সংক্ষিপ্ত

প্যানেলের সদস্যরা মহাকাব্য সংযোজন করার পাশাপাশি এও প্রস্তাব দিয়েছেন যে, ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি স্কুলের শ্রেণীকক্ষগুলির দেওয়ালে দেওয়ালে স্থানীয় ভাষায় লিখে দেওয়া হবে।

'ভারতের ক্লাসিক্যাল পিরিয়ড'-এর অধীনে ইতিহাস পাঠ্যক্রমের অংশ হিসাবে স্কুলগুলিতে মহাকাব্য রামায়ণ এবং মহাভারত পড়ানো হোক, সম্প্রতি এমনই সুপারিশ করল একটি উচ্চ-স্তরের এনসিইআরটি (NCERT) প্যানেল। প্যানেলের সদস্যরা মহাকাব্য সংযোজন করার পাশাপাশি এও প্রস্তাব দিয়েছেন যে, ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি স্কুলের শ্রেণীকক্ষগুলির দেওয়ালে দেওয়ালে স্থানীয় ভাষায় লিখে দেওয়া হবে।

-

যদিও, এই প্রস্তাবনাগুলি এখনও পর্যন্ত শুধুই সুপারিশ হিসেবে রয়েছে, এগুলি কার্যকর করার জন্য NCERT এখনও পর্যন্ত কোনও কোনও অনুমোদন পায়নি। বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান পাঠ্যক্রম সংশোধনের জন্য গত বছর গঠিত হয়েছিল NCERT-এর  ৭ জন সদস্যের একটি প্যানেল। পাঠ্যপুস্তকে ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা, বেদ এবং আয়ুর্বেদকেও অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে এই ৭ সদস্যের সংগঠন।


সমাজ বিজ্ঞানের চূড়ান্ত 'পজিশন পেপার'-এর জন্য কমিটির সুপারিশগুলি নতুন NCERT বইগুলির বিকাশের ভিত্তি স্থাপনের জন্য একটি মূল প্রেসক্রিপটিভ নথি।


-

“প্যানেলটি চারটি সময়কালের মধ্যে ইতিহাসের শ্রেণীগুলি ভাগ করার জন্য সুপারিশ করেছে। সেই ভাগগুলি হল, ধ্রুপদী সময়কাল, মধ্যযুগীয় সময়কাল, ব্রিটিশ যুগ এবং আধুনিক ভারত। এখনও পর্যন্ত, ভারতীয় ইতিহাসের মাত্র তিনটি শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে। সেগুলি হল, প্রাচীন, মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক।" জানিয়েছেন সি আই আইজ্যাক (CI Issac), তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত ইতিহাসের অধ্যাপক, যিনি NCERT-র প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি বলেন, ‘‘সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের সিলেবাসে রামায়ণ-মহাভারত পড়ানোর সুপারিশ করেছে কমিটি। এতে অল্প বয়স থেকেই পড়ুয়াদের মধ্যে দেশপ্রেম, আত্মসম্মান ও নিজেদের জাতির জন্য গর্ববোধ তৈরি হবে।’’

-

"আমরা সুপারিশ করেছি যে , রামায়ণ এবং মহাভারত, এই দুটি মহাকাব্য, ইতিহাসের শাস্ত্রীয় সময়ের অধীনে পড়ানো হোক", জানিয়েছেন কমিটির প্রধান সি আই আইজ্যাক। সাত সদস্যের প্যানেলের তরফ থেকে এও প্রস্তাব করা হয়েছে যে, পাঠ্যপুস্তকে একটি বা দুটির পরিবর্তে ভারত শাসনকারী সমস্ত রাজবংশকে স্থান দেওয়া উচিত। প্যানেলের সুপারিশটি এখন ১৯ জন সদস্যের জাতীয় পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাদানের উপাদান কমিটি দ্বারা বিবেচনা করা হবে যা পাঠ্যক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং শেখার উপাদান চূড়ান্ত করার জন্য জুলাই মাসে বিজ্ঞাপিত হয়েছিল।

-

যদিও, সমাজবিজ্ঞান হিসেবে রামায়ণ বা মহাভারত পড়ানো সম্পর্কে জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের প্রাক্তন অধ্যাপক তনিকা সরকার বলেছেন যে, ‘‘এই দুই মহাকাব্য অবশ্যই দেশজ সংস্কৃতির অঙ্গ। কিন্তু মূলত এগুলি ব্রাহ্মণ্য ধর্মগ্রন্থ। এই ধর্মগ্রন্থগুলিকে মিথ হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। সেগুলিকে সমাজবিজ্ঞানের আওতায় নিয়ে এলে কি গৌরববৃদ্ধি হবে? সমাজবিজ্ঞান তথ্যনির্ভর বিষয়। মহাকাব্যে বর্ণিত ঘটনা তথ্য দ্বারা যাচাই করা সম্ভব নয়। এ সব গ্রন্থ যদি পড়াতেই হয়, তা হলে রিলিজিয়াস স্টাডি-র মতো একটি বিষয়রাখলেই হয়। যেখানে রামায়ণ-মহাভারতের মতোই অন্য ধর্মের গ্রন্থও পড়ানো হবে।’’ ধর্মশিক্ষার পাঠ্যগুলিকে কেন সমাজবিজ্ঞানের অন্দরে নিয়ে আসা হচ্ছে, সেই বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কিছুই বলতে চায়নি এনসিইআরটি। 


আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।