সংক্ষিপ্ত
এদিনের বৈঠকে মোদী-স্কোলজ বৈঠকে উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথাও উঠেছে। মোদী জানিয়েছেন এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ভারত-জার্মানি মিত্রতার একটি শক্ত ভিত্তি হবে।
সম্প্রতি ভারত সফরে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি। এই বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াতরা। শান্তির জন্য যে কোনও পদক্ষেপে পাশে থাকার কথাও এদিন বলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বৈঠক প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিনয় কোয়াতরা বলেছেন,'এই বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছেন মোদী-স্কোলজ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন শান্তির জন্য যে কোনও পদক্ষেপে পাশে থাকবে ভারত।' তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন যে কোনও অস্থিরতা একমাত্র আলোচনা এবং কূটনীতি দিয়ে সমাধান করা যায়।' তিনি এও জানান যে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে শান্তি যে কেবল রাশিয়া-ইউক্রেনের ক্ষেত্রে জরুরি তা তো নয়। গোটা বিশ্বের প্রতিটি দেশের বিশেষত উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই যুদ্ধ এবার বিভিন্ন দেশে এবার খাদ্য, জ্বালানি এমনকি সারেরও অভাব তৈরি করছে।
এদিনের বৈঠকে মোদী-স্কোলজ বৈঠকে উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথাও উঠেছে। মোদী জানিয়েছেন এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ভারত-জার্মানি মিত্রতার একটি শক্ত ভিত্তি হবে। এদিন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করলে,'জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সঙ্গে একটি অত্যন্ত সফল একটি বৈঠক হল। ভারতের সঙ্গে জার্মানির সংযোগ বৃদ্ধির উপরই জোর দেওয়া হচ্ছে।'
শনিবার ভারতের পক্ষ থেকে জার্মান চ্যান্সেলরকে একাধিক ভারতীয় ঐতিহ্যমন্ডিত উপহার দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এইসব উপহার তুলে দিলেন স্কোলজের হাতে। এই উপহারগুলির মধ্যে ছিল ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যের সংস্কৃতি এবং কারুশিল্পের অসাধারণ নিদর্শন। প্রধানমন্ত্রী মোদি আরও উল্লেখ করেছেন যে উপহারগুলি ভারতের সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। এই তালিকায় রয়েছে মেঘালয়ের ঐতিহ্যমন্ডিত শাল। পাশাপাশি নাগাল্যান্দের ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করতে উপহার পশরায় থাকছে নাগাল্যান্ডের শালও।
মেঘালয়ের রাজবংশের ইতিহাস বহন করে মেঘালয়ের এই শাল। তাদের বয়ন একটি প্রাচীন ঐতিহ্য যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। মেঘালয়ের স্টোলগুলি মূলত কাশি এবং জৈন্তিয়া রাজপরিবারের জন্য বোনা হয়েছিল, এই শালকে তাঁরা তাঁদের ক্ষমতা এবং মর্যাদার প্রতীক বলে মনে করত। মূলত অনুষ্ঠান এবং উত্সবে সময় পরা হত এই শালগুলি। এর সূক্ষ্ম নকশা এবং প্রাণবন্ত রং ছিল রাজপরিবারের সম্পদ এবং প্রতিপত্তির প্রতিফলন। মেঘালয়ের স্টোলগুলিতে ব্যবহৃত নকশাগুলি অত্যন্ত প্রতীকী ছিল এবং উপজাতির সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। উদাহরণস্বরূপ, বাঘ এবং হাতির নকশাগুলি শক্তির প্রতীক। অপরদিকে ফুলের নকশাকাটা শালগুলি সৌন্দর্য এবং করুণার প্রতীক। স্টোলগুলিতে ব্যবহৃত নকশাগুলি রাজপরিবারের বিশ্বাস, পৌরাণিক কাহিনী এবং কিংবদন্তিদের প্রতিফলিত করে। এই শাল তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি প্রমাণ ছিল। এই শাল অন্যান্য রাজ্যগুলির কাছে কূটনৈতিক উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য শাসকদের কাছে শুভেচ্ছা ও সম্মানের প্রতীক হিসাবে উপস্থাপন করতেন।