সংক্ষিপ্ত
- দোসরা মে এক নির্দেশিকা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট
- আদালত জানিয়েছে, কোনও হাসপাতাল রোগি ফেরাতে পারবে না
- রোগি যদি স্থানীয় বাসিন্দা না হন, তবু ভর্তি নিতে হবে হাসপাতালকে
- করোনা পরিস্থিতির অব্যবস্থা সম্পর্ক চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গোটা দেশে এখন শুধু হাহাকার। কোথাও অক্সিজেন নেই, কোথাও বেড নেই। কোথাও ভেন্টিলেশন বা আইসিইউ-র অভাব প্রকট। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দা না হলে বা স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার পরিচয়পত্র না থাকলে সেই রোগিকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না বলে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টের কাছে।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দোসরা মে এক কড়া নির্দেশিকায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনও হাসপাতাল রোগি ফেরাতে পারবে না। যদি কোনও রোগির কাছে স্থানীয় হওয়ার পরিচয় পত্র না থাকে বা সেই রোগি যদি স্থানীয় বাসিন্দা না হন, তবু পরিচয়পত্র না থাকার অভাবে কোনও হাসপাতাল রোগি ফেরাতে পারবে না। এই তথ্য সম্বলিত একটি নির্দেশিকা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই মর্মে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ কেন্দ্র সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে একটি খসড়া পলিসি তৈরি করতে হবে। তাতে রোগি ভর্তি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ নির্দেশিকা থাকবে। সেই নির্দেশিকা পৌঁছে দিতে হবে প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সরকারের কাছে।
দেশ জুড়ে চলা করোনা পরিস্থিতির অব্যবস্থা সম্পর্ক চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই অবস্থায় রোগি যাতে সব রকম সুবিধা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। রোগি ভর্তি কোনও ভাবেই উপেক্ষা করা যাবে না বলে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।
রবিবার গভীর রাতে এই নির্দেশিকা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে একযোগে সমন্বয় সাধন করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। হাসপাতালগুলিতে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন ও শয্যার ব্যাবস্থা থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারগুলিকে বলে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
এদিকে, দেশে অক্সিজেনের চাহিদাও পাল্লা দিয়ে বাড়েছে। ক্রমবর্ধমান অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে বায়বীক অক্সিজেনের ব্যবহার নিয়েই আলোচনা করেন তিনি। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বায়বীয় অক্সিজেন ব্যবহারের কার্যকারী বিশ্লেষণ করেন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে।
ইস্পাত প্ল্যান্ট, পেট্রোকেমিক্যাল ইউনিট, শোধনাগারসহ বেশ কয়েকটি শিল্পে অক্সিজেন প্ল্যান্ট রয়েছে। সেই শিল্পসংস্থাগুলি বায়বীয় অক্সিজেন উৎপাদন করে। সেই অক্সিজেন প্রয়োজনে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে কেন্দ্রীয় সরকারে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মহামারি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারগুলিকে অক্সিজেন বেড সহ আরও বেশি সুবিধে স্থাপনের জন্য উৎসহ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এই জাতীয় প্ল্যান্টগুলির কাছাকাছি অস্থায়ী ১ হাজার বেডের হাসপাতাল তৈরি করলে মহামারির এই সময় কিছুটা হলেও সংকট দূর করা যাবে।
এই প্রক্রিয়া কার্যকর করার জন্য যে যে সুবিধে গুলি চিহ্নিত করা হচ্ছে তা হলে বিশুদ্ধ বায়বীয় অক্সিজেনের জন্য শিল্প ইউনিটগুলিকে চিহ্নিত করা। শহর বা অক্সিজেনের চাহিদাযুক্ত এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা। উৎসের নিকট অক্সিজেনবেড যুক্ত কোভিড কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা। ইতিমধ্যেই এই পাইলট প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়েছে।