সংক্ষিপ্ত
ভারতের বিদেশ নীতি নিয়ে কী ভাবছে দেশের যুব সমাজ? কী জানা গেল ওআরএফ ফরেন পলিসি সার্ভে ২০২১-এ (ORF forreign policy survey 2021)?
আর যে দেশই হোক না কেন, চিনকে (China) একেবারেই বিশ্বাস করা যায় না। ভারতের বৈদেশিক নীতি নিয়ে অবজার্ভার রিসার্ড ফাউন্ডেশন (Observer Research Foundation) বা ওআরএফ-এর করা ২০২১ সালের সমীক্ষায় অন্তত পক্ষে ৭৭ শতাংশ ভারতীয়র তরুণ এমনটাই জানিয়েছেন। আর তাঁদের মতে বিশ্বশক্তিগুলির মধ্যে ভারতের সবথেকে বিশ্বস্ত বন্ধু হতে পারে আমেরিকা (USA)। এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল ১৪টি শহরের ২,০৩৭ জন ভারতীয় তরুণ-তরুণীর মধ্যে। তাঁদের সকলেরই বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এই সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের সুবিধার জন্য ৮ টি আঞ্চলিক ভাষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল।
সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, বৈদেশিক নীতির (India's Forreign Policy) প্রশ্নে শহুরে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে মূলত তিনটি প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। বাকি বিশ্বের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে তাঁদের সচেতনতা বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে তারা এই বিষয়ে খুবই আশাবাদী। সেই সঙ্গে তারা চাইছে ভারতের বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। আর সেইসঙ্গে বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন হুমকি এবং চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে ভারতের ধারণা পরিবর্তন করা হোক, এটাও চাইছে যুব সম্প্রদায়।
আরও পড়ুন - China: ভারতের ডাকা নিরাপত্তা বৈঠক এড়িয়ে পাকিস্তানের পাশে চিন, যোগ দেবে ট্রোইকা বৈঠকে
আরও পড়ুন - NSA level meet-পাকিস্তান-চিন কোণঠাসা,ভারতের উদ্যোগে নিরাপত্তা ইস্যুতে এককাট্টা সাত দেশ
সমীক্ষায় অন্তত ৭২ শতাংশ শহুরে ভারতীয় যুবক দেশের বিদেশ নীতিকে ভাল বলেছেন অথবা বলেছেন খুব ভাল, অর্থাৎ ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন। পাকিস্তান ও চিনের বিষয়ে মোদী সরকারের বৈদেশিক নীতিগত সিদ্ধান্ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের সঙ্গে কোয়াডের (QUAD) মতো আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী গঠনের মতো বিষয়কে তারা সমর্থন জানিয়েছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে চিনা মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধকরণ, বালাকোটে বিমান হামলা, অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের মতো সরকারি পদক্ষেপগুলি সঠিক ছিল।
কোয়াড সম্পর্কে তারা সচেতন হলেও বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন বা বিমসটেক (BIMSTEC) এবং সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (Shanghai Cooperation Organization) মতো সাম্প্রতিক বহুদেশিয় প্ল্যাটফর্ম এবং ফোরামগুলি সম্পর্কে ভারতীয় শহুরে যুব সমাজের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতা ননঅ্যালাইনমেন্ট মুভমেন্টের কথাও (Non-Aligned Movement) শোনেননি বলে জানিয়েছেন। তবে, ৬২ শতাংশ উত্তরদাতারা মনে করেন, মার্কিন-চিন ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতের জোটনিরপেক্ষতা ত্যাগ করা উচিত। তাঁরা মনে করছেন চিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হতে পারে। বেজিং-এর সামরিক ও অর্থনৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। সেইসঙ্গে ভারতের প্রতিবেশী অঞ্চলে বেজিং যেভাবে তে করে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের হাত মোলানো উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা।
তবে বিরোঝী দলগুলি যতই কটাক্ষ করুক না কেন, যুব সম্প্রদায় কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের (Modi Govt) 'আত্মনির্ভর ভারত' (Atmanirbhar Bharat) প্রকল্পে দেশ উপকৃত হবে বলেই মনে করছে। অংশগ্রহণকারীদের ৭১ শতাংশ এরকমই মত ব্যক্ত করেছেন। তবে ভারত এবং ভারতের অর্থনীতিতে বিশ্বায়নের প্রভাব, ভারতীয়দের জীবনযাত্রার মান, বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ, বিদেশে শিক্ষার সুযোগের বিষয়ে একেবারেই ঐক্যমত হতে পরেননি। বিদেশে পড়াশুনার সুযোগ পাওয়াকে অধিকাংশ উত্তরদাতা ইতিবাচক বলে মনে করলেও, বিদেশে কাজের সুযোগের বিষয়ে আশাবাদীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম, এমনটাই জানানো হয়েছে ওআরএফ-এর সমীক্ষা রিপোর্টে ।