সঙ্গমের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে, পকসো আইনে আপত্তি তুলে। সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ এই আবেদন করেছেন, কিশোর-কিশোরীদের সম্মতিসূচক সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে দেখা ঠিক নয় বলে দাবি করে।
সঙ্গমের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করা হোক, আবেদন জমা পড়ল সুপ্রিম কোর্টে। পাকসো আইনে এই সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে আপত্তিও তোলা হয়। তবে, সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে এই বিষয় লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।
সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বলেন, ‘বর্তমান আইন কিশদের পারস্পরিক রোমান্টিক ও যৌন সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে দেখায় এবং এতে তাদের সংবিধানস্বীকৃত অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের পরিণতি, সচেতনতা ও সম্মতির ক্ষমতা উপেক্ষা করে তাদের পারস্পরিক সম্মতিতে তৈরি হওয়ার সম্পর্ককে অবমাননাকর যৌন নিপীড়ন-র সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা যুক্তিসঙ্গত নয়।’ ‘… বেশিরভাগ অভিযোগই বাবা-মায়েদের করা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো কন্যার ইচ্ছের বিরুদ্ধে। এতে বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের নজির আছে।’ তিনি আরও বলেন যে, এই আইনের ফলে কিশোর-কিশোরীরা প্রেম লুকোতে, পালিয়ে যেত, বিয়ে করে ফেলত বা অন্য আইনি সমস্যার মুখোমুখি হতে বাধ্য হত।
সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহের আবেদন, কিশোর কিশোরীর মধ্যে সম্মতিসূচক প্রেমকে পকসো থেকে অব্যাহতি দেওযা হোক। তিনি বলেন যে, বর্তমান সময় কিশোর কিশোরীরা আগেভাগেই যৌবনে পৌঁছে যাচ্ছে এবং নিজেদের পছন্দমতো সম্পর্ক গড়ে তুলছে। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে সহ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোরদের মধ্যএ যৌন সম্পর্ক নতুন কিছু না। তিনি আরও বলেন যে, ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১৬-১৮ বছর বয়সিদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলার সংখ্যা ১৮০ শতাংশ বেড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ করেছেন মেয়েদের বাবা-মা, মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, বিশেষ করে যখন সম্পর্কটি আন্তঃধর্ম হয়ে থাকে।
তাঁর দাবি, ‘উচ্চ আদালত যেমন বম্বে, মাদ্রাজ এবং মেঘালয় হাইকোর্ট- ইতিমধ্যে এই বিষয় মত দিয়েছেন যে কিশোরদের সম্মতিপূর্ণ যৌন সম্পর্ককে পকসো আইনের অধীন অপরাধ হিসেবে দেখা উচিত নয়।’ তিনি আবেদন জানান যে, ‘সুপ্রিম কোর্ট যেন ঘোষণা করে যে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সি কিশোর কিশোরীদের মধ্যে সম্মতিপূর্ণ যৌন সম্পর্ক শিশু নির্যাতন নয় এবং তা যেন পকসো ও ধর্ষণ আইনেপ আওয়ায় না আসে।’


