সংক্ষিপ্ত

ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি সম্পর্কে সাহসী মন্তব্য করার জন্য পাকিস্তানে বরাবরই দুর্নাম অর্জন করেছেন এই ধর্মীয় পণ্ডিত, তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজের যুক্তি প্রচার করেন তিনি।

পাকিস্তানে জন্মগ্রহণকারী ধর্মীয় পণ্ডিত মওলানা জাভেদ আহমেদ ঘামিদি তার অনন্য মতামত এবং সাহসী কথাবার্তার কারণে প্রায়শই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সংকীর্ণমনা পাকিস্তানি সমাজ তাঁকে একেবারেই মেনে নিতে পারেনি এবং বাধ্য হয়ে তাঁকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করে মওলানা ঘামিদি মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অবাধে নিজের মতামত প্রকাশ করেন, মত প্রকাশের প্রকৃত স্বাধীনতা উপভোগ করেন, যা তাঁর নিজের জন্মভূমিতে সম্ভব ছিল না। তিনি প্রকাশ্যে পাকিস্তানি সমাজ, বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী এবং পণ্ডিতদের সমালোচনা করেন।

ঘামিদি অভিযোগ করেছেন যে পাকিস্তানের বহু মানুষ ধর্মীয় চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেন, এগুলোই দেশের ধ্বংসের প্রধান কারণ। তিনি জম্মু ও কাশ্মীর এবং আফগানিস্তানে ভারতের সাথে পাকিস্তানের নীতি ও আচরণের অত্যন্ত সমালোচক। মওলানা জাভেদ আহমেদ ঘামিদি বিশ্বাস করেন যে, কাশ্মীরে ওপর পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় এবং শুধুমাত্র কাশ্মীরের (J&K) জনগণেরই নিজেদের ভবিষ্যত সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন এবং প্রকাশ্যে সমর্থন করেন যে, কাশ্মীর সমস্যার নামে ভারতে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা পাকিস্তানের উচিত নয়।

তিনি পাকিস্তানের ওপরে আফগানিস্তানে হস্তক্ষেপকেও অস্বীকৃতি জানান এবং কাবুলে তালিবান শাসনেরও তীব্র সমালোচনা করেন। বিগত কয়েকদিনে, মওলানা জাভেদ আহমেদ ঘামিদি সন্ত্রাস ও চরমপন্থা, পাকিস্তানের পরিস্থিতি এবং ইজতিহাদের প্রয়োজনীয়তার মতো বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।

সম্প্রতি সুইডেনে পবিত্র কোরান গ্রন্থ পোড়ানোর ঘটনা সম্পর্কে ঘামিদি বলেন, এটি আল্লাহর কিতাব। “আমাদের মুসলমানদের সকলের দায়িত্ব হল, অন্যান্য মানুষদের কাছে এর বার্তা পৌঁছে দেওয়া। আমরা মুসলিমরা কি গোটা বিশ্বকে কোরানের বাণী বোঝানোর জন্য আমাদের সমস্ত শক্তি ব্যয় করেছি? এর তাৎপর্য কী, আমাদের কাজ হল সেটার বার্তা উপস্থাপন করা এবং কেউ এর (কোরানের) সমালোচনা করলে তাঁর তা করার অধিকার আছে, কেউ আপত্তি করলে তাঁরও আপত্তি করার অধিকার রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, বই ও ইসলাম সম্পর্কে মানুষ যে সব আপত্তি তোলে, পবিত্র কোরান তার জবাব দেয়। “কোরান আল্লাহর কিতাব, এই সত্যকে স্পষ্ট করার জন্য কোরানের অনেক সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। তখন কোরান যা করেছিল, আমাদের এখনও করতে হবে।” কোরান পোড়ানোর ঘটনার পরপরই তিনি বলেছিলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি আপত্তির ঊর্ধ্বে গিয়ে এমন কিছু করেন, যেটা আমাদের কষ্ট দেয়, তাহলে পবিত্র কোরান বলেছে যে, ধৈর্য ধরো, তোমাকে যতই কষ্ট দেওয়া হোক না কেন।”

নবী মুহাম্মদের জীবনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, নবীজীর জীবদ্দশায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত ঘটতেই থাকবে। “তোমাদের কাজ হলো কোরানের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। প্রতিবাদ করলে বেশি কিছু হয় না; এটা শুধুমাত্র আরও উপহাস বাড়ায়, কোরানের বাণী শোনার জন্য এটা আরও বেশি লোকের রাগ বাড়ায় এবং অনিচ্ছুক করে তোলে। কোরানের শিক্ষা হলো, কোরানকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হলে এ ধরনের সমাবেশ অবিলম্বে ত্যাগ করা উচিত।

পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের ধর্মনিন্দা আইন সম্পর্কে ঘামিদি বলেন, পবিত্র কোরানে বিভিন্ন অপরাধের শাস্তির বিধান করা হয়েছে, কিন্তু ধর্মনিন্দার শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি।

আরও পড়ুন-

Weather News: হু হু করে চড়ছে তাপমাত্রার পারদ, আবহাওয়ার অস্বস্তি থেকে রেহাই মিলবে চলতি সপ্তাহেই
শনিদেবের পূজা থেকে মা লক্ষ্মীর চরণে, ৬টি বিশেষ উপায়ে আপনার ভাগ্য খুলে দিতে পারে অপরাজিতা ফুল
পরিবারে অশান্তি বা জীবনে ব্যর্থতার প্রধান কারণ হতে পারে ঘরের নেতিবাচক শক্তি, এই কুপ্রভাবগুলি দূর করার জন্য জেনে নিন প্রয়োজনীয় উপায়