়া গেছে, সেই রক্তের মধ্যে দেহের টুকরো অংশও ছিল। কেন তিনি এমন নৃশংস উপায়ে সরস্বতীর দেহ লোপাট করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, সেই বিষয়েই ধন্দে পড়ে রয়েছে মুম্বই পুলিশ। পাশাপাশি কোন কোন দেহাংশ পাওয়া যায়নি, তা জানার জন্য স্যার জেজে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ধৃত মনোজকে ১৬ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আরও পড়ুন-

Shark Attack: মিশরের সমুদ্রে হাড় হিম করা ঘটনা! সমুদ্রে স্নানরত ব্যক্তিকে কামড়ে ছিঁড়ে খেল হাঙর
‘মিথ্যাশ্রী’! দীপক ঘোষের নতুন বই সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিডিও শেয়ার করে কী লিখলেন শুভেন্দু অধিকারী?

মেঘালয়ের বর্ডার পেরিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ল বাংলাদেশের সেনা, তাড়া লাগালেন স্থানীয় মানুষরা